• চা বাগানে জনসংযোগ যাত্রায় নামছে বিজেপি
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: চা বলয়ে জোড়াফুল শিবির আগের থেকে অনেকটাই ঘর গুছিয়ে নিয়েছে। তারউপর গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা, বীরেন্দ্র বরা ওরাওঁ ও বিনোদ মিনজের মতো নেতারা একুশের বিধানসভা ভোটের পর বিজেপি ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে ভিড়েছেন। যাঁরা চা বলয়কে এবং চা বলয়ে বিজেপির সাংগঠনিক কৌশলকে হাতের তালুর মতো চেনেন। উপরন্তু, দলের নেতা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলার উপর দলের একাংশ কর্মীর আস্থা নেই। এই আবহে চা বলয়ের হারানো ভোটব্যাঙ্ক পুনরুদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠেছে বিজেপি। তাই বিজেপির আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা শ্রমিকদের সঙ্গে জনসংযোগের উদ্দেশ্যে প্রতিটি চা বাগানে যাচ্ছেন। 

    আগামী ১৫ ডিসেম্বর কুমারগ্রামের নিউল্যান্ডস চা বাগান থেকে বিধানসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার এই জনসংযোগ যাত্রা শুরু হচ্ছে। জনসংযোগ যাত্রা শেষ হবে নাগরাকাটায় গিয়ে। টানা ১৫ দিন ধরে জেলা বিজেপির প্রধান সেনাপতির জনসংযোগ যাত্রা শেষ হবে। এই জনসংযোগ যাত্রার জন্য শহরে দলের জেলা পার্টি অফিসে আর নিয়মিত সময় দিতে পারছেন না বিজেপির জেলা সভাপতি। 

    রাজনৈতিক মহলের মতে, মন্ত্রী জন বারলার উপর আর ভরসা করতে পারছে না গেরুয়া শিবির। মনোজবাবুও বলেন, লোকসভা ভোটে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর দায়িত্ব আমাকেই নিতে হবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে চা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে প্রতিটি চা বাগানে যাচ্ছি। দল চব্বিশের ভোটেও আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে জিতবে। 

    রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, চা বাগানগুলিতে দলের জনসংযোগের ঘাটতি মেটাতেই বিজেপির জেলা সভাপতি এমন উদ্যোগ নিয়েছেন। এই ঘাটতির পাশাপাশি, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা, বীরেন্দ্র বরা ওরাওঁ ও বিনোদ মিনজকে নিয়েও শঙ্কিত গেরুয়া শিবির। যাঁরা চা বলয়ের আনাচেকানাচে সম্পর্কে খবর রাখেন। 

    যদিও সরাসরি সেই আশঙ্কার কথা না বললেও মনোজ টিগ্গা বলেন, দলবদলু তৃণমূলের ওই তিন নেতাকে নিয়ে আমরা একেবারেই চিন্তিত নই। তবে তাঁদের কোনও ভাবেই হালকাভাবে নেওয়া হচ্ছে না। জনসংযোগ যাত্রায় গিয়ে চা শ্রমিকদের বোঝাব, বাগানে শ্রমিকরা সরকারি যে পরিষেবা পাচ্ছেন তার সবটাই কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া। তৃণমূল এতদিন শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে এসেছে। শ্রমিকদের বিভ্রান্তি ঘোচানোর চেষ্টা করব। 

    যদিও তৃণমূল নেতৃত্ব বিজেপির জেলা সভাপতির ওই জনসংযোগ যাত্রাকে পাত্তা দিতে রাজি নয়। পাল্টা কটাক্ষ করে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, আমাদের প্রশ্ন কেন্দ্র সরকারের ঘোষিত এক হাজার টাকা কোথায় গেল? ২০১৬ সালে বীরপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন্দ্রীয় চা পর্ষদকে দিয়ে অধিগ্রহণ করে বন্ধ বাগান খোলার কথা বলার পরেও কেন বাগান খোলেনি? এসব করে বিজেপির আর কোনও লাভ হবে না। পঞ্চায়েতের মতো এবার লোকসভা ভোটেও জিতব আমরা।
  • Link to this news (বর্তমান)