শেষ কথা হয় ১১ নভেম্ভর,শনিবার! তারপর থেকে আর ছেলের গলা শোনেননি মা। আশা শুধু এটুকুই, জানতে পেরেছেন ছেলেকে অক্সিজেন, খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছেন। উত্তর কাশীতে পাহাড়ের টানেলে আটকে রয়েছে ছেলে। দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে হুগলি জেলায় পুরশুরা থানায় তাঁর পরিবারের সদস্যরা।পুরশুরা থানার হরিণাখালি গ্রামের বাসিন্দা সৌভিক পাখিরা ও নিমডাঙ্গির বাসিন্দা জয়দেব প্রামাণিক। দুজনেই উত্তরাখণ্ডের নির্মীয়মান টানেলের ভেতর আটকে রয়েছে শেষ নয়দিন ধরে। সৌভিক পাখিরা কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করে। এরপর উত্তরাখণ্ডে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি পান তিনি। মাত্র ৯ মাস হয়েছে চাকরিতে যোগ দিয়েছে সে। কর্মসূত্রে বাইরেই থাকে। পুজোর সময় বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটিয়ে যায়। হাসিখুশি ছেলেটা যে এভাবে বিপদে পড়বে বুঝতে পারেনি কেউই।১২ নভেম্বর উত্তরাখণ্ডের উত্তর কাশীতে নির্মীয়মান টানেলে ধস নেমে আটকে পড়েন মোট ৪০ জন শ্রমিক। সেই ৪০ জনের মধ্যে রয়েছেন হুগলির দুই বাসিন্দা। ঘন অন্ধকার টানেলে এক বিন্দু আলো দেখার জন্য দিনের পর দিন কাটাচ্ছে তাঁরা। কবে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারবেন, তার কোনও সদুত্তর নেই। শুধু প্রাণ হাতে নিয়ে এক একটা করে দিন কাটছে তাঁদের। যদিও দিন না রাত সেটুকুও বোধহয় উপলব্ধি করতে পারছেন না তাঁরা।হুগলির দুই বাসিন্দারা আটকে পড়ার খবরে বিচলিত হয়ে পড়েছেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, কোম্পানির উচ্চপদস্থ কিছু ব্যক্তির সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করতে পেরেছেন। তাঁরাই পরিবারের লোকজনকে জানিয়েছেন, টানেলে আটকে থাকা শ্রমিকদের জন্য খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। ভেতর যাতে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা না হয় তার জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে পাইপ লাইনে মাধ্যমে। সৌভিকের মা লক্ষ্মী পাখিরা জানায়, শেষ শনিবার রাতে কথা হয়েছিল। তারপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ করা যায়নি সৌভিকের সঙ্গে।মা বলেন, 'ঠাকুরকে ডেকেই কাজে গিয়েছিল ছেলে। আমায় বলেছিল যেখানে থাকি সেখান থেকে প্রায় ২০০ কিমি দূরে আমার ইলেকট্রিকের কাজ পড়ে। সেখানেই কাজ করতে যেতে হচ্ছে। শনিবার শেষ কথা হয়। তারপরেই টিভিতে শুনলাম ওই টানেলে ধস নেমেছে।' বলতে বলতে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন মা। জয়দেবের পরিবার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে প্রতিবেশীরা জানান খবর তার বাড়ির লোকজন ছেলের খোঁজখবর নিতে বাড়ি থেকে দুর্গাপুরে এক আত্মীয় বাড়িতে গিয়েছে।