যৌন নির্যাতনের পর শিশুকন্যাকে হত্যা, অভিযুক্ত জেঠতুতো দাদা
বর্তমান | ২১ নভেম্বর ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: সাড়ে তিন বছরের কন্যাসন্তানকে যৌন নির্যাতন করে খুনের অভিযোগ উঠল জেঠতুতো দাদার বিরুদ্ধে। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়। ঘটনায় ‘গুণধর’ দাদাকে গ্রেপ্তার করেছে গড়বেতা থানার পুলিস। জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার কথা স্বীকার করেছে যুবক। ‘যৌন নির্যাতনের সময় শিশুটি চিত্কার করায় গলা টিপে খুন করেছি’ বলে পুলিসি জেরায় জানিয়েছে সে। অভিযুক্তর ফাঁসির দাবি তুলছেন শিশুর পরিবার ও এলাকার মানুষজন।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেল ৩টে নাগাদ বাড়ির সামনেই খেলছিল সাড়ে তিন বছরের ওই শিশুটি। কিছুক্ষণ পর শিশুর মায়ের খেয়াল হয়, শিশুটি বাড়িতে নেই। এরপরই শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। গ্রামের মানুষজনও তন্নতন্ন করে গোটা গ্রাম খুঁজলেও তার সন্ধান মেলেনি। এরপরেই শিশুটির পরিবারের কয়েকজনের সন্দেহ গিয়ে পড়ে জেঠুর পরিবারের উপর। জেঠুর বড় ছেলের এক ছোট্ট সন্তান রয়েছে। তার সঙ্গে প্রতিদিনই খেলত এই শিশুকন্যা। পরিবার ও প্রতিবেশীরা সন্দেহ করতে থাকেন, জেঠুর বাড়িতে লুকিয়ে রয়েছে শিশু নিখোঁজের রহস্য। ভালো করে খোঁজাখুঁজি করলেই রহস্য ভেদ হতে পারে।
পাশেই ওই শিশুকন্যার জেঠুর মাটির দোতলা বাড়ি রয়েছে। সকলে ওই বাড়িতে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। এরপর সন্ধ্যায় দোতলার ঘরে একটি টিনের ট্রাঙ্ক দেখে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। সেটি খুলতেই শিউরে ওঠেন তাঁরা। ট্রাঙ্কের ভিতর অচৈতন্য অবস্থায় শায়িত ছিল শিশুকন্যাটি। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে গড়বেতা থানার পুলিস। শিশুটিকে উদ্ধার করে গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিত্সক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিশুটির জেঠুর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিস। সেখানেই জেঠুর ছোট ছেলে যুবরাজ সিং জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার কথা স্বীকার করে নেয়।
পুলিসের এক আধিকারিক বলেন, রবিবার বিকেলে শিশুটিকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে যুবক। এরপর দোতলার ঘরে নিয়ে যায়। সেখানেই শিশুর উপর অকথ্য যৌন নির্যাতন চালায় সে। শিশুটি চিত্কার করায় তার গলা টিপে নৃশংসভাবে খুন করে। এরপর শিশুর দেহ একটি টিনের ট্রাঙ্কের মধ্যে রেখে দেয়। ওই যুবক ভেবেছিল দেহটি রাতের অন্ধকারে কোথাও ফেলে দিয়ে আসবে। কিন্তু তার আগেই দেহটি উদ্ধার হয়ে যায়। ওই যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অতীতেও যুবকের অপরাধের রেকর্ড রয়েছে। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল। মদের আসরে নিজের এক বন্ধুকে ইট দিয়ে থেঁতলে, গলায় কাঁটাতার পেঁচিয়ে মারার চেষ্টা করেছিল সে। ওই ঘটনায় তার বন্ধু প্রাণে রক্ষা পেলেও যুবরাজকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিস। কিন্তু তখন সে নাবালক থাকায় মাসখানেকের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যায়। তবে, এবার যুবকের কঠোর শাস্তির দাবি করছেন পরিবারের লোকজন। গ্রামবাসীরাও শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন।