রবিবার, ছুটির দিন। স্বাভাবিক ভাবেই নন্দন চত্বরে আয়োজিত কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবে ভিড়ের মাত্রা ছিল অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি। তবে সেই ভিড় আচমকাই অস্থির হয়ে পড়ে চলচ্চিত্রোৎসবে সন্ধ্যা ৭টার স্লটে চলা একটি ছবি দেখার জন্য। ছবিটি বলিউডের। মে মাসে মুক্তি পেলেও পূর্বভারতে এখনও পর্যন্ত কোথাও দেখানো হয়নি। সেই অর্থে কলকাতায় ছবিটির পূর্বভারতের প্রিমিয়ারও হল বলা চলে। তাই ছবির প্রদর্শনে নন্দনের হলে উপস্থিত ছিলেন বলিউডের ওই পরিচালক নিজেই। তিনি অনুরাগ কশ্যপ।
রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ‘কেনেডি’ ছবিটি দেখানো হচ্ছিল নন্দনে। ছবিটি শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিক বৈঠক করেন পরিচালক কাশ্যপ। জানান, ছবিটি দর্শকদের সঙ্গে হলে বসে দেখবেন তিনিও। এই কেনেডি ছবি দেখা নিয়েই গণ্ডগোলের সূত্রপাত। রবিবার নন্দনে জমা ভিড়ের একটা বড় অংশই ছবিটি দেখার জন্য লাইন দেন হলের বাইরে। কিন্তু যত না আসন সংখ্যা, ভিড় জমে তার তিন গুন।
ধীরে ধীরে আসন ভরাট হয়ে গেলে দরজা বন্ধ করতে যান নিরাপত্তারক্ষীরা। দর্শকদেরও জানিয়ে দেওয়া হয়। আর ভিতরে ঢোকার সুযোগ নেই। কারণ জায়গা নেই। আর তাতেই দীর্ঘ ক্ষণ ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা দর্শকদের ধৈর্যের বাঁধ ভাঙে। তাঁরা চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। দাবি করেন, যেহেতু তাঁদের কাছে ভিতরে ঢোকার অনুমতিপত্র রয়েছে অর্থাৎ ‘ডেলিগেশন পাস’ রয়েছে, তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দিতে হবে। এই নিয়েই রক্ষীদের সঙ্গে প্রথমে বচসা তার পর সংঘর্ষ বাধে দর্শকদের। শেষে পুলিশ এসে হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তত ক্ষণে দু’পক্ষেরই অনেকে আহত হয়েছেন।
চলচ্চিত্রোৎসবের এমন ছন্দপতন নিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে প্রশ্ন করা হয়েছিল কলকাতা চলচ্চিত্রোৎসবের চেয়ারপার্সন তথা টলিউডের পরিচালক রাজ চক্রবর্তীকে। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিনই ভিড় হচ্ছে। চলচ্চিত্র উৎসবে সেটাই কাঙ্ক্ষিত। সেখানে ‘কেনেডি’ র মত ছবি সবাই দেখতে চাইবেন। ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন। তাঁদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা নিরুপায়। একটা সময়ের পর দর্শকাসন ভরে গেলে আমাদের দরজা বন্ধ করে দিতে হয়। পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়া গেছে।’’
যদিও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, রবিবার দুপুরেও ঠিক এমনই ঘটনা ঘটেছিল আরও একবার। তখন হলে অঞ্জন দত্তের ছবি দেখানো হচ্ছিল। সেখানেও দর্শকাসন ভরে গেলে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাতে দর্শকেরা রেগে গিয়ে প্রতিবাদ জানালেও অবশ্য বিষয়টি হাতাহাতির পর্যায়ে গড়ায়নি।