• উন্নত পরিষেবায় হাতেকলমে প্রশিক্ষণ, IIT খড়গপুর-IIM কলকাতায় ‘পাঠ’ নতুন পঞ্চায়েত সদস্যদের
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • সুষ্ঠু নাগরিক পরিষেবা দিতে এবার হাতেকলমে প্রশিক্ষণ নেবেন পশ্চিমবঙ্গের নবনির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যরা। আইআইটি খড়গপুর এবং আইআইএম কলকাতার তরফে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে তাঁদের। সুষ্ঠু নাগরিক পরিষেবা দিতে এবং নিজেদের এলাকায় আরও ভালো কাজের পরিবেশ কীভাবে গড়ে তোলা যায় সেব্যাপারেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে নবনির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের।

    একটি প্রেস বিবৃতিকে ঊদ্ধৃত করে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক আধিকারিক বলেছেন, “১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৬৬১ জনকে (ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং কর্মীরা) বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যা এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরই পাশাপাশি ১ লক্ষ ৩৮ হাজার ৬৮০ জনকে ২০২৩-২৪ সালে পরিকল্পনা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রশিক্ষণ শীঘ্রই শুরু হবে।”

    গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদের আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের একজন সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, “আইআইএম কলকাতা এবং আইআইটি খড়গপুর এবং ইনস্টিটিউট অফ রুরাল ম্যানেজমেন্ট আনন্দের বিশেষজ্ঞদের অন বোর্ডিং বিশ্বমানের শিক্ষাদান এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির কৌশল নিয়েই প্রশিক্ষণ। যাতে অফিস পরিচালনা, সমন্বয় এবং ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের মতো নতুন ধারণাগুলি চালু করা যায়। এর জেরে জনপ্রতিনিধিরা গ্রামীণ স্থানীয় শাসন, যোগাযোগ, দলগত কাজ, সময় ব্যবস্থাপনা, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের কাজে সুবিধা পাবেন।”

    প্রশাসনিক এক আধিকারিক এবিষয়ে বলেছেন, “এই প্রক্রিয়ায় আমাদের ২০টি জেলা পরিষদের (এক ব্যাচে মোট ৪২ জন অংশগ্রহণকারী) সভাধিপতি এবং সহকারি সভাধিপতিদের জন্য একটি আবাসিক প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের জন্য আইআইএম কলকাতাকে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। আইআইএম জোকাতে চার দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবির হবে। আইআইএম সম্প্রতি তাদের ইনকিউবেটর প্রোগ্রামের অধীনে মহিলাদের নেতৃত্বাধীন স্ব-সহায়তা গোষ্ঠীগুলির একটি সফল প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে। ওঁদের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাকাল্টি সদস্যরা রয়েছেন যাঁরা স্থানীয় স্ব-শাসনে বিশেষজ্ঞ এবং গ্রামীণ উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণ এবং জনসাধারণের উন্নতির বিষয়ে বিভিন্ন সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করে।”

    প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “এই প্রোগ্রামে আইআইটি খড়গপুরের গ্রামীণ উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনী এবং স্থায়ী প্রযুক্তি কেন্দ্র প্রশিক্ষণ দেবে। কল্যাণীর বিআর আম্বেদকর ইনস্টিটিউটে সাতটি ব্যাচে পঞ্চায়েত সমিতির ৩৪৫ জন সভাপতিদের জন্য ৩ দিনের একটি আবাসিক প্রশিক্ষণ শিবির হবে।”

    পঞ্চায়েত এবং গ্রামীণ উন্নয়নের প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সমিতির দ্বারা জেলা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিতে বাকি পঞ্চায়েত কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। IRMA, কেরালা ইনস্টিটিউট অফ লোকাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ রুরাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড পঞ্চায়েতি রাজ-এর সঙ্গে পরামর্শ করে প্রশিক্ষণের মডিউলগুলি তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩-২৪ সালে ৩,২৫,৩৪১ জন ট্রেনির জন্য রাজ্য, জেলা এবং ব্লক স্তরে পাঁচটি বিভাগের অধীনে ৫১টি প্রশিক্ষণ শিবির হবে।

    এদিকে, রাজ্যের এই উদ্যোগের সমালোচনায় সরব বিজেপি। রাজ্যে দলের মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই উদ্যোগের সমালোচনা করে বলেছেন, ”পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় প্রথমে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা উচিত। শাসক দলকে প্রথমে বিরোধী প্রার্থীদের উপর সন্ত্রাস চালানো বন্ধ করতে হবে। তাঁদের আগে গণতন্ত্র নিয়ে চর্চা করা উচিত। তবেই পঞ্চায়েতগুলি মানুষকে সর্বোত্তম পরিষেবা দিতে পারবে।”
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)