• Mohun Bagan: সুহেল-এংসনের জোড়া গোল, দাপুটে জয় মোহনবাগানের
    আজকাল | ২৯ জুলাই ২০২৩
  • মোহনবাগান - ৪ (সুহেল-২, এংসন-২)

    সিএফসি - ১ (আকাশ)

    সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: ব্যারাকপুরের বিভূতিভূষণ স্টেডিয়ামে সবুজ মেরুন ঝড়। সুহেল আহমেদ ভাট এবং এংসন সিংয়ের জোড়ায় কলকাতা ফুটবল ক্লাবকে ৪-১ গোলে হারাল মোহনবাগান। জয়ের ফলে গ্রুপে দুই নম্বরে উঠে এল সবুজ মেরুন। তবে এদিন অন্তত আট গোল হতে পারত। হ্যাটট্রিক মিস করেন সুহেল ভাট, এংসন সিং, ফারদিন আলি মোল্লা। একের পর এক সিটার মিস। চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না। নয়তো সিএফসিকে গোলের মালা পরাতে পারত মোহনবাগান। মহমেডানের কাছে সাত, ইউনাইটেড স্পোর্টসের কাছে আট গোলের পর এদিন আরও চার। মোট ২৪ গোল হজম করল সিএফসি।‌ জোড়া গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতার দৌড়ে এগিয়ে সুহেল। কাশ্মীরের স্ট্রাইকারের গোল সংখ্যা সাত। কলকাতায় এসে জানিয়েছিলেন, লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হাওয়াই লক্ষ্য। সেই টার্গেটে এগিয়ে চলেছেন। এদিন শুধু দুটো গোল করেননি, দলকে খেলিয়েওছেন। একাধিক আক্রমণ তৈরির কাণ্ডারি সুহেল। ম্যাচের সেরাও তিনি। সুহেল বলেন, 'হ্যাটট্রিক করতে চেয়েছিলাম। সেটা হয়নি। তবে ভাল খেলে দলকে সাহায্য করাও লক্ষ্য ছিল। আমার টার্গেট লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়া। তবে সেই নিয়ে এখনই ভাবতে চাই না।' দুটো গোলের মধ্যে দ্বিতীয়টিকে সেরা বাছলেন সুহেল।

    এদিনের ম্যাচের প্রাপ্তি তিনটে দুর্দান্ত গোল। তারমধ্যে সেরা সিএফসির অ্যালেক্স আকাশ মণ্ডলের। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে থাকবে সুহেল এবং এংসনের গোল। 

    কালীঘাটের কাছে আটকে যাওয়ার পর এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী ফুটবল খেলে মোহনবাগান। দলে তিনটে পরিবর্তন করেন বাস্তব রায়। অর্শ আনোয়ারের জায়গায় গোলের নীচে অভিষেক হয় সৈয়দ জাহিদ হুসেন বুকহারির। এনসন সিং, রাজ বাসফোরের পরিবর্তে নামেন নংদম্বা নাওরেম এবং রবি বাহাদুর রানা।‌ ম্যাচের ৫ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। অফসাইডের জন্য সুহেলের গোল বাতিল হয়। তার কিছুক্ষণ পরই বাইরে মারেন কাশ্মীরের স্ট্রাইকার। প্রথম আধ ঘণ্টায় দুটো নিশ্চিত গোল মিস। সুহেলের পাস থেকে সিটার নষ্ট করেন নাওরেম। শেষপর্যন্ত ৩১ মিনিটে লকগেট খোলে। মাঝমাঠ থেকে অমনদীপের লং বল ধরে সুহেলের শট বিপক্ষের গোলকিপারের আঙুল ছুঁয়ে পোস্টে লেগে গোলে ঢোকে। অবশ্য বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি সবুজ মেরুন। প্রথমার্ধে বেশ কয়েকটা বিক্ষিপ্ত আক্রমণ করার চেষ্টা করে সিএফসি। বরুণের পাস থেকে শুভর শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৪০ মিনিটে বিশ্বমানের গোলে ম্যাচে সমতা ফেরান পরিবর্ত ফুটবলার অ্যালেক্স আকাশ মণ্ডল। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে গোলার মতো শটে দুরন্ত গোল রোনাল্ডোর ভক্ত। তিন বছর ধরে সিএফসিতে খেলছেন। উইঙ্গার হলেও দলের প্রয়োজনে খেলানো হচ্ছে সাইড ব্যাকে। এদিন কেরিয়ারের সেরা গোল করে অ্যালেক্স বলেন, 'আমি ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলাম।

    গোলে রাখার চেষ্টা করেছি। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে এরকম একটা গোল করে দারুণ লাগছে। এটাই আমার সেরা গোল।' প্রথমার্ধের অন্তিমলগ্নে ২-১ করে মোহনবাগান। নাওরেমের শট ফিস্ট করে বাঁচায় সিএফসি কিপার সৌম্য। বল মাটিতে পড়ার আগেই হাফ ভলিতে দৃষ্টিনন্দন গোল সুহেলের। বিরতির পর ম্যাচ পুরোপুরি একপেশে।

    দুটো পরিবর্তন খেলার ভোল পাল্টে দেয়। হামতের জায়গায় থুমসল টংসিনকে নামান বাস্তব রায়। নাওরেমের পরিবর্তে নামেন এংসন। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ঝড় তোলে মোহনবাগান। দুই পরিবর্ত ফুটবলার বিপক্ষের রক্ষণকে তছনছ করে দেয়। মূলত ডানপ্রান্ত দিয়ে আক্রমণ হচ্ছিল। ৫৪ মিনিটে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা সুহেলকে না দিয়ে নিজে গোলকিপারের গায়ে মারেন টাইসন। তার চার মিনিট পর টংসনের পাস থেকে বাইরে মারেন ফারদিন। হ্যাটট্রিকের সুযোগ মিস করেন। ম্যাচের ৬৮ এবং ৭৯ মিনিটে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন এংসন সিং। টাইসনের পাস থেকে প্রায় ১৮ গজ দূর থেকে গোল পাহাড়ি ফুটবলারের। তাঁর দ্বিতীয় গোলও অনেকটা একইরকম। শিবাজিতের থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইরে সার্কেলের মাথা থেকে দূরপাল্লার শটে দারুণ গোল। এংসন বলেন, 'দুটো গোলই স্পেশাল। আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। তবে হ্যাটট্রিক মিস করার আফশোস রয়েছে। চেষ্টা করব যাতে পরের ম্যাচে গোল না মিস হয়।' পাঁচ ম্যাচে ক্লিনশিট রাখতে ব্যর্থ মোহনবাগান। তবে সেই নিয়ে ভাবিত নন বাস্তব রায়। আঠারো গোল করাকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন সবুজ নেরুনের রিজার্ভ দলের কোচ। 
  • Link to this news (আজকাল)