• Mohun Bagan: মোহনবাগান দিবসে জামাই সুনীলের উপস্থিতিতে সুব্রত ভট্টাচার্যের বই উদ্বোধন, কিংবদন্তির নামে রাস্তা ঘোষণা 
    আজকাল | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: মোহনবাগান দিবসে আবেগে ভাসল সবুজ মেরুন তাঁবু। যাবতীয় লাইমলাইট কেড়ে নেয় ভারতীয় ফুটবলের একমাত্র শ্বশুর-জামাই জুটি। শনিবার মোহনবাগানের ঘরের ছেলে সুব্রত ভট্টাচার্যের আত্মজীবনী 'ষোলো আনা বাবলু'র উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে তারকার মেলা। বেঙ্গালুরু থেকে উড়ে এসেছেন ভারত অধিনায়ক তথা জামাই সুনীল ছেত্রী। এছাড়াও ছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, গৌতম সরকার, প্রসূন ব্যানার্জি, শ্যাম থাপা, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য সহ সুব্রত ভট্টাচার্যের এককালীন সতীর্থরা।‌ ছিলেন ক্লাবের সভাপতি টুটু বসু, সহ সভাপতি কুণাল ঘোষ, সচিব দেবাশিস দত্ত সহ অন্যান্য কর্তারা। বিধাননগরের একটি মাঠ সুব্রত ভট্টাচার্যের নামে করার ঘোষণা করেন দমকল মন্ত্রী। সুজিত বসু বলেন, 'আমি এই মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। মারাদোনা নিজের মূর্তি উদ্বোধন করেছেন। শৈলেন মান্নার মূর্তি আছে। বিধাননগরের এইচবি মাঠ, যেখানে শ্রীভূমি‌ প্র্যাকটিস করে, সেটা সুব্রত ভট্টাচার্যের নামে হবে। এবার সল্টলেকে বাবলু দার নামে নিজস্ব মাঠ থাকবে।' নিজের কেরিয়ারে কিংবদন্তির কোচিংয়ে শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে শ্বশুর হিসেবে পেয়েছেন। কোচ না শ্বশুর, সুব্রত ভট্টাচার্য কোন চরিত্রে বেশি ভাল? মঞ্চে এই প্রশ্ন প্রথমে একটু বিব্রত হয়ে পড়েন সুনীল। মুহূর্তের মধ্যে ট্যাকল করে জবাব, 'অবশ্যই কোচ বাবলু দা। আমার ফুটবল জীবনের শুরু থেকে আমি ওনাকে পেয়েছি। এই মাঠেই আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। তাই যেকোনও দিন কোচ বাবলু দাকে এগিয়ে রাখব।' সুনীলের উপস্থিতিতে নিজের আত্মজীবনীর উদ্বোধনে তৃপ্ত ময়দানের অন্যতম রঙিন চরিত্র। সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, 'সুনীল এসেছে বলে ভাল লাগছে। ভারতের সেরা ফুটবলারের পাশাপাশি মানুষ হিসেবেও ভাল। সেই জন্যই ও এই উচ্চতায় পৌঁছেছে। নিজের অধ্যাবসায়, সাধনার মধ্যে দিয়ে এই জায়গায় গিয়েছে। খুবই নিষ্ঠাবান। প্রয়াস আছে। সবসময় অনুশীলন নিয়ে মগ্ন থাকে। মনটাও ভাল। আজকের দিনে ও পাশে থাকায় অবশ্যই ভাল লাগছে।' 

    অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় আসতে পারেননি মেয়ে সোনম। ছেলে সাহেব বিদেশে শুটিংয়ে ব্যস্ত।

    অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুব্রত ভট্টাচার্যের স্ত্রী লতা ভট্টাচার্য। তবে 'ফুটবলার' বাবলু প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। স্বেচ্ছায় দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন তারকা জামাই। বেশ কয়েকবছর কলকাতায় খেলার সুবাদে বাংলা জানেন সুনীল। এই বিশেষ দিনে ভাঙা ভাঙা বাংলায় শ্বশুরের ভূয়সী প্রশংসা করলেন। সুনীল বলেন, 'আমাকে সোনম এখানে বাংলায় কথা বলতে বলেছে। উনি যখন খেলছিলেন, আমি পৃথিবীতে ছিলাম না। ভিডিও বেশি নেই, তাই দেখতে পারিনি। ২০০২ সালে আমি প্রথম এই মাঠে এসেছিলাম। আমি জানতাম না এখানে খেললে কী হয়। জার্সির এত গুরুত্ব। বাবলু দা বলেছিলেন, দুঃখ পেলে ফুটবল খেলো, খুশি হলে ফুটবল খেলো। সব ছেড়ে ফুটবলের জন্য ভাবো। আমি এসব কিছুই জানতাম না। একজন আমাকে এগুলো শিখিয়েছে। বলেছেন, যাই হোক না কেন নিজের সেরাটা দাও, জার্সির জন্য খেলো। এই শিক্ষা আমি কোনওদিন ভুলব না। খুব কম লোককে জানি যে মোহনবাগানের সঙ্গে এইভাবে জড়িয়ে। বিএফসির খেলার দিন বাড়িতে অনেকে বেঙ্গালুরুকে সাপোর্ট করে। কিন্তু একমাত্র উনি চান আমি গোল করি কিন্তু মোহনবাগান জিতুক।' মোহনবাগান দিবসে 'মোহনবাগান রত্ন' পেয়েছেন। এবার একই দিনে প্রিয় ক্লাবে তাঁর বই উদ্বোধন হল। বৃত্ত সম্পূর্ণ ময়দানের 'বাবলুর'। সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, 'ফুটবলার হিসেবে আমার জীবন মানুষের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছি। যাতে লোকে জানতে পারে আমার যাত্রাপথ। নতুন প্রজন্ম তার থেকে কিছু শিখতে পারে। সেই কারণেই নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছি। আমি কষ্টের মধ্যে দিয়ে এসেছি। অনেক প্রলোভন পেয়েছি যাতে মানুষ আকৃষ্ট হতে পারে, কিন্তু আমি ফাঁদে পা দিইনি। সেইসব বইয়ে তুলে ধরেছি।' এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার, আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত। মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকে সুনীল ছেত্রী এবং সুব্রত ভট্টাচার্যকে সংবর্ধিত করা হয়। সংবর্ধনা দেয় ইস্টবেঙ্গলও। উত্তরীয়, ফুলের স্তবক এবং শতবর্ষের কয়েন দেওয়া হয় দুই তারকাকে। ময়দানের বাবলুর সঙ্গে ফুটবলজীবনের স্মৃতিচারণে ডুব দেন শ্যাম থাপা, প্রসূন ব্যানার্জি, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্যরা। 

    ছবি: অভিষেক চক্রবর্তী 
  • Link to this news (আজকাল)