পুরুলিয়ার ডাকাতিতে 'টিম লিডার'-সহ গ্রেপ্তার আরও ৩, মাস্টারমাইন্ড সম্পর্কেও মিলেছে তথ্য
প্রতিদিন | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরুলিয়া (Purulia) শহরে নামী স্বর্ণবিপণিতে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও তিনজন। ঝাড়খণ্ড থেকে ধৃতদের তিনজনের মধ্যে একজন ডাকাতির ঘটনায় টিম লিডার বলে জানা গিয়েছে। তার কাছ থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল ও মোবাইল পেয়েছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে সোনা ও হিরের অলঙ্কার, নগদ ৩৬ লক্ষ টাকা-সহ প্রায় কোটি টাকা। এসব পুরুলিয়ার ওই দোকানে খোয়া যাওয়া গয়না বলেই প্রাথমিক অনুমান। তবে এই গয়না সংক্রান্ত তথ্য জানিয়ে বিভিন্ন স্বর্ণবিপণিকে চিঠি লিখতে চলেছে পুলিশ। যাতে তারাও নিজেদের চুরি হওয়া গয়না সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকতে পারে। এদের পুরুলিয়া আদালতে পেশ করে ১৪ দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। গোটা ঘটনার মাস্টারমাইন্ড সম্পর্কে সমস্ত তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি এই তদন্তে গঠিত সিটের। খুব দ্রুতই তাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চলেছে পুলিশ।
গত ২৯ আগস্ট দিনেদুপুরে পুরুলিয়ার নামোপাড়ায় নামী স্বর্ণবিপণিতে বড়সড় ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তদন্তের জন্য জেলা পুলিশের তরফে গঠিত হয় সিট (SIT)। ৫ সেপ্টেম্বের নয়ডা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় একজনকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৮ সেপ্টেম্বর ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) সুদামডি থেকে এই ডাকাতির কিংপিন করণজিৎ সিং সিধুকে গ্রেপ্তার করে সিট। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলে। গোপন সূত্রে পুলিশের কাছে খবর আসে, এই ঘটনার অন্যতম 'লিডার' ওমপ্রকাশ প্রসাদ ওরফে গুড্ডু পুরুলিয়া লাগোয়া ঝাড়খণ্ড সীমানায় রয়েছে। সেখানে তার গতিবিধি সম্পর্কে খবর পেয়ে ট্র্যাক করা হয়। শনিবার সিট তাকে গ্রেপ্তার করে। পাশাপাশি আরও দুজন ' ডব্লু কুমার সিং ও অজয় যাদবও গ্রেপ্তার হয়।
সোমবার বেলগুমা পুলিশ লাইনে তাদের তিনজনকে এবং তাদের থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র পেশ করে জেলা পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত ওমপ্রকাশের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের ধানবাদ জেলার ভাওড়া গ্রামে। তবে বর্তমানে সে বিহারের নালন্দা জেলার বিহার (Bihar) শরিফের বাসিন্দা। গ্রেপ্তার হওয়া ডব্লু কুমার সিংয়ের বাড়ি ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগের চৌপান থানার সিগমা গ্রামে। আর অজয় যাদবের বাড়ি চাতরা জেলা ইটোকুড়ি থানার পিটিজ গ্রামে। শনিবার ওমপ্রকাশকে গ্রেপ্তারির পর পুলিশ তার গাড়ি থেকে উদ্ধার করে মাদক। জানা যায়, পুরুলিয়া শহরে তার ডেরা আছে। সেইমতো তার থেকে ডেরার চাবি নিয়ে খোঁজ শুরু করে পুলিশ। একটি হোটেলে হানা দিয়ে প্রচুর সোনা ও হিরের গয়না পাওয়া যায়। সেসব পুরুলিয়ার ওই দোকানে খোয়া যাওয়া গয়নাই কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
সোমবার পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার (SP) অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, 'আমরা আগেই খবর পেয়েছিলাম যে এই ঘটনার মূল লিডার বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমানায় আছে। তাকে গ্রেপ্তার করে মোবাইল উদ্ধার হয়, সেটি ডাকাতির সময় ব্যবহার করা হয়েছিল। এরা গোটা অপারেশন নতুন মোবাইল, নতুন সিম ব্যবহার করে। মাস্টারমাইন্ড এখনও জেলে আছে। তার সম্পর্কে সমস্ত তথ্য হাতে এসেছে।' আরও জানা গিয়েছে, জেলবন্দি মাস্টারমাইন্ডের সঙ্গে ধৃত টিম লিডারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। এরা আসলে কুখ্যাত অপরাধী গ্যাং। যারা গোটা দেশের সোনার দোকানে ডাকাতি, রেল সিন্ডিকেটের মতো বড় বড় অপরাধের সঙ্গে জড়িত। এদের সমস্ত বিভাগের জন্য আলাদা আলাদা লোক রয়েছে। কে পাচার করবে, কোথায় পাচার হবে, আইটি বিভাগ, ডেরার ব্যবস্থা করা ' এই সব আলাদাভাবে একেকটি টিমের দায়িত্ব।