• হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যা, জামিনের আর্জি ‘কালীঘাটের কাকু’র, সুজয়কৃষ্ণের মেডিক্যাল রিপোর্ট চাইল আদালত
    আনন্দবাজার | ২৭ জুলাই ২০২৩
  • হৃদ্‌যন্ত্রে সমস্যার কথা জানিয়ে নিয়োগ মামলায় জামিন চাইলেন ইডির হাতে ধৃত, বর্তমানে জেল হেফাজতে থাকা সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’। তাঁর আইনজীবী সেলিম রহমান জানিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণের ধমনীতে তিনটি ‘ব্লকেজ’ ধরা পড়েছে। ‘বাইপাস সার্জারি’ করা হতে পারে তাঁর। সুজয়কৃষ্ণের শারীরিক অবস্থা কী, বৃহস্পতিবারের মধ্যে তা প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলেছে কলকাতার নগর দায়রা আদালত।

    গত ১৭ জুলাই প্যারোলের মেয়াদ শেষের পর সুজয়কৃষ্ণকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ফেরানো হয়। কিন্তু জেলে ফিরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই দিনই তাঁকে ভর্তি করানো হয় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। এখনও পর্যন্ত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

    সদ্য সুজয়ের স্ত্রী বাণী ভদ্রের মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। তবে মৃত্যুর সময় স্ত্রীর কাছে থাকতে পারেননি সুজয়। প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি অবস্থাতেই স্ত্রীবিয়োগের খবর পেয়েছেন তিনি। তার পর জামিনের আবেদন করেন। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্ট সেই আর্জি খারিজ করে দেয়। তবে সুজয়কে স্ত্রীর মৃত্যুর কারণে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। পরে পারলৌকিক ক্রিয়ার জন্য প্যারোলের মেয়াদ আরও কিছু দিন বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তবে মুক্তির পাশাপাশি ‘কালীঘাটের কাকু’র জন্য বেশ কিছু শর্তও বেঁধে দিয়েছিল আদালত।

    স্ত্রীবিয়োগ পরবর্তী পরিস্থিতি বিবেচনার পরে সুজয়ের প্যারোলের মেয়াদ ১৬ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সোমবার ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্সি জেলে ফেরেন তিনি। কিন্তু ফিরেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মূলত তিনটি শর্তে ‘কালীঘাটের কাকু’র প্যারোলের মেয়াদ বৃদ্ধি করেছিল আদালত। এক, ১৬ জুলাই পর্যন্ত তাঁর ছায়াসঙ্গী হয়ে থাকবেন ইডির এক জন অফিসার। দুই, পারলৌকিক ক্রিয়া সংক্রান্ত বিষয়ে কোনও মন্দিরে বা অন্যত্র যেতে হলেও তাঁকে ১০ কিলোমিটার পরিধির মধ্যেই থাকতে হবে। তিন, ১০ কিলোমিটার পরিধির মধ্যে কোথাও যেতে হলে, সে কথা ৪৮ ঘণ্টা আগে জানিয়ে রাখতে হবে ইডিকে। তবে একই সঙ্গে হাই কোর্ট জানিয়েছিল, সুজয় ওই ক’দিন তাঁর জন্য নির্দিষ্ট করা পরিধির মধ্যে কোথাও গেলে, তাঁর সঙ্গে তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্যও থাকতে পারবেন। শর্ত অনুযায়ী, প্যারোলে সুজয়ের সঙ্গেই ছিলেন ইডি আধিকারিক। তাঁকে জেল থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়েও তাঁরা ছিলেন বলে সূত্রের খবর।

    রাজ্যে শিক্ষায় নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে গত ৩০ মে প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর সুজয়কৃষ্ণকে গ্রেফতার করে ইডি। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তল ঘোষের সঙ্গে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সেতুবন্ধনের কাজ করেছিলেন সুজয়। মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল। ২০১৮ সাল থেকে এই দুর্নীতিতে ‘কাকু’ জড়িত বলে দাবি করে ইডি। তদন্তকারীরা আরও দাবি করেন, জেরায় কুন্তল জানিয়েছেন, পার্থের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিতে তাঁর কাছ থেকে প্রথমে ৭০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন সুজয়। সুজয়ের কথাতেই তিনি পার্থকে আরও ১০ লক্ষ টাকা দেন।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)