• বরানগরের দত্ত বাড়িতে ২৫০ বছরের পুজো 
    আজকাল | ১৯ অক্টোবর ২০২৩
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বরানগরের দত্ত পরিবারের শিবদুর্গা পুজো পা রাখল ২৫০ বছরে।

    চিরাচরিত রূপে অসুরের বুকে ত্রিশুল বিঁধে দেন না এই বাড়ির মহামায়া। শিবের কোলে বসে সপরিবারে তাঁর আগমন হয় প্রতি বছর মহা সাড়ম্বরে। হুগলি জেলার আদি সপ্তগ্রাম থেকে ব্যবসার প্রয়োজনে বরানগর আসেন পরশুরাম দত্ত মহাশয়। তাঁর দ্বিতীয় পুরুষ শুকদেব দত্ত এই পুজো শুরু করেন ১৭৭৪ সালে।  তাঁর উত্তরপুরুষেরা যৌথ ভাবে এই পূজা বজায় রেখেছেন আজও। পুজো প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন কে একাধিক অজানা কথা জানালেন অসিতবরণ দত্ত। অতীতে বাড়ির ঠাকুর দালানে মায়ের মূর্তি তৈরি হত।  বর্তমানে কুমোরটুলি অথবা আঞ্চলিক কুমোররাই তৈরি করেন এই বাড়ির মূর্তি।  অসিতবরণের কথায়, 'আমাদের বাড়ির প্রতিমা দশভুজা অসুরদলনী মাতৃমূর্তি নয়। শান্ত কন্যারূপিণী। দ্বিভুজা । মহাদেবের কোলে উপবিষ্টা। এবং মহাদেব নন্দীর পিঠে চেপে তাঁদের পুত্র কন্যাদের নিয়ে হাজির। শুধু নন্দীর পায়ের কাছে রাখা একটি মহিষ মুণ্ড। সঙ্গে জয়া বিজয়া।'  এই বাড়ির পুজোয়  মায়ের চৌকিতে অলংকারের আল্পনা দেওয়ার রীতি রয়েছে। মহালয়ার পরদিন প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় বোধন। তখন গৃহদেবতা মধুসূদন জীউকে সাক্ষী রেখে  ঘটে পূজার সব অনুষ্ঠানই সম্পন্ন হয়। মহাসপ্তমীতে কলা বৌ স্নান, মহাষ্টমীর দিন সন্ধি পূজা ও পরদিন কুমারী পূজার অনুষ্ঠান করা হয় জাঁকজমক করে। পুজোর ভোগে থাকে  ঘিয়ে ভাজা লুচি, সাদা আলুর তরকারি, সুজির হালুয়া আর দুধ। আগে মহাষ্টমীর দিন শিশু মহিষ বলি দেওয়ার প্রথা ছিল।  একবার বলির দিন মহিষটি ভয় পেয়ে ঠাকুরদালানে উঠে মায়ের প্রতিমার পিছনে আশ্রয় নেয়।  সেই থেকে বন্ধ বলি প্ৰথা । অষ্টমীর দিন  ধুনো পোড়ানো হয়। এটি পঞ্চতপা ব্রতের গৃহী সংস্করণ।  ঠাকুমা, জেঠিমারা লালপেড়ে শাড়ি পরে অংশ নেন তাতে। বিজয়া দশমীর দিন সকালের পুজোর পর পরিবারের মহিলা সদস্যরা প্রতিমাকে ঘিরে বেড়া অঞ্জলি দেন। আর ছোটরা বেল পাতার ওপর লাল চন্দন দিয়ে "শ্রীশ্রী দুর্গা সহায়" লিখে ঘটের ওপর রাখে। বিকেলে পরিবারের পুরুষরা কাঁধে করে প্রতিমা বিসর্জনের ব্যবস্থা করেন ।
  • Link to this news (আজকাল)