সংবাদদাতা, নবদ্বীপ: কিছুদিন বন্ধ ছিল। বর্ষা মিটতেই ফের অবাধে বালি ও মাটি কাটা শুরু হয়েছে। নবদ্বীপের মহিশুরা পঞ্চায়েতের ভাঙন কবলিত চৌধুরীপাড়ার নদী তীরবর্তী এলাকা থেকে ভোর থেকে প্রকাশ্যে মাটি কাটা চলছে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রায় ১২-১৪টি ট্রাক্টরে করে কারবার চালাচ্ছে মাটি মাফিয়ারা। ভয়ে এনিয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না স্থানীয় বাসিন্দারা।
মহিশুরা পঞ্চায়েত ভাগীরথী তীরবর্তী এলাকার মালিতাপাড়া, চৌধুরীপাড়ায় সারা বছর ধরেই কমবেশি নদী ভাঙন চলে। ভাঙন কবলিত নদী তীরবর্তী এলাকাতেই অবাধে মাটি কাটছে একশ্রেণির অসাধু কারবারি। এতে আগামী দিনে নদীর পাড়ে ভাঙন আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেইসঙ্গে মাটিবোঝাই ট্রাক্টর যাতায়াতের ফলে চৌধুরীপাড়া থেকে মালিতাপাড়ার পথশ্রী প্রকল্পের রাস্তাও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিদিন। এমনকী ট্রাক্টর যাতায়াতের ফলে রাস্তাঘাট ধুলোয় অন্ধকার হয়ে যায়। ধুলোর জেরে অতিষ্ঠ চৌধুরীপাড়া, মালিতাপাড়া এবং মাঝেরচড়ার বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, নদী তীরবর্তী এলাকার বেশকিছু জমির মালিক মাটি বিক্রি করছেন। সেইসব মাটি কম দামে কিনে নিচ্ছে মাটি মাফিয়ারা। এছাড়া খাসজমি থেকেও মাটি কাটছে ওই সব কারবারিরা। এখান থেকে মাটি বোঝাই করে ট্রাক্টরে নবদ্বীপ সংলগ্ন পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। সেই বালি ও মাটি চড়া দামে বিক্রি করছে অসাধু কারবারিরা। দূরত্ব অনুযায়ী বালি ও মাটির দাম ট্রাক্টর প্রতি ১২০০-১৫০০টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মাঝেরচড়ার এক বাসিন্দা জানান, মাটিবোঝাই ট্রাক্টরগুলি কাঞ্চনতলা হয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। মাটি কারবারিদের ভয়ে গ্রামবাসীরা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। প্রতিবাদ করলে হুমকির মুখে পড়তে হয়। ওদের লোকজন গ্রামে ঢোকার বিভিন্ন রাস্তা যেমন গৌরাঙ্গ সেতু, মহিশুরা চারমাথার মোড়, কাঞ্চনতলা সহ বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকে। পুলিসের গাড়ি ঢুকলেই ওদের কাছে আগে খবর পৌঁছে যায়। তখন গ্রামের ঝোপে মাটিবোঝাই গাড়িগুলি লুকিয়ে ফেলে কারবারিরা।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য ওসমান মালিতা বলেন, গ্রামবাসীরা বালি ও মাটি কাটার ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করছেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের এব্যাপারে দ্রুত নজর দেওয়ার প্রয়োজন। জেলা পরিষদ সদস্যা আরজুবানু খাতুন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। এই কাজ যাতে বন্ধ হয় সেজন্য প্রশাসনকে বিষয়টি জানাব। নবদ্বীপ ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক নবীনকুমার গৌতম বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দেখছি। এই ধরনের কাজ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মাটি কাটা রুখতে প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে।