• জঙ্গলমহল শালবনিকে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে 'ওয়ার্ল্ড অন হুইলস', কম্পিউটার থেকে মোমবাতি তৈরির প্রশিক্ষণ এক জায়গাতেই
    এই সময় | ১০ নভেম্বর ২০২৩
  • অত্যাধুনিক এক ভ্রাম্যমান বাস। পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে- "ওয়ার্ল্ড অন হুইলস" । বাংলা করলে দাঁড়ায় 'চাকার উপর দুনিয়া'। কি নেই তাতে! সোলার সিস্টেমের মাধ্যমে ইলেকট্রিক, ১৫টি কম্পিউটার, ইন্টারনেট (কিংবা, ওয়াইফাই ব্যবস্থা), সুবিশাল টিভি বা ডিজিটাল স্ক্রিন- এয়ার কন্ডিশনড বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই ভ্রাম্যমান বাস সত্যিই যেন এক 'ছোট্ট দুনিয়া'। একজন কম্পিউটার শিক্ষকের মাধ্যমে গত ২ বছর ধরে এই বাসে এলাকার শত শত পড়ুয়াকে বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার কোর্স করানোর উদ্যোগ নিয়েছে ডালমিয়া সিমেন্ট ভারত লিমিটেড। বুধবার ছোট্ট এক বিজয়া সম্মিলনী ও সাংবাদিক বৈঠকের মাধ্যমে এলাকার জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নে নিজেদের ধারাবাহিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তুলে ধরতে গিয়ে এই বাসও স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ।এই বাসকে ঘিরেই উন্নয়নের স্বপ্ন দেখছে এলাকার ভবিষ্যত প্রজন্ম। বুধবার দুপুরেও গোদাপিয়াশাল সংলগ্ন একটি ছোট্ট গ্রামের ১৫ জন কিশোর-কিশোরী বাসের মধ্যে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন সংস্থা কর্তৃক নিযুক্ত এক কম্পিউটার শিক্ষক। এই উদ্যোগ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ জানান, '২০১৯ সালের শেষদিকে এই কার অন হুইলসের উদ্বোধন হয়েছিল। কিন্তু, তার তিন-চার মাস পরেই কোভিড এসে যাওয়ায়, ২০২১-র নভেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষণ পর্ব বন্ধ ছিল। ফের গত দু'বছর ধরে তা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে, বিভিন্ন কোর্স সম্পন্ন করেছেন এলাকার অন্তত ৮০০ জন পড়ুয়া।' প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জঙ্গল অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার শালবনী ব্লকের প্রত্যন্ত গোদাপিয়াশাল, কাশিজোড়া, বেঁউচা সহ প্রায় ৩৯টি গ্রামের পড়ুয়াদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে ডালমিয়া কর্তৃপক্ষের এই অনন্য উদ্যোগ ছাড়াও। গত ৭ বছর ধরেই শালবনী ব্লকের ৯ নং কাশিজোড়া এবং ১০ নং কর্ণগড় অঞ্চলের ৩৯টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার বাসিন্দার সার্বিক জীবন ও জীবিকার মান উন্নতির জন্য তাঁরা নিযুক্ত আছেন বলে জানিয়েছেন ডালমিয়া-র শালবনী ক্যাম্পাসের ইউনিট হেড পঙ্কজ গুপ্তা।এলাকার জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়ন ছাড়াও মহিলাদের স্ব-নির্ভর করার জন্যও দীর্ঘদিন ধরে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই সিমেন্ট সংস্থা । বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই দাবি করেন তাঁরা। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়য়ের হাত ধরে শালবনীর গোদাপিয়াশালে ডালমিয়া সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন হয়। সিমেন্ট কারখানায় এলাকার প্রায় ৬০০ শ্রমিকের কর্মসংস্থান ছাড়াও, কারখানা-পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষের জীবন-জীবিকা ও শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশপাশি মহিলাদের স্বনির্ভর করার চেষ্টা করে যাচ্ছে ডালমিয়া কর্তৃপক্ষ। এলাকার বিভিন্ন গ্রামে সোলার পাম্প বসিয়ে একদিকে যেমন জলের সমস্যা মিটিয়েছেন তাঁরা। তেমনই মাদুর তৈরি, মোমবাতি তৈরি, মাশরুম চাষ থেকে শুরু করে বিভিন্ন হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দিয়ে মহিলাদের স্বনির্ভর করার কাজও করছে এই সংস্থা।কোম্পানির একটি নিজস্ব ভ্রাম্যমান বাসও রয়েছে। তাতে রয়েছে ১৫টি কম্পিউটার। সেই বাসটি বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে ঘুরে কচিকাঁচাদের বেসিক কম্পিউটার শিক্ষা প্রদান করছে। কোম্পানির ইউিনট হেড পঙ্কজ গুপ্তা বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরেই আমরা এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করছি আমাদের এই উদ্যোগের মাধ্যমে এলাকার মানুষের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা বাড়বে।' বুধবারের বিজয়া সম্মিলনীতে সাংবাদিক বৈঠকে ইউনিট হেড ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শ্যাম সুন্দর সোয়ার, কপিলমুনি পান্ডে, সুবীর মোহান্তি প্রমুখ আধিকারিকরা।
  • Link to this news (এই সময়)