• ঠিক যেন সিনেমা! গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে অপহৃত যুবক, দুর্ধর্ষ অভিযানে উদ্ধার
    এই সময় | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • যুবককে অপহরণ করেছিল দুস্কৃতীরা। তার দু'দিন পর ফোন করে দাবি করা হয় মুক্তিপণ। আর সেই মুক্তিপণ নিতে এসেই ফিল্মি কায়দায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেল চারজন। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের পলাশীপাড়া এলাকায়। ধৃতদের নাম জুয়েল সরকার, উত্তম সরকার, দিব্যেন্দু হালদার ও ইঞ্জামুল হক। ধৃতদের তেহট্ট আদালতে তোলা হল ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পলাশীপাড়া থানার গোপীনাথপুর মাঝপাড়া এলাকার বাসিন্দা পেশায় গাড়ি চালক ফিরোজ মণ্ডল চলতি মাসের ২২ তারিখে নওদা থানা এলাকার কামদপুরের বাসিন্দা মিলন শেখের সঙ্গে গাড়ি নিয়ে বের হন। তারপর থেকে আর তাঁর কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ২৫ তারিখ ওই যুবকের বাবা জিব্রাইল মণ্ডল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এর মধ্যে ২৭ তারিখ ফিরোজের বাবার মোবাইলে একটি ফোন আসে। সেই ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে ফিরোজের বাবার কাছে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এই কথা পুলিশকে জানান তাঁরা। পুলিশ সেই মুক্তিপণ নিয়েই ফাঁদ পাতে।

    এরপর আবার ২৮ তারিখ সকাল বেলায় ফিরোজের বাবা ওই নম্বরে ফোন করে জানান দশ লাখ টাকা দিতে পারবেন না। শেষ পর্যন্ত ৬ লাখ টাকায় রফা হয়। অপহরণকারীরা তাঁকে ছয় লক্ষ টাকা নিয়ে মুর্শিদাবাদের একটি নির্দিষ্ট স্থানে যেতে বলে। এদিকে পুলিশ এই কথা জানতে পেরে আগে থেকেই সাদা পোষাকে ওই জায়গায় ওত পেতে থাকে। ফিরোজের পরিবারের লোকজন টাকা নিয়ে সেই জায়গায় পৌঁছান। পুলিশ লক্ষ্য করে একটি গাড়িতে তিনজন ফিরোজকে নিয়ে ওই জায়গায় নামছে। সঙ্গে সঙ্গে চারিদিক থেকে পুলিশ ওই তিনজনকে ঘিরে ফেলে। পুলিশ ঘিরে ফেলেছে বুঝতে পেরে তারা ফিরোজকে ফেলে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা সম্ভব হয়নি। সেই সঙ্গে যে গাড়িতে করে অপহরণকারীরা এসেছিল সেই গাড়ির চালককেও পুলিশ গ্রেফতার করে। বাজেয়াপ্ত করা হয় গাড়িটি। উদ্ধার করা হয় ফিরোজকে। শুক্রবার রাতেই তাঁদের পলাশীপাড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিসের এই তৎপরতায় খুশি ফিরোজের পরিবার।

    এই বিষয়ে অপহৃত যুবক ফিরোজ মণ্ডল বলেন, 'আমি সকাল ন'টার দিকে মিলন শেখের সঙ্গে তাঁর চারচাকা গাড়ি নিয়ে বের হই। এরপর আর আমার কিছু মনে নেই। পরে দেখি যে আমাকে একটা ঘরে আটকে রাখা হয়েছে। আমার মনে হয় টাকার লোভে মিলন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।' ফিরোজের বাবা জিব্রাইল মণ্ডল বলেন, 'আমি ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। এটাই খুব আনন্দের। এইজন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে বলে আমি ছেলেকে ফিরে পেলাম।' পাশাপাশি তেহট্ট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভতোষ সরকার বলেন, 'আমরা অপহরণকারীদের মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার মোড়গ্রাম এলাকা থেকে গ্রেফতার করি ও অপহৃত কে উদ্ধার করে। অপহরনকারীরা ওই যুবককে ঝাড়খণ্ড এলাকায় নিয়ে গিয়ে রেখেছিল। পরে তাঁদের ফাঁদ পেতে ধরা হয়।'
  • Link to this news (এই সময়)