• গাড়ি সহ ব্যবসায়ীকে অপহরণ, ধাওয়া করে দীঘা থেকে উদ্ধার গোয়েন্দাদের
    বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঠিক যেন সিনেমার টানটান চিত্রনাট্য! বাইপাসের ধারের এক নামী রেস্তরাঁর সামনে থেকে শুক্রবার গাড়ি সহ অপহরণ করা হয়েছিল শহরের এক ব্যবসায়ীকে। তাঁর খোঁজে কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগের বিশেষ টিম হানা দেয় পূর্ব মেদিনীপুরে। পিছনে পুলিস আসছে, সেই খবর পেয়ে শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থেকে দীঘার দিকে গাড়ি ছোটায় অপহরণকারীরা। ওল্ড দীঘা ঢুকতেই তারা বুঝে যায়, পুলিসের সঙ্গে আর পেরে ওঠা সম্ভব নয়। তখন গাড়ি ছেড়ে পালাতে গিয়ে পুলিসের হাতে ধরা পড়ে যায় মূল অভিযুক্ত সহ তিন অপহরণকারী। উদ্ধার করা হয় অপহৃত ব্যবসায়ীকেও। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে এলাকায় তল্লাশি জারি রেখেছে গোয়েন্দা বিভাগের গুন্ডাদমন শাখার পুলিস।

    লালবাজার সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় ভাইপোর সঙ্গে উত্তর পঞ্চান্নগ্রামে একটি রেস্তরাঁ থেকে খেয়ে বের হন রাজমূল শেখ ওরফে রাজু। ৩২ বছর বয়সি যুবক ক্রিপ্টোকারেন্সির ব্যবসা করেন। ওইদিন সন্ধ্যায় বাইপাসের সার্ভিস রোডের উপর দাঁড়িয়েছিল তাঁর এসইউভি। ভাইপো গাড়ি থেকে কিছুটা দূরে ছিলেন। গাড়িতে তখন একাই বসেছিলেন ব্যবসায়ী। আচমকাই তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায় লাল রঙের আরেকটি গাড়ি। ঝটপট তা থেকে নামেন পাঁচজন যুবক। প্রত্যেকের মুখে কালো কাপড় বাঁধা। রাজুর গাড়ির দরজা খুলে চালকের আসনে চেপে বসে একজন দুষ্কৃতী। বাকিরা পিছনের সিটে। অত্যন্ত দ্রুত সেই দু’টি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যায় অপহরণকারীরা। কাকাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন ভাইপো আরিফ মহম্মদ। 

    ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মুক্তিপণ চেয়ে ফোন আসে পরিবারের কাছে। পুলিসের কাছে অভিযোগকারী জানিয়েছেন, ৩০ লক্ষ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। শুধু তাই নয়, টাকা না দিয়ে পুলিসকে জানালে রাজুর পরিণতি ভালো হবে না বলে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তা সত্ত্বেও তিলজলা থানায় দ্রুত অভিযোগ দায়ের করেন আরিফ। এরপরেই ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বেরিয়ে পড়ে গুন্ডাদমন শাখা ও তিলজলা থানার তদন্তকারী আধিকারিকের একটি টিম। এর মধ্যে আরও একটি ফোন আসে ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছে। বলা হয়, টাকা পৌঁছে দিতে হবে দীঘায়। সেই সূত্র ধরেই দীঘার দিকে রওনা দেয় পুলিস। এগরা থেকে শুরু হয় ধাওয়া করা। শেষমেশ দীঘায় গিয়ে হাল ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। শনিবার বিকেলে দীঘা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিন যুবককে। মূল অভিযুক্তের নাম আলকাস খান। বাকিদের নাম শেখ মোখতার মহম্মদ, ও মাসিউর খান। প্রাথমিকভাবে অভিযুক্তদের জেরা করে পুলিস জেনেছে, তারা সবাই ব্যবসায়ীর পূর্ব পরিচিত। তাদের মধ্যে ব্যবসায়িক শত্রুতা ছিল। সেখান থেকেই এই কাণ্ড। বাকি অভিযুক্ত ও ব্যবসায়ীর গাড়িটির সন্ধান করছেন তদন্তকারীরা।  উদ্ধার হওয়া অপহৃত ব্যবসায়ী।
  • Link to this news (বর্তমান)