• দেউচা-পাচামি প্রকল্পের কাজে গতি আনতে তৎপর রাজ্য, আরও ৮ জনকে চাকরির নিয়োগপত্র
    বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউডি: দেউচা পাচামি কয়লাখনি প্রকল্পে আরও গতি আনছে রাজ্য সরকার। প্রকল্পের আওতায় থাকা জমিদাতাদের ১২ ও ১৩ ধাপে চাকরি দেওয়ার অনুমোদন ইতিমধ্যেই রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে পাশ হয়ে গিয়েছে। তার আগে ১১ ধাপের আটজন জমিদাতাকে চাকরি দিল বীরভূম জেলা প্রশাসন। সোমবার জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে গ্রুপ ডি চাকরি প্রাপকদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়। বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের এই কয়লা প্রকল্প এখন রাজ্য সরকারের  পাখির চোখ। লোকসভা নির্বাচনের আগে আরও অনেক জমিদাতার চাকরি হতে চলেছে।

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ ও ১৩ ধাপে পুলিসের জুনিয়র কনস্টেবল ও গ্রুপ-ডি মিলিয়ে কমপক্ষে ৬০০ জনের চাকরির অনুমোদন মিলেছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রিসভায় তা পাশ হয়েছে। এবার জমিদাতাদের কাগজপত্র সংক্রান্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে খুব শ্রীঘ্রই তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে। এর আগে ১০ ধাপ পর্যন্ত প্রায় ১০০০ জনের চাকরি হয়েছে। তাঁরা প্রত্যেকেই পুলিসের জুনিয়র কনস্টেবল, গ্রুপ-ডি পদে বিভিন্ন জায়গায় কর্মরত রয়েছেন। 

    সোমবার জেলাশাসক বিধান রায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক(উন্নয়ন) বিশ্বজিৎ মোদক, অতিরিক্ত জেলাশাসক(জমি অধিগ্রহণ) বাবুলাল মাহাত চাকরি প্রার্থীদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। নিয়োগপত্র পেয়ে স্বরূপ দে, মানাতা সোরেনদের মুখে ফুটে ওঠে চওড়া হাসি। তাঁরা বলেন, আমরা কাজের সুবাদে বাইরে থাকি। মহম্মদবাজারে আমাদের জমি সরকারকে প্রকল্প করার জন্য দিয়েছি। তার বদলে আগেই চেক পেয়েছি। এবার চাকরি পেলাম। ভালো লাগছে। আমরা প্রকল্পের পক্ষে রয়েছি। জেলাশাসক বলেন, নিয়োগপত্র অনেক আগেই তুলে দেওয়া হতো। কিন্তু ওঁরা বাইরে থাকার কারণে বিলম্ব হল। পরবর্তী ১২ ও ১৩ ধাপের চাকরির অনুমোদন মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে। নির্দেশ পেলে পরবর্তী ধাপের জমিদাতাদের নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। 

    প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চাঁদা ও দেওয়ানগঞ্জ মৌজায় সুরঙ্গ করে কয়লা উত্তোলনের পরিকল্পনা চলছে। পিডিসিএল কর্তৃপক্ষ এনিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। এদিকে, লোকসভার প্রচারে এই প্রকল্পকে সামনে রেখে ঝাঁপাবে তৃণমূল। জমিদাতাদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা ও সহমতের ভিত্তিতে সরকারের ভূমিকা তুলে ধরতে চাইছে নেতৃত্ব। পাশাপাশি প্রকল্প শুরুর আগে চাকরির ব্যবস্থা করার দিকটিও সামনে রাখবে শাসক দল।

    তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, বাম আমলে ঠিক এর উল্টোটা হতো। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনমতের ভিত্তিতে প্রকল্প করে দেখাচ্ছেন। আমরা শুধু ওই ব্লক নয়, গোটা রাজ্যে প্রকল্পের কথা তুলে ধরব। প্রকল্প বাস্তবের মুখ দেখলে গোটা এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ কয়লাখনি হবে এটা। 

    যদিও বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি দীপক দাস বলেন, প্রকল্প বিরোধী আন্দোলন ওখানে অনেক হচ্ছে। কিন্তু পুলিস ও তৃণমূলের নেতারা ভয় দেখিয়ে তা ভণ্ডুল করে দিচ্ছে। আমরা প্রকল্পের বিরোধী নই, কিন্তু যাঁরা জমি দেবেন না তাঁদের জমি জোর করে নেওয়ার বিপক্ষে। তৃণমূলের এসব নিয়ে প্রচার করে লাভ নেই। এই জেলার দু’টি আসনেই ওরা হারবে।
  • Link to this news (বর্তমান)