• ছবি তোলাতেই মণিপুরে ‘ইন্ডিয়া’! বিজেপির আপত্তি অধীর, সুস্মিতাদের ত্রাণশিবির পরিদর্শনেও
    আনন্দবাজার | ২৯ জুলাই ২০২৩
  • বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদীয় প্রতিনিধিদেলর মণিপুর সফর নিয়েও এ বার খোঁচা দিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর শনিবার বলেন, ‘‘বিরোধীরা মণিপুরের পরিস্থিতিকে হাতিয়ার করে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে।’’ বিরোধী সাংসদেরা মণিপুরে ছবি তোলাতে গিয়েছেন বলেও খোঁচা দেন তিনি। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে অনুরাগের অভিযোগ, আগের সরকারের আমলে ছ’মাস ধরে অচলাবস্থা চলেছিল মণিপুরে।

    লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে ‘ইন্ডিয়া’র শরিক দলগুলির ২১ জন সাংসদের প্রতিনিধি দল শনিবার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিজেপি শাসিত ওই রাজ্যের পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছে। দলে রয়েছেন তৃণমূলের সুস্মিতা দেব, ডিএমকের কানিমোঝি, সিপিএমের এএ রহিম, জেডিইউয়ের লালন সিংহ, আরজেডির মনোজ ঝা, জাভেদ আলি খান, শিবসেনার (বালাসাহেব) অরবিন্দ সাওয়ন্ত, আম আদমি পার্টির সুশীল গুপ্ত, সিপিআইয়ের পি সন্তোষ কুমার, আইইউএমএলের ইটি মহম্মদ বশির, আরএলডির জয়ন্ত চৌধুরী, ভিসিকের থল তিরুমালব্যনের মতো বিরোধী জোটের সাংসদেরা। অনুরাগের দাবি, মণিপুরের পরিবর্তে বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের হিংসা দেখতে আসা উচিত ছিল ‘ইন্ডিয়া’র সাংসদদের।

    শনিবার ইম্ফলে পৌঁছেই অধীররা হেলিকপ্টারে জনজাতি অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুরে হিংসায় ঘরছাড়াদের আশ্রয় শিবিরে যান। অধীর বলেন, ‘‘মণিপুরের ঘটনায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’ চলতি মাসের গোড়ায় মণিপুর সফরে গিয়ে রাহুল গান্ধীও প্রথমে চূড়াচাঁদপুরে গিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে, সে সময়ও বিজেপি নেতা তথা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতিকে খোঁচা দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘খবরের শিরোনামে থাকতেই মণিপুরে এসেছেন রাহুল।’’

    প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।

    মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষ ঠেকাতে গত ৬ মে মণিপুরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। নামানো হয় সেনা এবং অসম রাইফেলস বাহিনীকে। কিন্তু তাতে কোনও ফল মেলেনি বলে অভিযোগ। তিন মাসের ধারাবাহিক হিংসায় প্রায় দুশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। কেউ সরকারি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, কেউ মণিপুর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন পড়শি রাজ্য মিজোরাম এবং অসমে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)