• গাঙ্গেয় ডলফিনের টানে ভিড় বাড়ছে কাটোয়ায়
    বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৩
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুককে ঘিরে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠছে কাটোয়ায়। ভাগীরথীর তীরে গড়ে উঠছে রিসর্ট। গাঙ্গেয় ডলফিন দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকরা আসছেন কাটোয়ায়। ভাগীরথীতে নৌকো বিহারের সঙ্গে গাঙ্গেয় ডলফিন ও অন্যান্য জলজ প্রাণী দেখছেন তাঁরা। উইকএন্ড ডেস্টিনেশন হয়ে উঠছে কাটোয়া। 

    কাটোয়া শহর ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী। শাঁখাইয়ের কাছে অজয় নদ এসে মিশেছে ভাগীরথীতে। মোহনা হওয়ায় এই এলাকা গাঙ্গেয় ডলফিন বা শুশুকদের বিচরণ ক্ষেত্র। পাশাপাশি কল্যাণপুর থেকে পাটুলি পর্যন্ত ভাগীরথীর প্রায় ৩০ কিমি এলাকাজুড়ে দেখা মেলে গাঙ্গেয় ডলফিনের। কাটোয়া শাঁখাই ঘাট এলাকায় কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেই ভাগীরথীর জলে খেলে বেড়াতে দেখা যায় ডলফিনদের। 

    ডলফিন সংরক্ষণে জোর দিয়েছে বনদপ্তর। গাঙ্গেয় ডলফিন বাঁচাতে গবেষণাও চলছে বিস্তর। কাটোয়া সংলগ্ন নয়াচরের বাসিন্দা গণেশ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন ডলফিন নিয়ে। কীভাবে ডলফিন বাঁচানো যায় বা এদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যায় তা নিয়েই মূলত কাজ করেন তিনি। বনদপ্তরের কাছে ডলফিন মিত্র নামে পরিচিত গণেশ। তাঁর প্রায় ১৪ জনের একটি দল ডলফিন সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী বাঁচানোর কাজ করেন। এই দলের সদস্যদের সংসারও চলে এই কাজ করেই। তিনি একটি ইকো রিসর্টও করেছেন পর্যটকদের জন্যই। পর্যটকদের গাঙ্গেয় ডলফিন দেখিয়ে নিয়ে আসেন ডলফিন মিত্র গণেশ চৌধুরী। তাঁদের একটি নৌকো আছে। দিনের বেলা সেই নৌকো করে ভাগীরথীতে যে জায়গায় সব থেকে বেশি ডলফিন দেখা যায় সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় পর্যটকদের। তাঁরা ডলফিন দেখেন ও ছবি তোলেন। পাশাপাশি কচ্ছপ, ঘড়িয়াল, একাধিক পাখি ও অন্যান্য প্রাণীও দেখানো হয়।

    আরও জানা গিয়েছে, রাতের দিকে ভাগীরথীর বুকে জেগে ওঠা চরগুলিতে নাইট সাফারিও করানো হয়। গণেশ চৌধুরী বলেন, যাঁরা ছবি তুলতে ভালোবাসেন ও বন্যপ্রাণ ভালোবাসেন তাঁরাই আসেন রিসর্টে। আমরা পর্যটকদের ডলফিন সহ বিভিন্ন প্রাণী ও পাখি দেখাই। তাঁদের সচেতনও করি। ডলফিন কীভাবে কমে যাচ্ছে, কী করলে বাঁচানো যেতে পারে তাও বলি। আমরা এখানে এই এলাকার জীববৈচিত্র্য নিয়ে একটি তথ্যচিত্র দেখাই পর্যটকদের। এতে আমাদের যেমন উপার্জন হয় তেমনই সাধারণ মানুষের সচেতনতাও বাড়ে। এখান থেকে যে আয় হয় তা থেকে প্রায় ১৪টি পরিবারের সংসার চলে। আবার শুশুক, সাপ এসব উদ্ধারের জন্য যে খরচ হয় সেটাও ওঠে এখান থেকে।

    শুধু তাই নয়, কেতুগ্রামের বেলুন গ্রামে আরেকটি রিসর্ট গড়ে উঠেছে। সেখানেও পর্যটকদের মূল আকর্ষণ গাঙ্গেয় ডলফিন। আগামী দিনে কাটোয়ার পর্যটন মানচিত্রে যে গাঙ্গেয় ডলফিন জায়গা করে নিচ্ছে তা বলাই বাহুল্য। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)