• 'তোর লাস্ট চান্স...হাড়গোড় এক করে দেব', দলের নেতাকেই ধমক তৃণমূল বিধায়কের
    এই সময় | ৩১ জুলাই ২০২৩
  • ভোট মেটার পর এলাকার কয়েকজনকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী তথা তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়ে এলাকায় গিয়ে ওই তৃণমূল নেতারই 'হাড়গোড় এক করে দেওয়া'র হুঁশিয়ারি দিলেন দলের বিধায়ক। ঘটনাস্থল হুগলির চুঁচুড়ার কোদালিয়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের রবীন্দ্রনগর কালীতলা এলাকা। সেখানেই অভিযুক্ত দলীয় নেতাকে গিয়ে 'দাওয়াই' দিলেন তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমজার।

    নেতাকে 'কড়া দাওয়াই' বিধায়কের জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় গ্রাম সভায় জয়ী হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণা মণ্ডল। তাঁর স্বামী আধার মণ্ডলের বিরুদ্ধে কালীতলার সাতটি পরিবারকে ভোটের পর হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই পরিবারগুলি তৃণমূলকে ভোট না দেওয়ায় জন্য আধার মণ্ডল তাদের দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। এরপরেই সেই পরিবারগুলো চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের বাড়িতে গিয়ে আধারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। অভিযোগ পেয়ে আজ কালীতলা এলাকায় যান বিধায়ক। সেখানে অভিযোগকারী পরিবারগুলি ও আধার মণ্ডলকে ডেকে কী হয়েছিল জানতে চান। স্থানীয়রা আধারের সামনেই বিধায়ককে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। সবকিছু শুনে রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠেন অসিত মজুমদার। অভিযোগকারীদের সামনেই রীতিমতো ধমক দেন আধার মণ্ডলকে। আধারকে বিধায়ক বলেন, 'তুই কেন চমকাবি? তুই বাইরে থাকবি না ভিতরে যাবি?' এক সময় স্থানীয় থানার আইসি-কে ফোন করতেও উদ্যত হন বিধায়ক। আধারকে অসিতবাবু সাফ বলেন, 'এই তোর লাস্ট চান্স, তুই যদি একটা লোককে চমকাস, তোর হাড়গোড় আমি এক করে দেব! কেন চমকেছিস? কোনও অধিকার নেই।'

    এই প্রসঙ্গে পরে সংবাদমাধ্য়মকে বিধায়ক বলেন, 'তৃণমূলের নামে কেউ চমকালে, সে যত বড়ই নেতা হোক, আমি ছাড়ব না। তৃণমূল মানুষের দল, মানুষকে চমকাবে, এটা হয় না। পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামীর নামে অভিযোগ, আমার বাড়িতে লোক গেছে, কেন যাবে? আমি নিজে এসেছি, যার নামে অভিযোগ সে ভুল স্বীকার করেছে, ভবিষ্যতে করবে না বলেছে। তৃণমূল করে অত্যাচার করবে, তার রেহাই নেই। আবার সিপিএম-বিজেপি বা অন্য দল যদি অত্যাচার করে, আইন আছে, আইন ব্যবস্থা নেবে। এটা তো অন্যায়, ভোট না দিতেই পারে, আমাকেও তো বহু লোক ভোট দেয়নি। সব লোক ভোট দেবে, এর কোনও ঠিক আছে না কি! যারা যে দলকে ভালবাসে, সেই দলকে ভোট দেবে। এ তো গণতান্ত্রিক অধিকার। বিজেপি চমকালেও আমি প্রতিবাদ করব, সিপিএম চমকালেও আমি প্রতিবাদ করব, আবার আমার দলের কেউ চমকালেও আমি প্রতিবাদ করব, কারণ আমি মানুষের এমএলএ।'

    পালটা কটাক্ষ বিজেপির যদিও এই ঘটনায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির। বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, 'চুঁচুড়ায় সব থেক বড় যদি চমকাইবাজ নেতা কেউ হয়ে থাকে, সেটা হচ্ছে বিধায়ক। যে দলের গোড়ায় এই রকম গলদ হয়ে রয়েছে, সেই দলের শাখাপ্রশাখা তো এই রকমই হবে। এটাই এই দলের সংস্কৃতি।'
  • Link to this news (এই সময়)