• মস্তিতে থাকা কুনকিকে বাগে আনতে গিয়ে মাহুতের মৃত্যু
    এই সময় | ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  • অজ্ঞতা? না অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস? শনিবার জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে মস্তিতে থাকা একটি কুনকি হাতি তার মাহুত দীপক কার্জি (৪০)কে পিষে মারার পরে এই প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে কুনকি হাতির আক্রমণে একাধিক মাহুতের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু শনিবারের ঘটনাকে নজিরবিহীন বলছেন বনকর্তারা। কারণ পুরুষ হাতিরা মস্তিতে থাকলে, জঙ্গলের নিয়ম মেনে তার কাছাকাছি ঘেঁষতে সাহস করেন না কেউই। কিন্তু দীপক ওই নিয়ম অগ্রাহ্য করায় তাঁকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারে 'সুন্দর'।পাতাওয়ালার চিৎকারে অন্য হাতির পিঠে থাকা দুই বনকর্মী শূন্যে গুলি চালালেও শেষরক্ষা হয়নি। ওই কুনকির খপ্পর থেকে দীপককে উদ্ধার করে ফালাকাটা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। বিশিষ্ট হস্তী বিশারদ পার্বতী বরুয়া বলেন, 'প্রশিক্ষণের সময় পই পই করে বলা হয় যে, মস্তিতে থাকা হাতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। তারপরেও যদি মাহুতরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে ভর করে কিছু করে, তবে তো বিপদ ঘটবেই।'শুক্রবার বিকেল তিনটে নাগাদ সুন্দর নামের ওই কুনকি হাতিকে স্নান করানোর সময়ে আচমকা বনের গভীরে পালিয়ে যায় সে। রাতভর তার হদিশ মেলেনি। শনিবার খুব সকালে জলদাপাড়া পূর্ব রেঞ্জ থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে জঙ্গলে টহল দিতে গিয়ে পশ্চিম রেঞ্জের ময়রাডাঙা বিটের ভৈরবহাটের কাছে একটি হাতিকে ঘোরাফেরা করতে দেখে সন্দেহ হয় অন্য একটি কুনকি হাতির পিঠে থাকা দুই বনকর্মীর।কাছে যেতেই ওই হাতিটির ডান পায়ে মোটা দড়ির বাঁধন দেখে তাঁরা নিশ্চিত হন যে, আর যাই হোক, ওই হাতিটি বুনো নয়। ওয়াকিটকিতে খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্পষ্ট হয় ওটা সুন্দরই। তাকে পাকড়াও করতে ছুটে যান তার মাহুত দীপক কার্জি ও পাতাওয়ালা বাপি বর্মন। তাঁরা সুন্দরকে বাগে আনার চেষ্টা করলে তেড়ে আসে সে। প্রাণভয়ে পালিয়ে যান বাপি। বিপদের আঁচ পেয়েও কেন মাহুত দীপক কার্জি সুন্দরের পায়ের দড়ি ধরে টানতে গেলেন, তা কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না বনকর্তারা। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারি বন্যপ্রাণী সংরক্ষক নভোজিৎ দে বলেন, 'কেন যে দীপক কার্জি নিজের বিপদ ডেকে আনলেন, তা কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না।' তবে দুর্ঘটনার পর থেকে সুন্দরের কোনও খোঁজ মেলেনি। তাকে দেখামাত্রই ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করার নির্দেশে দিয়েছেন বনকর্তারা।
  • Link to this news (এই সময়)