• দিলীপের উপস্থিতিই অক্সিজেন, আদি বিজেপির পৃথক সংগঠন
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পাঁশকুড়ার বিদ্রোহী বিজেপি নেতারা এবার উন্নয়ন সমিতি গড়ে সমান্তরাল সংগঠন তৈরির পথে হাঁটলেন। এই পদক্ষেপে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে আদি-নব্য সংঘাত আরও বাড়বে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।  গত ২৮ আগস্ট পাঁশকুড়া বিধানসভা এলাকার দুই প্রাক্তন মণ্ডল সভাপতি সহ মোট ২২ জন নেতা-কর্মীকে শোকজ করে বিজেপি। সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে সল্টলেকে দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখানোর জন্য শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অবধি তাঁরা পার্টির কোনও কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না বলেও জানানো হয়। তাঁরা প্রত্যেকেই বিজেপির প্রাক্তন জেলা সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগামী। ওই নেতারা শাস্তি প্রত্যাহারের জন্য দলীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিলেও সেটা গ্রাহ্য হয়নি। এরপরই সমান্তরাল সংগঠন সাজানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন।

    তিন মাস আগে পাঁশকুড়া-১ নম্বর মণ্ডল সভাপতির পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন সমীরণ দুয়ারি। যদিও তাঁর নেতৃত্বে এবার বিজেপি হাউর পঞ্চায়েত দখল করেছে। সমীরণবাবুর উদ্যোগে হাউর উন্নয়ন সমিতি গঠন করা হয়েছে। তাতে মোট ৫২ জন সদস্য আছেন। তাঁরা প্রায় সকলেই আদি বিজেপি এবং বর্তমানে কোণঠাসা অবস্থায় আছেন। মূলত সমীরণবাবুর উদ্যোগে ওই সমিতি গড়া হয়েছে। আগামী দিনে সমিতির ব্যানারে কর্মসূচি চালানো হবে। এলাকার উন্নয়নে এই সমিতি লড়াই করবে বলে সমীরণবাবুর দাবি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথম বৈঠক হবে। সেখানে কনভেনার এবং কো-কনভেনার নির্বাচিত হবেন। 

    শুধু হাউর নয়, এরকম ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির আদি নেতারা উন্নয়ন সমিতি গড়তে চলেছেন। আদি শিবিরের একঝাঁক নেতার উপর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে দল। তাঁরা কোনও পার্টির কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারছেন না। এই অবস্থায় সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য দলও তাঁদের কথায় কর্ণপাত করছে না। তাই সমান্তরাল সংগঠন গড়ে নিজেদের শক্তি প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আদি শিবিরের নেতারা। গত ১১ নভেম্বর ময়না থানার বলাইপণ্ডায় বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন করছিলেন তমলুক সাংঠনিক জেলার আদি বিজেপির পদ খোয়ানো নেতারা। সেখানে মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভার পরই বিদ্রোহী নেতারা অনেকটাই চাঙ্গা। এবার চোখে চোখ রেখে নিজেরা লড়াই করার প্রতিজ্ঞা নিয়েছেন। তারপরই সমান্তরাল সংগঠন গড়া শুরু হয়।

    পাঁশকুড়া ব্লকে এবার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে পাঁচটিতে বোর্ড গড়েছে বিজেপি। কিন্তু, নব্য শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব থাকায় পঞ্চায়েতে জেতানো মণ্ডল সভাপতিদেরও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ২৪ আগস্ট পাঁচটি মণ্ডলের চারটিতে সাংগঠনিক রদবদল হয়। ওইদিনই সল্টলেকে দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান পাঁশকুড়ার আদি শিবিরের নেতারা। তারপরই একসঙ্গে ২২ জনকে শোকজ করা হয়। পার্টির কর্মসূচি থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

    অপসারিত আরএক মণ্ডল সভাপতি সুদীপ মাইতি বলেন, ১৪টি অঞ্চলেই উন্নয়ন সমিতির ব্যানারে একটি মঞ্চ তৈরি হবে। আমরা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ প্রত্যাহারের জন্য আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু, তানিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি দল। এই অবস্থায় সাংগঠনিক কাজকর্ম চালানোর জন্য ওই মঞ্চ গড়া হচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)