• দুই রাজ্যের প্রার্থী তালিকা নিয়ে ক্ষোভ বিজেপিতে
    আনন্দবাজার | ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • মধ্যপ্রদেশ হোক বা রাজস্থান— প্রার্থী তালিকা নিয়ে ওই দুই রাজ্য বিজেপিতে অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে।

    বসুন্ধরা রাজে— রাজস্থানের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী। গত কাল দলের প্রথম প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরে টিকিট প্রাপকদের অভিনন্দন জানিয়ে দায় সেরেছেন তিনি। এ যাত্রায় নিজে তো বটেই, তাঁর অধিকাংশ অনুগামীদের টিকিট জোটেনি। অভিযোগ, তার পর থেকেই বসুন্ধরা বেশি ব্যস্ত তাঁর ঘনিষ্ঠ টিকিট না পাওয়া অনুগামীদের সঙ্গে বৈঠকে।

    মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহানের জায়গা হয়েছে চতুর্থ তালিকায়। তিনি আবার নির্বাচনী প্রচার ছেড়ে পরিবার নিয়ে হৃষীকেশে ‘নিজের সঙ্গে’ সময় কাটাচ্ছেন তিনি। ভোট ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুই রাজ্যের দুই শীর্ষ নেতানেত্রীর মনোভাবে অস্বস্তিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাঁরা মরুরাজ্যে ক্ষোভ সামলাতে রাতে একটি কমিটি গড়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়ালের কথায়, ‘‘ড্যামেজ কন্ট্রোল করতেই কমিটি গড়া হয়েছে।’’

    গত কাল প্রাক্-নির্বাচনী সমীক্ষায় পাঁচ রাজ্যেই হারের সম্ভাবনায় ম্রিয়মান দলীয় কর্মীরা। কেন্দ্রীয় দফতরে উপস্থিত এক নেতার কথায়, ‘‘কর্নাটকের হার দলের আত্মবিশ্বাস টলিয়ে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে সামনে রেখে রাজ্য জয় করা যাচ্ছে না তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে হিমাচল প্রদেশ, কর্নাটকের মতো রাজ্যগুলিতে। সঙ্গে যোগ হয়েছে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব।’’

    গত কাল রাজস্থানের যে ৪১টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়। সূত্রের মতে, তার একটিতেও বসুন্ধরার কোনও ঘনিষ্ঠ টিকিট পাননি। জয়পুরের বিদ্যাধর নগর আসন থেকে পাঁচ বারের বিধায়ক নরপত সিংহের বদলে সাংসদ দিয়া কুমারীকে প্রার্থী করা হয়েছে। তার পরেই বসুন্ধরার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন নরপত। সূত্রের খবর, দিয়াকে দলে বসুন্ধরার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে তুলে ধরার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

    জোটওয়াড়া থেকে সাংসদ রাজ্যবর্ধন রাঠৌরকে টিকিট দেওয়ায় বাদ পড়েছেন রাজপাল সিংহ শেখওয়াতের। বসুন্ধরা ঘনিষ্ঠ রাজপালের হুঙ্কার, প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী হিসাবে লড়তে পিছপা হবেন না তিনি। তিজারা থেকে সাংসদ বাবা বালকনাথকে প্রার্থী করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় বিজেপি সমর্থেকরা। নাগর কেন্দ্রে টিকিট না পেয়ে অনিতা সিংহের সমর্থকেরা আজ জয়পুরে বিজেপি দফতরের দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান।

    বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশঙ্কা, যত তালিকা বার হবে তত বিক্ষুব্ধের সংখ্যা বাড়বে। তাই বিক্ষুব্ধদের মানভঞ্জনে কমিটি গড়েছে বিজেপি। প্রথম তালিকায় স্থান হয়নি বসুন্ধরার। একমাত্র আশা, তাঁর কেন্দ্র ঝালারপাটন থেকে এখনও কোনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি দল।

    চতুর্থ তালিকায় স্থান পাওয়া শিবরাজ আজ প্রচারে নামার পরিবর্তে পরিবার নিয়ে হৃষীকেশ গিয়েছেন। স্বভাবতই ভোটের ময়দান ছেড়ে গঙ্গা পারে ‘শান্তি’ খুঁজতে যাওয়া তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন অনেকে। শিবরাজ ঘনিষ্ঠদের মতে, দল যে ভাবে তাঁকে এক ঘরে করার বার্তা দিয়েছে তাতে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। তিনি কেবল নিজের আসনেই মন দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন। শিবরাজ যদি এ ভাবে বসে যান, সে ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখা যে কঠিন তা বিলক্ষণ জানেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই গত কাল যে ৫৭ জনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে অধিকাংশ শিবরাজ ঘনিষ্ঠ। কিন্তু তাতেও ‘মামা’র মানভঞ্জন হল কি না, সন্দেহ রয়েছে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)