• ভিনরাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়ার মৃত্যুতে রহস্য
    বর্তমান | ২৭ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: মাত্র এক সপ্তাহ আগেই ভিনরাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলেন মেদিনীপুরের পড়ুয়া। এর মধ্যেই তাঁর রহস্যমৃত্যুর খবরে চাঞ্চল্য ছড়াল। বুধবার শহরের গোলকুয়াচকের বাড়িতে ফিরল তাঁর নিথর দেহ। মৃত ওই ছাত্রের নাম সৌরদীপ চৌধুরী(১৮)। মেদিনীপুর কলিজিয়েট স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর অন্ধ্রপ্রদেশের একটি নামজাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলেন। সৌরদীপের বাবা সুদীপ চৌধুরী মেদিনীপুর হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যাপক। একমাত্র সন্তানকে নিয়ে একরাশ স্বপ্ন ছিল পরিবারের। কিন্তু এক সপ্তাহের মধ্যেই সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেল।

    চলতি বছরেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলার বিজয়ওয়াড়ার একটি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বি-টেক কোর্সে ভর্তি হন সৌরদীপ। গত ১৭ জুলাই তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে রেখে এসে ২০জুলাই, বৃহস্পতিবার শহরে ফেরেন তাঁর বাবা-মা। এরপর সোমবার বিকেলে হস্টেল থেকে ফোন আসে পরিবারের কাছে। সৌরদীপের বাবা সুদীপ চৌধুরী বলেন, আমাদের ফোনে বলা হয় সৌরদীপ হস্টেলের ১১তলা থেকে পড়ে গিয়েছে। তাড়াতাড়ি আসুন। আমরা রাতেই বিজয়ওয়াড়ায় পৌঁছই। 

    সেখানে পৌঁছানোর পর থেকেই একের পর এক ‘রহস্যজনক’ ঘটনার সম্মুখীন হতে হয় পরিবারকে। সুদীপবাবু বলেন, আমাদের বিমানবন্দর থেকে গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় মণিপাল হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে দেখি, আমার ছেলে আর বেঁচে নেই। তার দেহ হাসপাতালের মর্গে। আমাদের বলা হয়, আপনারা চাইলে দেহ নিয়ে যেতে পারেন। ময়নাতদন্তের প্রয়োজন নেই। এরপর আমরা ছেলের মৃত্যুর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করি। আমাদের বলা হয়, হস্টেলের ব্যালকনি থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু আমার ছেলের রুমে কোনও ব্যালকনিই নেই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কথায় একের পর এক অসঙ্গতি ধরা পড়ে। তারপর তারা আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করে, আমার ছেলে আত্মহত্যা করেছে।

    যদিও পরিবারের দাবি, সৌরদীপ আত্মহত্যা করতে পারে না। তাঁকে খুন করা হয়েছে। সৌরদীপের বাবা বলেন, মেডিক্যাল সায়েন্সের ছাত্র হওয়ার সুবাদে মৃতদেহ দেখেই আমার সন্দেহ হয়। উঁচু থেকে পড়লে দেহে যেসব চিহ্ন থাকার কথা, তার বিন্দুমাত্র নেই। মর্গে দেখি, একটা নতুন জামা এবং জিন্সের প্যান্ট পরে আছে। শরীরে কোথাও কোনও দাগ বা কাদা নেই। ওকে ইট বা হাতুড়ি দিয়ে থেঁতলানো হয়েছে। মুখের একপাশে(গালে) বড়সড় আঘাতের দাগ ছিল। একটা হাতও ভেঙে গিয়েছিল বলে মনে হচ্ছে। নাক-কান দিয়ে প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল। বাকি গোটা শরীর ছিল পরিষ্কার। সব থেকেআশ্চর্যের হল, ওর হাতে একটা তামার বালা ছিল, সেটা নেই। পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। ওখানেই দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তবে সেই রিপোর্ট এখনও হাতে পায়নি পরিবার।
  • Link to this news (বর্তমান)