• ‘একজনও যোগ্য হলে টাকা আটকানো যায় না’, কেন্দ্রের রিপোর্টে ক্ষুব্ধ হাইকোর্টের তোপ
    বর্তমান | ১০ অক্টোবর ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাংলাকে বঞ্চনার প্রশ্নে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুধু তাই নয়, এ বিষয়ে কেন্দ্রের তরফে আদালতে যে রিপোর্ট জমা পড়েছে, সেটিকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘একজনও যোগ্য হলে তাঁর টাকা এভাবে আটকে রাখা যায় না।’ 

    ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে এই প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গকে কোনও অর্থ বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। তাদের যুক্তি, রাজ্যে এই প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তাই ২০২২ সালের ৯ মার্চ রীতিমতো নির্দেশ জারি করে বরাদ্দ বন্ধ করা হয়েছে। সেই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ খেতমজুর সমিতি নামে এক সংগঠন। টাকা কেন আটকে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে কেন্দ্রের জবাব তলব করেছিল প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ। তখন কেন্দ্রের তরফে হাইকোর্টে বলা হয়, ২০২২ সালের ৯ মার্চের আগে পর্যন্ত এই প্রকল্পে যে টাকা বকেয়া আছে, তা মিটিয়ে দিতে তাদের কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু সোমবার তারা যে হলফনামা জমা করে, সেখানে সেই দুর্নীতির কথা বলে ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসের বকেয়াও মেটাতে অস্বীকার করে কেন্দ্র। এই কথা জানার পরই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ডিভিশন বেঞ্চ। এজলাসে উপস্থিত কেন্দ্রের ডেপুটি সলিসিটর জেনারেলের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘কেন্দ্রের এই রিপোর্ট অস্পষ্ট। সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আদালত এই রিপোর্ট গ্রহণ করবে না। প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরও আপনারা কীভাবে এটা বলতে পারেন?’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বলছেন দুর্নীতি হয়েছে। তাহলে তদন্ত করুন। প্রয়োজনে সিবিআই ডাকুন। কিন্তু গরিব, নিরপরাধ মানুষকে এভাবে প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করবেন না। একজনও যোগ্য হয়ে থাকলে টাকা আটকে রাখা যায় না। যাঁরা কাজ করেছেন, তাঁরা টাকা পাবেন না—এটা হতে পারে না।’ ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল পাল্টা কিছু বলার চেষ্টা করলেও আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, যাঁরা প্রকৃত জব কার্ড হোল্ডার এবং শ্রম দেওয়ার পরও টাকা পাননি, তাদের খুঁজে প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব কেন্দ্র এড়িয়ে যেতে পারে না। আজ, মঙ্গলবার ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে।  
  • Link to this news (বর্তমান)