• শ্রমজগতে মহিলাদের নিয়ে গবেষণা, অর্থনীতিতে নোবেল ক্লডিয়া গোল্ডিনকে
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৩
  • স্টকহোম:  একই কাজ। কিন্তু ফারাক বেতনে। বিশ্বজুড়েই এই ধরনের বৈষম্য। বিভিন্ন পেশায় নারী ও পুরুষের এই বৈষম্য নিয়ে নতুন তথ্য অনুসন্ধানের স্বীকৃতি মিলল। অর্থনীতিতে এবারের নোবেল পুরস্কার জিতলেন ক্লডিয়া গোল্ডিন। শ্রমবাজারে নারীশক্তির ভূমিকা নিয়ে গবেষণার জন্য এই মার্কিন অর্থনীতিবিদকে সোমবার বেছে নিল রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস। তৃতীয় মহিলা হিসেবে অর্থনীতিতে বিশ্বের সর্বোচ্চ এই পুরস্কার পেলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৭ বছরের অধ্যাপিকা। পুরস্কার কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকোব সভেনশন  বলেছেন, ‘শ্রম বাজারে মহিলাদের ভূমিকা সমাজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্লডিয়া গোল্ডিনের যুগান্তকারী গবেষণা এই বিষয়টির উপর আলোকপাত করেছে।’ ২০২৩ সালের অর্থনীতিতে পুরস্কার পাওয়ার খবরে প্রতিক্রিয়ায় ক্লডিয়া বলেছেন, ‘আমি বিস্মিত। একইসঙ্গে আনন্দিতও।’ 

    নোবেল কমিটি জানিয়েছে, ক্লডিয়া বিভিন্ন পেশায় লিঙ্গবৈষম্যের গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলি চিহ্নিত করেছেন। শ্রমবাজারে মহিলাদের ঐতিহাসিক ও সাম্প্রতিক ভূমিকা সম্পর্কে ক্লডিয়ার গবেষণা একেবারে নতুন ও বিস্ময়কর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে। উচ্চ-আয়ের দেশগুলিতে গত এক শতাব্দীতে কর্মজগতে মহিলাদের অনুপাত তিনগুণ বেড়েছে। কিন্তু এমন বড়সড় সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন সত্ত্বেও বৈষম্য রয়েই গিয়েছে। বিয়ে, মাতৃত্ব ও পরিবারের দায়দায়িত্বের কারণে মহিলাদের হাতে বিকল্প একেবারেই থাকে না বললেই  চলে। কাজেই বৈষম্যের নিগড় ভেঙে ফেলার ক্ষেত্রে তাঁদের কাছে তেমন সুযোগ থাকে না।

    কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণের ২০০ বছরের ইতিহাস সমীক্ষা করেছেন ক্লডিয়া। তিনি দেখিয়েছেন, আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে মহিলাদের পারিশ্রমিক কিন্তু পুরুষদের সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি। পুরুষদের তুলনায় শিক্ষাদীক্ষা বেশি হওয়া সত্ত্বেও বৈষম্য ঘোচেনি। তাঁর গবেষণা দেখিয়েছে. কাজের ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ সবকালে সমান হয়নি। গত দুই শতকে তার ওঠাপড়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। রেখচিত্রে তা অনেকটা ইংরেজি ‘ইউ’ অক্ষরের আকারে এগিয়েছে। বিংশ শতকের গোড়ায় কৃষি থেকে শিল্পভিত্তিক সমাজে রূপান্তরের সময় কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ কমে গিয়েছিল। কিন্তু একবিংশ শতকের গোড়ায় পরিষেবা ক্ষেত্রের উত্থানের হাত ধরে তা ফের ঘুরে দাঁড়ায়।

    নোবেল কমিটির এক সদস্য অর্থনীতিবিদ র‌্যান্ডি হজালমারসোন বলেছেন, ক্লডিয়ার গবেষণা সমাধানের রাস্তা বাতলে দেয়নি। তবে তা নীতিনির্ধারকদের এই সমস্যা সমাধানের দিশা দেখিয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)