• 'একজন সৎ রাজনীতিবিদ...', আরোগ্য কামনায় শুভেন্দুর মুখে বুদ্ধ প্রশস্তি
    এই সময় | ৩০ জুলাই ২০২৩
  • Buddhadeb Bhattacharya News: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চিকিৎসাধীন আলিপুরের এক বেসরকারি নার্সিংহোমে। শ্বাসনালী ও ফুসফুসে গভীর সংক্রমণ সহ টাইপ-টু রেসপিরেটরি ফেলিওর সহ একাধিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আরোগ্য কামনায় সতীর্থ থেকে রাজনৈতিক মহল সহ বাংলার সাধারণ মানুষ। বিরোধী থেকে বাম নেতৃত্ব, রাজ্যপাল থেকে সাধারণ মানুষ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য কামনায় প্রার্থনায় গোটা বাংলা। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শারীরিক অবস্থার খবর নিতে ইতিমধ্যেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

    প্রাক্তম মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখে বাইরে বেরনোর সময় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের সহায়তায় নিয়ম মেনেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে তিনি দেখতে পেয়েছেন। একইসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশমন্ত্রীর সুস্থতার প্রার্থনা করে বিরোধী দলনেতা বলেন, 'যারা আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করি, তাঁরা ভগবানের কাছে প্রার্থনা করব যাতে উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। এছাড়া এরকম এমন সৎ একজন রাজনীতিবিদ যাকে গোটা পশ্চিমবঙ্গ, জনমত নির্বিশেষে মানুষের শ্রদ্ধার ব্যক্তি উনি। যেনও শীঘ্র সুস্থ হয়ে উনি নিজের বাড়ি ফিরে যেতে পারেন। চিকিৎসকদের সঙ্গেও আলাদা করে কথা বলেছি। চিকিৎসকেরা ২৪x৭ তাঁকে নজরদারিতে রেখেছেন। চেষ্টা চলছে।'

    এখানেই শেষ নয়, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রশংসায় তিনি বলেন, 'আমি ওঁর সময়ে বিধায়ক ছিলাম। ওঁর মতো সৎ রাজনীতিবিদ বিরল। একের বদলে দুই হবে কিনা সন্দেহ।' সেসময় পূর্বের সমীকরণের কথা তুলে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে

    শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'আজ ওসব কথা থাক।' শনিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্বাস্থ্যের অবনতি হয়। দুপুরে খাওয়ার পর হুহু করে নেমে যেতে থাকে অক্সিজেন। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ৬৮ হয়ে গেলে আর কোনও ঝুঁকি নেননি চিকিৎসকেরা। তড়িঘড়ি গ্রিন করিডর করে আনা হয় আলিপুরের বেসরকারি হাসপাতালে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বাম নেতার অসুস্থতার খবরে রাজ্য রাজনীতিতে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে সতীর্থ থেকে বিরোধী হাসপাতালে বাম নেতাকে দেখতে ছুটে যান সকলে। রবিবার দুপুরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে দেখতে যান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক সৌহার্দ্যের এমন নজির এভাবে দেখা যায়নি।

    রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরুদ্ধ রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে কোনওদিনই সৌজন্যের এমন আদানপ্রদানের দেখা এর আগে মেলেনি। নন্দীগ্রামের ঘটনা শুভেন্দু অধিকারী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, তিনজনেরই রাজনৈতিক কেরিয়ারের একটা মাইলস্টোন। নন্দীগ্রামের ঘটনা ও রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে এযাবৎকাল রাজনীতির দুই ভিন্ন মেরুতেই অবস্থান করেছেন শুভেন্দু অধিকারী ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

    প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা ভোটের আগে নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালে ১৪ মার্চ ১৪ জনের গুলিতে মৃত্যুর কথা তুলে, নাম না করে 'বাপ-ব্যাটা' বলে শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তৃণমূল সু্প্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৎকালীন বাম সরকারের বদলে নন্দীগ্রামের পুরো গণ্ডগোলের দায় চাপিয়ে দেন, তাঁর সেসময়ের সতীর্থ শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে । বলেন, তাদের চক্রান্তে সেদিন এমন ঘটনা ঘটেছিল। ঘটনার ১৪ বছর পরে এমন মন্তব্য শুনে ২০০৪ সালের তৎকালীন বাম মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কারও নাম না করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে লেখেন, 'নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুরে এখন শ্মশানের নীরবতা। সে সময়ের কুটিল চিত্রনাট্যের চক্রান্তকারীরা আজ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করছে। এর মাঝে কর্মসংস্থানের সুযোগ হারিয়েছে বাংলার যুব সমাজ।'
  • Link to this news (এই সময়)