• Hooghly: চিকিৎসার সামর্থ্য নেই, পায়ে শিকল, বন্দিদশায় মানসিক ভারসাম্যহীন
    আজকাল | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • মিল্টন সেন, হুগলি: চিকিৎসা করানোর পয়সা নেই।

    তাই দীর্ঘ ২ বছর দিন কাটছে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায়। কোনও রকমে শুয়ে বসে কাটাচ্ছেন মানসিক ভারসাম্যহীন প্রৌঢ়। নাম কাজল পাল। বয়স পঞ্চাশের কিছু বেশি হবে। হুগলির দেবানন্দপুর পঞ্চায়েতের কাজীডাঙ্গা এলাকায় গেলেই অমানবিক এই দৃশ্য নজরে পড়বে। জানা গেছে, বছর কুড়ি আগে কাজল বাবুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে আর্থিক অসঙ্গতি এবং পারিবারিক উদ্যোগের অভাবে আর তা চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বিনা চিকিৎসায় কেটেছে দুই দশক। বর্তমানে টিনের চালার একটি ছোট্ট ঘরে শিকল বাঁধা অবস্থায় দিন কাটছে কাজলের। এক সময় ভরা সংসার ছিল কাজল বাবুর। মা, ভাই, স্ত্রী, সন্তান, সুখের সংসার ছিল কাজলের। হঠাৎই সামান্য পারিবারিক বিবাদের জেরে সন্তানকে নিয়ে ঘর ছাড়ে তাঁর স্ত্রী। তারপরই মানসিক অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন কাজল। ক্রমে ক্রমে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। দিন রাত সবসময় তাঁর চিৎকার চেঁচামেচি দাপাদাপিতে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হতে থাকে। পরিবারের তরফে বছর দুয়েক আগে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কাজলকে। তারপর থেকেই তাঁর ঠিকানা হয় বাড়ি সংলগ্ন টিনের ঘর। ভরসা বলতে বৃদ্ধা মা বিশাখারানী পাল। তিনি আবার মেজো ছেলের উপর নির্ভরশীল। মেজোছেলের দেওয়া খরচে কোনও রকমে চলে দু'জনের পেট। বিশাখা দেবীর আক্ষেপ, আগে তাঁর ছেলে ভাল, একদম সুস্থ ছিলেন। কোনও সমস্যা ছিল না ওঁর শরীরে। বছর কুড়ি আগে স্ত্রী সন্তান চলে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে ওঁর আচার আচরণ পাল্টাতে শুরু করে। লোকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলা বন্ধ করে দেয়। নিজে নিজে কথা বলতেন। ছেলের মানসিক অবস্থার কথা ভেবে প্রথম দিকে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। পরে টাকা পয়সার অভাবে তা আর চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বছর দুয়েক আগে ছেলের বিকার চরমে ওঠে। তাই ছেলেকে বেঁধে রাখা ছাড়া তাঁর কাছে আর কোনও উপায় ছিল না। বর্তমানে মানসিক বিকারগ্রস্ত ছেলেকে নিয়ে নাজেহাল। তবে বিশাখা দেবী চান ছেলের চিকিৎসা হোক, বন্দিদশা থেকে মুক্তি পান তাঁর ছোট ছেলে।

    ছবি: পার্থ রাহা
  • Link to this news (আজকাল)