• রেশনের চালের পরিবর্তে মিলছে নগদ, অনিয়ম রুখতে হেলদোল নেই খাদ্যদপ্তরের
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • সংবাদদাতা, পতিরাম: চাল না টাকা? দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় দুয়ারে রেশন নিতে গিয়ে এমন প্রশ্নের মুখে পড়ছেন উপভোক্তারা। চালের পরিবর্তে মিলছে নগদ। রেশন কার্ড ও আঙুলের ছাপ নিয়েই সরাসরি রেশন ডিলারের কর্মীরা একাংশ গ্রাহককে টাকা দিচ্ছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার শহর থেকে গ্রামগঞ্জে  সর্বত্র একই চিত্র। প্রকাশ্যে এধরনের কাজ চললেও প্রশাসন কোনও পদক্ষেপই করছে না। সেজন্য প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, একাংশ চাল ব্যবসায়ীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে অধিক মুনাফা লুটছেন অসাধু রেশন ডিলাররা। আর প্রশাসনের মদতেই এই অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ। এদিকে রাজ্যজুড়ে রেশন দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তার মাঝেই জেলায় এই অনিয়মের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিজেপি। 

    দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার খাদ্য নিয়ামক ফুরবা ভুটিয়া বলেন, এমন অভিযোগ শুনেছি। আমাদের তরফ থেকে সব জায়গাতেই নজরদারি চালানো হচ্ছে। যদি একাজের সঙ্গে কেউ যুক্ত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

    বালুরঘাট শহরের এক বাসিন্দা মনোজ চৌধুরী বলেন,দুয়ারে রেশনে গ্রাহকদের সরাসরি বলা হচ্ছে চাল না টাকা নেবেন? অনেকেই চাল না নিয়ে  টাকা নিচ্ছেন। এসব অনিয়ম দ্রুত বন্ধ করুক প্রশাসন। বিজেপির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক বাপী সরকার বলেন, এমন অভিযোগ আমরা জেলার অনেক জায়গা থেকেই পেয়েছি। প্রশাসনের নাকের ডগায় এধরনের অনিয়ম হলেও তারা চুপ করে রয়েছে। গোটা রাজ্যজুড়েই রেশন নিয়ে দুর্নীতি চলছে। আমাদের জেলাতেও এই ঘটনায় প্রশাসনের সঙ্গে তৃণমূল যুক্ত। তৃণমূলের মদত ছাড়া কিছুই হয় না। তৃণমূলের জেলা সহ সভাপতি সুভাষ চাকী বলেন, আমাদের কাছে এমন কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে বিজেপি সবেতেই ভুল খোঁজে। যদি কোনও অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে প্রশাসন দেখবে। 

    জেলা খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৩০৩টি রেশন দোকান রয়েছে। সব জায়গাতেই দুয়ারে রেশন চালু হয়েছে। জেলার প্রায় ১৬ লক্ষ মানুষ দুয়ারে রেশন পরিষেবা পায়। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র শ্রেণির মানুষকে চাল দেওয়া হয়। অনেক সময় গমও দেওয়া হয়। তাই রেশন ডিলারদের একাংশ সরাসরি চাল ব্যবসায় যুক্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ। অনেক জায়গায় গ্রাহকদের চাল না দিয়ে টাকা দেওয়া হচ্ছে। প্রতি কেজি চালের দাম ২১-২৩ টাকা দেওয়া হচ্ছে। অনেক গ্রাহক সেই টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। সূত্রের খবর, চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যুক্ত হয়েই এই ব্যবসা চলছে। সেই চাল মজুত করে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এনিয়ে প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ বাড়ছে। জেলা এম আর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভূপেশ ঘোষ বলেন, আমাদের সংগঠনের কেউ এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। সংগঠনের সমস্ত ডিলারকে এনিয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)