• কালিয়াগঞ্জে মৃত মৃত্যুঞ্জয়ের গ্রামে মহকুমা শাসক, CBI তদন্তের দাবিতে অনড় পরিবার
    এই সময় | ২১ জুলাই ২০২৩
  • উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকাপুর এলাকায় পুলিশের গুলিতে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ করার পর এদিন রায়গঞ্জের মহকুমা শাসক কিংশুক মাইতি ঘটনাস্থল চাঁদগা গ্রামে পরিদর্শনে যান। মৃত যুবকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি মহকুমাশাসকের তত্ত্বাবধানে সেদিনের ঘটনার স্কেচ তৈরি করা হয়। তবে এদিনের তদন্ত নিয়ে মহকুমা শাসক কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

    তিনি বলেন, 'ওই ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে। আর তদন্তের মাঝে বিশেষ কিছু বলা সম্ভব নয়।' যদিও মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে এদিন ওই ঘটনার CBI তদন্তের দাবি মহকুমাশাসকের কাছে করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এপ্রিল মাসে কালিয়াগঞ্জ থানা অভিযানকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ বাঁধে।

    বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে আক্রমণ করার পাশাপাশি কালিয়াগঞ্জ থানায় ঢুকে তাণ্ডব চালায়। পুলিশের একাধিক গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি থানার একাধিক গাড়ি ও বিল্ডিংয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। হামলাকারীদের গ্রেফতার করতে কালিয়াগঞ্জ ব্লকের রাধিকাপুর এলাকার চাঁদগা গ্রামে বুধবার গভীর রাতে পুলিশ তল্লাশি অভিযান করতে গিয়ে মৃত্যুঞ্জয় বর্মন (৩৩) নামে এক যুবক পুলিশের গুলিতে মারা যান বলে অভিযোগ ওঠে।

    মৃতের পরিবার ঘটনার CBI তদন্তের দাবি জানালেও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে CID তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, উচ্চ আদালত ও মানবাধিকার কমিশনের গাইডলাইন অনুযায়ী কোথাও পুলিশের গুলিতে কেউ মারা গেলে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করতে হয়।

    সেই নিয়ম মেনেই পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত করার আবেদন করা হয় । সেই আবেদনের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতিকে এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এদিন রায়গঞ্জের মহকুমাশাসক কিংশুক মাইতি কালিয়াগঞ্জের জয়েন্ট BDO ও স্কেচ তৈরিতে পারদর্শী একজন বাস্তুকারকে নিয়ে দুপুর দেড়টা নাগাদ রাধিকাপুরের চাঁদগা গ্রামে যান।

    মৃত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মনসহ পরিবারের বাকি সদস্যদের থেকে সেই রাতের ঘটনার বিশদ বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন মহকুমাশাসক। পরিবারের সদস্যদের বয়ান অনুযায়ী প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি স্কেচ তৈরি করা হয়। প্রায় ঘন্টা দেড়েক জিজ্ঞাসাবাদ করে মহকুমাশাসক এলাকা ছাড়েন।

    মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের দাদা মৃণাল কান্তি বর্মন জানিয়েছেন, 'মহকুমাশাসকের সঙ্গে এদিনের তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করা হয়েছে । তবে রাজ্য সরকারের উপর আমাদের আস্থা নেই। আমরা CBI তদন্তের দাবি জানিয়েছি। পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিভিন্ন জায়গায় সরকারি আধিকারিকদের যেসব ঘটনা সামনে এসেছে তাতে তো বোঝাই যাচ্ছে যে তারা তৃণমূলের সঙ্গে মিলে রয়েছেন। বিভিন্ন আধিকারিকরা আসছেন, CID আসছে। এরা এসে সব তথ্য তুলে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আদৌ এই সমস্ত তথ্য হাইকোর্টে পেশ করবে কিনা তা নিয়ে আমাদের সংশয় আছে।'

    অপরদিকে, মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন বলেছেন, 'মহকুমা শাসক কে ঘটনার সম্পর্কে জানিয়েছি। কিন্তু CID কিংবা এদের ওপর আমাদের ভরসা নেই। আমরা CBI তদন্ত চাই।'
  • Link to this news (এই সময়)