• যুবকের ক্ষতবিক্ষত মৃতদেহ উদ্ধার গঙ্গায়, পরকীয়ায় অভিযুক্ত স্ত্রী পলাতক
    বর্তমান | ২৬ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাঁচদিন নিখোঁজ থাকার পর অবশেষে কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালের কর্মী বিপ্লব বসুর দেহ উদ্ধার হল গঙ্গায়। মঙ্গলবার হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকায় গঙ্গার ঘাট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর শরীরে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রীর পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় খুন হতে হয়েছে বিপ্লবকে। তিনি যেদিন থেকে নিখোঁজ, সেদিন থেকেই স্ত্রী চৈতালি বসু পলাতক। তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন মৃতের পরিজনরা। এমনকী, কামারহাটি থানায় গিয়েও বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিস জানিয়েছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাঁকে খুন করা হয়েছে, তদন্তে সবটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ২০ জুলাই রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যান বিপ্লব বসু।

    স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে চৈতালির সঙ্গে বিপ্লবের বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের এক মেয়ে রয়েছে। বিপ্লববাবু কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালের কর্মী ছিলেন। থাকতেন হাসপাতালের আবাসনেই। কেউ বিপদে পড়লে আগে ছুটে যেতেন তিনি। আত্মীয়-স্বজনরা কেউ অসুস্থ হলে তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা করাতেন। এদিকে, তাঁর স্ত্রী চৈতালির সঙ্গে ওই আবাসনেরই এক ব্যক্তির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তা নিয়েই অশান্তির সূত্রপাত। ওই সম্পর্ককে কেন্দ্র করে তাঁদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন। অশান্তি তীব্র আকার নেয় ২০ জুলাই। সেদিন বিকেলের পর নিখোঁজ হয়ে যান বিপ্লববাবু। পরিবারের সদস্যরা তাঁর খোঁজ না পাওয়ায় কামারহাটি থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন। অবশেষে এদিন হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকায় গঙ্গার ঘাটে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায় বিপ্লববাবুর মরদেহ। মৃতদেহের গায়ে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রীর পরকীয়া দেখে ফেলায় অশান্তি চরমে উঠতে পারে, এই আশঙ্কা থেকেই তাঁকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। চৈতালির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না।

    এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদিন ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় ইএসআই হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কামারহাটি থানা বিশাল পুলিস বাহিনী মোতায়েন করে। মৃতের এক আত্মীয় বলেন, বিপ্লব খুব ভালো মানুষ ছিলেন। মানুষের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। ওঁর স্ত্রী বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর বিপ্লবের উপর অকথ্য অত্যাচার শুরু করেন। এমনকী, তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনও জামাইকে মারধর করত বলে অভিযোগ। শেষমেশ পথের কাঁটা সরাতেই স্বামীকে খুনের চক্রান্ত করেছেন চৈতালি। বিপ্লবের বন্ধু অভি ঘোষ বলেন, আমরা নিশ্চিত বিপ্লবকে খুন করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)