• Calcutta High Court : দূষণ বন্ধ না হলে বন্ধ হবে ৫ রাইস মিল, নির্দেশ হাইকোর্টের
    এই সময় | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • এই সময়: দূষণ সৃষ্টিকারী পঞ্চপাণ্ডব যেন তারা! মান্ধাতার আমলের লোকো বয়লার মেশিন ব্যবহার করে চলছিল পাঁচটি রাইস মিল আর সেখানকার বিষাক্ত, দূষিত জল ফেলা হচ্ছিল লাগোয়া দ্বারকেশ্বর নদীতে। কয়েক মাস আগে কলকাতা হাইকোর্ট এই দূষণ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়ার পরেও তা কার্যকর তো হয়ইনি, উলটে স্থানীয় প্রশাসনের একাংশের যোগসাজশে বিষয়টির অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

    গত সপ্তাহে এই নিয়ে নতুন ভাবে দায়ের হওয়া মামলায় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে— আগামী ১০ দিনের মধ্যে সরেজমিনে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে যদি বোঝা যায়, আদালতের আগের নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি, তা হলে মিলগুলো বন্ধই করে দিতে হবে।

    হুগলি জেলার আরামবাগের চাঁপাডাঙা এলাকায় পাঁচটি রাইস মিল বা চালকল চলছে বহু বছর ধরে। সেগুলোর বিষাক্ত ও দূষিত জল পরিশোধনের কোনও প্লান্ট নেই অথবা প্লান্ট থাকলেও অকেজো এবং ওই পাঁচটি রাইস মিল দূষণ ছড়াচ্ছে, এই অভিযোগে এ বছরের গোড়া হাইকোর্টে মামলা হয়

    । ওই মামলায় তদানীন্তন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে ওই জায়গায় গিয়ে রাইস মিলগুলোর যাবতীয় পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেয়।

    মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী নীলাদ্রি শেখর ঘোষ জানান, হাইকোর্ট ওই নির্দেশ দেওয়ার পরেই ধরা পড়ে যে, সব ক’টি চালকল চলছে ১৯৫৫ সালের আগেকার লোকো বয়লার ব্যবহার করে— যা এখন ব্যবহারের কথাই নয়, যা এখন বাতিল। আবার একটি চালকলে দূষিত জল পরিশোধনের কোনও ব্যবস্থা নেই। বাকি চারটিতে সেই মেশিন থাকলেও তা অকেজো।

    সেই দূষিত জল জাতীয় সড়কের উপরের ফুটপাথে নর্দমা খুঁড়ে ফেলা হচ্ছে নদীতে। পর্ষদ একটি মিল বন্ধ করে বাকিগুলোকে গোটা পরিকাঠামো আধুনিক করে তুলতে তিন মাস সময় দেয়

    । জল পরিশোধনের প্লান্টও বসাতে বলে পর্ষদ। কিন্তু তার পরেই আরামবাগের মহকুমা প্রশাসন রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য ওই জায়গায় জল জমে থাকছে, এমন অভিযোগ তুলে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে ওই ড্রেন নতুন ভাবে তৈরি করে দেওয়ার দাবি তোলে।

    জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেই দাবি মেনেও নেন। এই ভাবেই ধামাচাপা পড়ে যায় চালকলগুলোর দূষণ রোধে পদক্ষেপ। ফের মামলা হয়। সেই মামলাতেই হাইকোর্ট আরও কঠোর নির্দেশ দিয়েছে।
  • Link to this news (এই সময়)