পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের শিক্ষকদের কাছে টাকা ফেরত চাইল বিশ্বভারতী
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৩
সংবাদদাতা, বোলপুর: অতিরিক্ত বেতন দেওয়া হয়েছে, টাকা ফেরত দিতে হবে! এই মর্মে বাড়তি টাকা ফেরত চেয়ে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের শিক্ষকদের একটি তালিকা প্রকাশ করল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। তালিকায় যেসব শিক্ষকের নাম রয়েছে তাঁদের সর্বোচ্চ ছ’লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফেরত চেয়ে পাঠানো হয়েছে। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ অনেকের। ওই শিক্ষকদের সবার মিলিত টাকার পরিমাণ ৭০ লক্ষ টাকার বেশি। তবে অভিযোগ, ২০১৮ সাল থেকে পূর্ণ সময়ের উপাচার্য রয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। মেয়াদের শেষকালে এসে এতদিন পর এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নজরে আসতে দেরি হল কেন? এনিয়ে কর্তৃপক্ষের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছে অধ্যাপক সংগঠন।
বিশ্বভারতীর সূচনাকাল থেকেই পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রকে গুরুত্বপূর্ণ ও অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু এই দু’টি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বেতন পেতেন অধ্যাপকদের সমান। ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী তাঁদের বেতন পাওয়ার কথা নন টিচিং স্টাফদের মতো। কিন্তু তা না হওয়ায় লক্ষ লক্ষ টাকা হিসেব বহির্ভূতভাবে তাঁদের বেতন দেওয়া হয়েছে বলে বিষয়টি সামনে এসেছে। ইউজিসির নিয়ম অনুযায়ী, ১২ ও ২৪ বছর অন্তর শিক্ষক-শিক্ষিকারা একবার করে পদোন্নতি সহ অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্ট পান। কিন্তু পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের শিক্ষকরা ১০ ও ২০ বছর অন্তর অর্থাৎ দুই ও চার বছর আগে সেই সুবিধা পেয়েছেন। যা সম্পূর্ণ বেআইনি। ইউজিসি তাঁদের অধ্যাপক হিসেবে সেই স্বীকৃতি না দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যেখানে দুই স্কুলের ৩৮জন শিক্ষকের নাম রয়েছে। আচমকা এই তালিকা পেয়ে চমকে যান এই দুই স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা। ৩৮ জন শিক্ষকের মোট ফেরতযোগ্য টাকার পরিমাণ ৭০ লক্ষ ৫২হাজার ৫৪৭ টাকা। এত টাকা কীভাবে তাঁরা ফেরত দেবেন তা নিয়েও অত্যন্ত চিন্তিত বলে ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে।
যদিও এনিয়ে কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের অবহেলা রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে অধ্যাপক সংগঠন ভিবিইউএফএ। সংগঠনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, উপাচার্য এতদিন কি ঘুমিয়েছিলেন যে এত বিশাল মাপের টাকার অনিয়ম দেখতে পাননি। এই টাকা যদি সুদে খাটানো হতো তাতে প্রায় ২৫-৩০ লক্ষ টাকা বাড়তি উপার্জন হতো বিশ্ববিদ্যালয়ের। যা কল্যাণমূলক কাজে লাগতে পারত। যদিও এব্যাপারে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।