• স্বামী মৃত্যুপথযাত্রী, মালদ্বীপে গিয়ে দুঃস্বপ্নের দিন কাটছে নকশালবাড়ির রচনার
    বর্তমান | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মালদ্বীপ বললে চোখের সামনে ভেসে ওঠে সাদা বালির সৈকত, চোখ ধাঁধানো কটেজ। পর্যটকদের স্বপ্নের সেই মালদ্বীপেই দুঃস্বপ্নের দিন কাটছে এ রাজ্যের নকশালবাড়ির এক তরুণীর। তাঁর নাম রচনা তিরকে থাপা। কর্মসূত্রে সেখানে গিয়েছিলেন। তারপর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে কিছুতেই সেখান থেকে দেশে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে। তিনি যে সংস্থায় কাজ করেন তারা মোটা টাকা দাবি করছে। রচনার পরিবারের সে টাকা দেওয়ার ক্ষমতা নেই। এদিকে দেশে তাঁর স্বামী মৃত্যুপথযাত্রী। ফলে এই দম্পতির শেষ দেখা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। সবমিলিয়ে অমানবিক পরিস্থিতির শিকার হয়ে বিদেশে দিন কাটছে এই মহিলার।  

    দার্জিলিংয়ের তিন তরুণী এবং নকশালবাড়ির আরও এক আদিবাসী মহিলার সঙ্গে মালদ্বীপ গিয়েছিলেন রচনাদেবী। নকশালবাড়িরই দুই এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁরা ওই দেশে যান। সেখানে ধিফুসি আইল্যান্ডের একটি ক্যাফেতে কাজে যোগ দেন। রচনার ননদ নবনীতা ফোনে বলেছেন, ‘দাদা রাজেশ তিরকের লিভার সিরোসিস। চিকিৎসকরা জবাব দিয়ে দিয়েছেন। এদিকে বৌদি ওই দেশে অসুস্থ হয়ে পড়ে রয়েছেন। তাঁকে দেশে ফেরাতে হিমশিম খাচ্ছি।’ মালদ্বীপে গিয়ে দার্জিলিংয়ের তিন তরুণী বুঝে যান, কাজের সুস্থ পরিবেশ নেই। তাই ঝগড়াঝাঁটি করে দেশে ফিরে আসেন তাঁরা। রচনা এবং সেই আদিবাসী তরুণী থেকে যান অর্থ উপার্জনের আশায়। 

    নবনীতা জানিয়েছেন, প্রতিশ্রুতি মতো বেতন রচনাকে দেওয়া হয়নি। অসুস্থ হওয়ার পর ওই সংস্থা জানিয়েছে, ডাক্তার দেখানো হয়েছে। তবে শুধু রক্ত এবং ব্লাড প্রেসার পরীক্ষার রিপোর্ট পাঠিয়েছে তারা। দায়সারা কাজ দেখেই বোঝা গিয়েছে চিকিৎসার বহর। বউদির দু’মাসের বেতন দেয়নি। ওঁর ওয়ার্ক পারমিট শেষ। তবুও দেশে ফিরতে দিচ্ছে না। উল্টে ৩০০ ডলার পাঠানোর দাবি করেছে। রোজই কান্নাকাটি করে ভয়েজ মেসেজ পাঠাচ্ছেন বউদি। এর পাশাপাশি ভারতীয় দূতাবাসের এক আধিকারিকের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন নবনীতা। তাঁর অভিযোগ, লেবার লাইন সংস্থার তরফে সব রকম চেষ্টা হচ্ছে। তাদের সঙ্গে দূতাবাসের ওই আধিকারিক যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন এবং লিখেছেন, সরাসরি ওই শ্রমিক অর্থাৎ রচনার সঙ্গেই কথা হচ্ছে। পাশাপাশি সহযোগিতা করেনি পুলিসও। নকশালবাড়ি থানা ডায়েরি নিলেও সেই এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। নকশালবাড়ি ডিআইবি অফিস দার্জিলিংয়ের ডিআইবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর। মৃত্যুর আগে দাদার মুখ বৌদি দেখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে নবনীতাদেবীর। 
  • Link to this news (বর্তমান)