বাংলায় এবার ‘ডেঙ্গু-৩’, বাড়তে পারে জটিলতা, মুখ্যসচিবকে রিপোর্ট স্বাস্থ্যদপ্তরের
বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৩
বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: রাজ্যে এ বছর ‘ডেঙ্গু-৩’ ভাইরাসের উপদ্রব বেশি। ৬৩ শতাংশের বেশি ডেঙ্গু রোগীই এই বিশেষ ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত। গত বছরও ‘ডেঙ্গু-৩’ ভাইরাসের উৎপাত ছিল। কিন্তু পাশাপাশি দাপাদাপি ছিল ডেন-২ বা ‘ডেঙ্গু-২’ ভাইরাসের। এ বছর এখনও পর্যন্ত মাত্র ১৭ শতাংশ আক্রান্ত ডেন ২-এ ভুগছেন। ফলে এ বছর জটিল ডেঙ্গু বা হেমারেজিক ডেঙ্গু ফিভার হওয়ার আশঙ্কা বেশি। বাড়তে পারে মৃত্যুও। কারণ, যাঁদের গত বছর ‘ডেঙ্গু-২’ হয়েছিল, তাঁদের এ বছর ‘ডেঙ্গু-৩’ হলে, সংক্রমণ যেতে পারে বাড়াবাড়ির পর্যায়ে। এখনই তার ইঙ্গিত মিলছে। বৃহস্পতিবারের ডেঙ্গু বৈঠকে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে এমনই রিপোর্ট দিয়েছেন শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তারা।
দপ্তরের পেশ করা পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে স্পষ্ট ভাষায় জানানো হয়েছে, এ বছর তখনও পর্যন্ত (২৭ জুলাই) বাংলায় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৪১০ জন ডেঙ্গু আক্রান্তের নমুনা পাঠানো হয়েছিল, কার কী ধরনের ডেঙ্গু হয়েছে (সেরোটাইপিং), তা জানার জন্য। ৩০০ জনের রিপোর্ট দপ্তরের হাতে এসেছে। দেখা গিয়েছে, ডেঙ্গু ১, ২, ৩ এবং ৪-এ আক্রান্ত যথাক্রমে ৪.১, ১৭, ৬৩.২ এবং ১৫.২ শতাংশ। ৭৪ পাতার সেই রিপোর্টে এও বলা হয়েছে, ‘আক্রান্তদের একাংশের অবস্থা জটিল হবে। ডেঙ্গু ভাইরাস এবার চরিত্র বদলও করতে পারে।’
সেখানে আরও জানানো হয়েছে, ২৭ জুলাই বা বছরের ৩০ তম সপ্তাহ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে মোট ২ লক্ষ ৭৪ হাজার ৯৮৬ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩৬৯ জন। ৭২ শতাংশ আক্রান্তই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা। ২৮ শতাংশ শহরাঞ্চলের। গতবারের সঙ্গে তুলনা করলে পজিটিভিটি কিছুটা স্বস্তি দিলেও, চিন্তায় রাখছে আক্রান্তের সংখ্যা। ২০২২ সালের ৩০ সপ্তাহ পর্যন্ত বাংলায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৪৫০ জন। পজিটিভিটি ২ শতাংশ। সেখানে এবার পজিটিভিটি ১.২ শতাংশ হলেও আক্রান্ত গতবারের তুলনায় অনেকটাই বেশি। স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য বলছেন, গত বছরের তুলনায় টেস্ট যে দ্বিগুণ বেড়েছে, সেটাও কারণ। কিন্তু, ডেঙ্গুও যে হু হু করে বাড়ছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। রাজ্য সরকারের ডেঙ্গু কোর কমিটির ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, শেষ ১ সপ্তাহেই (৩০ তম সপ্তাহে) রাজ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১০৭৫ জন, যা গত বছরের দ্বিগুণের (৬০৮) কাছাকাছি!