ক্ষোভে ফুঁসছেন বেলদার নামী স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকরা
বর্তমান | ২৫ জুলাই ২০২৩
সংবাদদাতা, বেলদা: শতবর্ষ প্রাচীন স্কুল। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নাম উঠেছে একাধিকবার। সেই স্কুলে শেষ চার মাসে পঠনপাঠন হয়েছে সর্বসাকুল্যে দিন কুড়ি। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে মাত্র দুই থেকে তিন দিন। যা নিয়ে চিন্তার ভাঁজ শিক্ষা মহলে। এই চিত্র নারায়ণগড় ব্লকের শতবর্ষ প্রাচীন স্কুল বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমির। ফলে কীভাবে সিলেবাস শেষ হবে তা দিয়ে চিন্তায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। ১৫ এপ্রিল থেকে টানা গরমের ছুটি। ১৫ জুন স্কুল খুললেও ৪ জুলাই থেকে এখনও পর্যন্ত নির্বাচনের কারণে বন্ধ বিদ্যালয়। ৪ জুলাই থেকে ভোটের প্রশিক্ষণ, তারপর ভোট। ভোটের পর গণনার প্রশিক্ষণ। গণনার দিন থেকেই এলাকার ভোট পরবর্তী সুরক্ষার কারণে বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। এবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরও ১০ দিন থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। যেখানে এই ব্লকের পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন ব্লকের বিদ্যালয়গুলির পঠনপাঠন সিলেবাস অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে থমকে রয়েছে এই বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে শেষ করতে হবে দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন। কিন্তু এখনও স্কুলে পঠনপাঠন শুরু না হওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকদের একাংশ। পঠনপাঠনের স্বার্থে সন্তানদের অন্য স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছেন অনেকে। এক অভিভাবকের কথায়, যেভাবে শহরের মাঝে এই নামী স্কুলে বারবার বিভিন্ন কারণে পঠনপাঠন বিঘ্নিত হচ্ছে তাতে আমাদের সন্তানরা পিছিয়ে পড়ছে। আগামী দিনে বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভাবছেন অভিভাবকদের একাংশ। স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রী দেবলীনা জানা বলে, এখনও পর্যন্ত মাত্র তিনদিন ক্লাস করতে পেরেছি আমরা, কী করে সিলেবাস শেষ করব, কী করে ভালো রেজাল্ট করব তা জানি না। সরকার যেন অবিলম্বে স্কুল চালুর ব্যবস্থা করে, না হলে আমরা সবদিক দিয়ে পিছিয়ে পড়ব। স্কুলের ইংরেজি শিক্ষক বিজন ষড়ঙ্গী বলেন, আমরা রোজ বিদ্যালয়ে এলেও ছাত্রছাত্রীরা বিদ্যালয়ে আসতে না পেরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। প্রশাসনের দ্রুত বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। প্রধান শিক্ষক কার্তিক আচার্য বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যে প্রশাসন যদি আমাদের বিদ্যালয় থেকে জওয়ানদের সরিয়ে না নেন তাহলে আমরা এই বিষয়টি নিয়ে পথে নামব। ব্লক অফিস থেকে থানা, সর্বত্র ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে পঠনপাঠনের স্বার্থে ডেপুটেশন সংগঠিত করব। বিষয়টি দিয়ে নারায়ণগড়ের বিডিও মুখ খুলতে না চাইলেও ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, আদালতের নির্দেশে উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা আমাদের যা নির্দেশ দিয়েছেন আমরা সেভাবেই করেছি। আগামী দিনে যা নির্দেশ আসবে তাই পালন করব। এদিকে শতবর্ষ প্রাচীন এই স্কুলে এভাবে পড়ুয়াদের স্বার্থ বিঘ্নিত হওয়ায় ক্ষোভ জমছে এলাকাবাসীদের মধ্যে।