প্রয়াত বিশিষ্ট চক্ষু চিকিৎসক এবং শঙ্কর নেত্রালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডঃ এস এস বদ্রীনাথ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। দেশের চক্ষু চিকিৎসার অগ্রগতিতে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। তাঁর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন সেঙ্গামেদু শ্রীনিবাস বদ্রীনাথ। মঙ্গলবার ভোরে তাঁর জীবনাবসান হয়। চেন্নাইয়ে নিজের বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানা গিয়েছে। চেন্নাইয়ের বসন্তনগর শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ চিকিৎসা মহল।১৯৪০ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি চেন্নাইয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেঙ্গামেদু শ্রীনিবাস বদ্রীনাথ। চেন্নাইয়ে তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শেষ হয়। জানা যায়, তাঁর এক আত্মীয়ের দু চোখে দৃষ্টি ছিল না। তাঁদের বাড়িতে বেশ কিছুদিন ছিলেন ছোট বদ্রীনাথ। নিজের চোখের সামনে আত্মীয়কে কষ্ট পেতে দেখে তাঁর মনে যথেষ্ট প্রভাব পড়ে। চোখের চিকিৎসার জন্য জীবনে কিছু করার লক্ষ্যমাত্রা নেন তখন থেকেই।চক্ষু চিকিৎসক হওয়ার প্রেরণা তিনি ওই ঘটনা থেকেই পেয়েছিলেন বলে জানান তিনি। এরপর চক্ষু চিকিৎসা বিদ্যা প্রশিক্ষণে শুরু হয় তাঁর নিরলস পরিশ্রম। প্রাথমিক শিক্ষার পর মাদ্রাজ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। আরও উচ্চতর শিক্ষার জন্য নিয়ে তিনি নিউ ইয়র্ক ও আমেরিকায় পড়াশোনা করতে যান। পড়াশোনা শেষ করে ১৯৭০ সালে তিনি দেশে ফিরে আসেন।এরপর ১৯৭৪ সালে তিনি শঙ্কর নেত্রালয় প্রতিষ্ঠা করেন। চোখের চিকিৎসা মধ্যবিত্ত মানুষের খরচের নাগালে নিয়ে আসার চেষ্টা করেন এই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। বহু মানুষের কাছে চক্ষু চিকিৎসার অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠে এই শঙ্কর নেত্রালয়। ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ মেডিকেল সায়েন্সের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৬ সালে পদ্মভূষণ পুরস্কার পান তিনি।চিকিৎসকের প্রয়াণে শোকবার্তা জ্ঞাপন করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ' চক্ষুবিদ্যার ক্ষেত্রে অগ্রগামী এবং বিখ্যাত শঙ্কর নেত্রালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ এস এস বদ্রীনাথ প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। ডঃ বদ্রীনাথের মৃত্যু ভারতের চিকিৎসা ক্ষেত্রে গভীর ক্ষতি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে যেখানে তিনি বিশাল অবদান রেখেছেন তার জন্য একটি বড় ক্ষতি। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব, প্রশংসক এবং উত্তরসূরিদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।