• নীলাভ বাদামি রঙের অপূর্ব সুন্দর গ্রহের ছবি পোস্ট করল নাসা, জানেন কী এটি?
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • দীর্ঘদিন ধরেই মহাকাশচর্চায় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে নাসা (NASA)। এই সংস্থাটির নতুন নতুন অভিযানের ফলে প্রতিনিয়ত সামনে আসে মহাজগতের নানান আশ্চর্যকর বিষয়। তেমনই একটি মনমুগ্ধকর এবং আশ্চর্য ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছে নাসা। সেই ছবিটিতে বুধকে নীল ও বাদামি রঙের গোলকের মত দেখাচ্ছে। বুধকে খুব কাছ থেকে জানার জন্য নাসা প্রথম বুধে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল। সেই মহাকাশ যানটি পাঠিয়েছে এই আশ্চর্য জনক ছবিটি। সূর্যের সবচেয়ে কাছে থাকার জন্য বুধে কোনও স্যাটেলাইট পাঠানো খুব কঠিন একটি কাজ। সূর্যের থেকে দূরত্ব কম হওয়ার কারণে বুধের পরিক্রমণ গতি অন্যান্য গ্রহদের থেকে অনেকটাই বেশি। এছাড়া গ্রহটিতে রয়েছে উত্তাপ জনিত সমস্যা।

     

    সূর্যকে একবার পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন, সেখানে বুধের সময় লাগে মাত্র ৮৮ দিন। যা প্রমাণ দেয় যে বুধের গতি অনেকটাই বেশি। এই গতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোনও স্যাটেলাইটকে বুধের কক্ষপথে প্রবেশ করানো অত্যন্ত কঠিন বিষয়। তবে নাসা এই অসাধ্যকে সাধন করে, আজ আমাদের সামনে তুলে ধরেছে বুধের অভূতপূর্ব একটি ছবি। তার সঙ্গে নাসা সংগ্রহ করছে বুধ সম্পর্কে নানান তথ্য।

    নাসা এই ছবিটি পোস্ট করার সাথে সাথে বুধের সম্পর্কে কিছু তথ্যও দিয়েছে। সংস্থাটি জানিয়েছে যে, বুধের বায়ুমণ্ডল খুবই পাতলা এবং বুধের বায়ুমন্ডলটি অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, পটাসিয়াম ও সোডিয়াম দিয়ে তৈরী। এই কারণের জন্যই বুধে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্যও অনেক বেশি। বুধে যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়ে সেখানের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৪৩০°সেলসিয়াস । অপর দিকে যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো সরাসরি পড়েনা সেখানে তাপমাত্রা থাকে প্রায় -১৮০° সেলসিয়াস। এছাড়া নাসা আরও জানিয়েছে যে, বুধের চৌম্বক ক্ষেত্র পৃথিবীর চেয়ে অনেক দুর্বল। বুধের চৌম্বক ক্ষেত্র পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের ১ শতাংশ।

    নাসা এই ছবিটি তোলে মেসেঞ্জার (messenger) মিশন থেকে। এটি বুধের কক্ষপথে প্রবেশ করা প্রথম মহাকাশযান। এটি ৩ অগষ্ট ২০০৪ সালে প্রেরণ করা হলেও এটি বুধের কক্ষপথে প্রবেশ করে ১১ মার্চ ২০১১ সালে। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এটি বুধকে প্রদক্ষিণ করেছে। এটি প্রধানত পাঠানো হয়েছিল মূলত বুধের বায়ুমণ্ডল, পরিবেশ, ভূতত্ত্ব, চৌম্বক ক্ষেত্র রাসায়নিক গঠন ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য। যদিও এর আগে নাসা মারিনের ১০ ( mariner 10) নামে একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছিল বুধের উদ্দেশ্যে, তবে সেটি বুধের মাত্র ৪৫ শতাংশ এলাকার তথ্য দিতে পেরেছিল।

    বর্তমানে জাক্সা (JAXA) ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এর মিলিত উদ্যোগে, বেপিকলম্বো ( BepiColombo) নামে একটি মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে ২০ অক্টোবর ২০১৮ সালে। এটি আনুমানিক ২০২৫ সাল পর্যন্ত বুধের ওপর অনুসন্ধান কাজ করবে। আশা করা যায় এরকম আরও আশ্চর্যজনক ও মনোমুগ্ধকর তথ্য উঠে আসবে মানব সভ্যতার কাছে। তবে বুধের ভাইরাল হওয়া ছবিটি বাস্তবের রঙের থেকে উজ্জ্বল। এটি ফলস কালার ইমেজ, যা প্রক্রিয়াকরণের পরে প্রকৃত ছবিটি পাওয়া যাবে।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)