• Rahul Gandhi : কেন ঠাকুমা-বাবার উলটো পথে রাহুল, চর্চা দলের অন্তরেও
    এই সময় | ০৯ অক্টোবর ২০২৩
  • সেটা ছিল ১৯৯০-এর ৬ সেপ্টেম্বর৷ লোকসভায় দাঁড়িয়ে মণ্ডল কমিশনের রিপোর্ট এবং জাতভিত্তিক জনগণনা নিয়ে বক্তব্য পেশ করতে গিয়ে তত্‍কালীন বিরোধী দলনেতা রাজীব গান্ধী বলেছিলেন, কংগ্রেস জাতপাতের ভিত্তিতে জনগণনার পক্ষপাতী নয়৷ প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, মা ইন্দিরা গান্ধীর বক্তব্য তুলে ধরে রাজীব সেদিন বলেছিলেন, ‘আটের দশকের গোড়ায় ইন্দিরা গান্ধী বলেছিলেন, না জাত পর, না পাত পর রাজনীতি করনি হ্যায়।’এর পরেই তত্‍কালীন প্রধানমন্ত্রী বিশ্বনাথপ্রতাপ সিংকে আক্রমণ করে রাজীবের অভিযোগ ছিল, ‘দেশের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত, জাতপাত-মুক্ত সমাজ গড়ে তোলা, অনগ্রসর শ্রেণির প্রতিনিধিদের সার্বিক উন্নতি ঘটানো৷ এই লক্ষ্যে কংগ্রেস সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত৷’ রাজীব গান্ধীর সেদিনের বক্তব্য নিয়ে সংসদে প্রবল আলোড়ন দেখা গিয়েছিল৷এর তিন দশক পরে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারকে চাপে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে যখন রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস হাইকম্যান্ড জাতভিত্তিক জনগণনার পক্ষে জোরালো সওয়াল করতে শুরু করেছেন, সেই সময়ে কংগ্রেসের ভিতরেও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইন্দিরা ও রাজীবের ঘোষিত অবস্থানের সঙ্গে কংগ্রেসের বর্তমান প্রজন্মের আদর্শগত ফারাক নিয়ে৷ প্রশ্ন উঠছে, রাহুলের বাবা-ঠাকুমা যেভাবে জাতভিত্তিক জনগণনার বিরুদ্ধে সওয়াল করেছিলেন এবং গোটা দেশকে জাতপাতের বাঁধন থেকে মুক্ত করে পিছিয়ে থাকা শ্রেণির সার্বিক উন্নতির জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন, তারপরেও কেন কংগ্রেস রাহুল, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে-সহ কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতৃত্ব কাস্ট সেন্সাসের জন্য বারবার দাবি জানাচ্ছেন?কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশের ধারণা, দেশের দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা এবং রাজীব গান্ধীর সঙ্গে রাহুল-খাড়গের অবস্থানগত ফারাক তুলে ধরে ২০২৪-এর আগে ভোট রাজনীতিতে বিজেপি ইস্যু করতে পারে, সেই আশঙ্কাও থাকছে প্রবল ভাবে৷ উলটোদিকে কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের যুক্তি, জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি থেকে সরে এলেই বিজেপিকে সুযোগ দেওয়া হবে। কারণ, সেক্ষেত্রে বিজেপি কংগ্রেসকে অনগ্রসর শ্রেণিবিরোধী বলে প্রচার করতে পারে৷তাছাড়া বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের একটা অংশ সরাসরি জাতভিত্তিক জনগণনার পক্ষে এবং মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের তাস খেলে বিজেপি যেখানে ফায়দা তোলার চেষ্টা করবে--সেখানে জাতভিত্তিক জনগণনার দাবি থেকে সরে আসা সম্ভব নয় বলে মত হাইকম্যান্ডের বড় অংশের। এই পরিস্থিতিতে শেষ পর্যন্ত জাতভিত্তিক জনগণনা ইস্যুতে কংগ্রেসের ভিতরে আড়াআড়ি বিভাজন তৈরি হবে কি না, সেদিকে কড়া নজর রাখছে রাজনৈতিক মহলও৷গোটা ইস্যুটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর বুঝে সাবধানী পদক্ষেপ করছে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের অন্যান্য দলের প্রতিনিধিরাও৷ এই মর্মে নিজের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিরোধী শিবিরের এক বর্ষীয়ান সাংসদ বলেন, ‘জাতপাত ভিত্তিক জনগণনা অত্যন্ত জটিল ও স্পর্শকাতর বিষয়৷ এর সঙ্গে দেশের ভবিষ্যতের প্রশ্ন জড়িত আছে৷ এই মর্মে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে শাসক-বিরোধী সবাই একমঞ্চে হাজির হওয়া প্রয়োজন৷’https://whatsapp.com/channel/0029Va9zh58Gk1Fko2WtDl1A
  • Link to this news (এই সময়)