• গঙ্গায় মিলল স্বামীর দেহ, তালাবন্ধ বাড়ি! উধাও স্ত্রী
    এই সময় | ২৬ জুলাই ২০২৩
  • এই সময়, কামারহাটি: চার দিন ধরে খোঁজ ছিল না। অবশেষে হাওড়ার গোলাবাড়ি গঙ্গার ঘাটে পাওয়া গেল কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালের কর্মী বিপ্লব বসুর (৩৫) মৃতদেহ। বিপ্লব আত্মহত্যা করেছেন নাকি খুন হয়েছেন, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে পুলিশ। খোঁজ চলছে বিপ্লবে স্ত্রী চৈতালি ভট্টাচার্যের। চৈতালিকে পাওয়া গেলে বিপ্লবের মৃত্যু রহস্যের কিনারা করা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।

    খড়দহের রাজা বস্তির বাসিন্দা বিপ্লব বসুর সঙ্গে বছর দশেক আগে বিয়ে হয় রাজারহাটের চৈতালি ভট্টাচার্যের। তাঁদের একটি মেয়ে আছে। বাড়িতে নিত্য অশান্তির কারণে খড়দহে ছেড়ে কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালের কর্মী বিপ্লব হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে স্ত্রী-কন্যাকে নিয়ে থাকতেন। তাতে অবশ্য অশান্তিতে ছেদ পড়েনি। চৈতালি স্বামীকে মারধর করতেন বলে অভিযোগ।

    এ সবের মধ্যেই একজনের সঙ্গে চৈতালি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ করেন বিপ্লবের সহকর্মীরা। বিপ্লবের অনুপস্থিতিতে অনেকেই ওই যুবককে তাঁদের ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখেছিলেন বলে অভিযোগ। বিপ্লবও দেখেছিলেন। এ নিয়ে বাড়িতে অশান্তি আরও বাড়ে। পরিস্থিতি এমন হয়, যে বিপ্লব একবার বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যান। পরে অবশ্য ফিরেও আসেন।

    চার দিন আগে, বৃহস্পতিবার থেকে বিপ্লবকে আর কেউ দেখতে পাননি। তাঁর ফোনও ছিল বন্ধ। সেদিনই বিপ্লবের স্ত্রী চৈতালি দক্ষিণেশ্বর থানায় মিসিং ডায়েরি করেন। কিন্তু বিপ্লবের নিখোঁজের বিষয়টি খড়দহে শ্বশুরবাড়িতে জানাননি। খড়দহের পরিবারের লোকজন বিপ্লবকে ফোনে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। শেষমেশ তাঁরা হাসপাতালের কোয়ার্টারে আসেন। দেখেন ফ্ল্যাট তালাবন্ধ। এরপরেই কামারহাটি থানায় গিয়ে ছেলে নিখোঁজের ডায়েরি করেন বিপ্লবের মা। সেই সঙ্গে বৌমা চৈতালি নাতনিকে নিয়ে চলে গিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। অন্য দিকে, বিপ্লব কাজে যোগ না দেওয়ায় সন্দেহ হয় হাসপাতালের সহকর্মীদেরও। তাঁরাও খোঁজ করে বিপ্লবের কোনও হদিশ পাননি।

    অবশেষে সোমবার হাওড়া গোলাবাড়ি এলাকায় গঙ্গার ঘাট থেকে বিপ্লবের পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। গোলাবাড়ি থানা মৃতদেহের পকেটে থাকা মোবাইলের সূত্র ধরে কামারহাটি থানায় খবর দেয়। কামারহাটি থানার পুলিশ পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে এসে মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।

    সোমবার রাতে ইএসআই হাসপাতালের কোয়ার্টারে বিপ্লবের মরদেহ নিয়ে আসার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন পরিবারের লোকজন ও সহকর্মীরা। স্ত্রী চৈতালির গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হন তাঁরা। জানা গিয়েছে, বিপ্লবের শরীরে একাধিক ক্ষতের চিহ্ন রয়েছে। যা দেখে পরিবারের অভিযোগ, স্ত্রী চৈতালিই লোকজন দিয়ে বিপ্লবকে খুন করে গঙ্গায় ভাসিয়ে দিয়েছে এবং বিপদ বুঝে পালিয়ে গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে পরিষ্কার হবে বিষয়টি খুন না আত্মহত্যা। চৈতালির খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
  • Link to this news (এই সময়)