• জোড়া ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত চীন মৃত ১২৭, জখম অন্তত ৭০০
    বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৩
  • সাংহাই: গত বছরের আতঙ্কের স্মৃতি উস্কে ফের ভূমিকম্প। চীনে সোমবার গভীর রাতে জোড়া কম্পনের ধাক্কায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ল বাড়িঘর। বেঘোরে মৃত্যু হল কমপক্ষে ১২৭ জনের। আহত ৭০০ জনেরও বেশি। 

    স্থানীয় সময় রাত ১২টা নাগাদ প্রবল ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে উত্তর-পশ্চিম চীনের গানসু ও কিংহাই প্রদেশ।  এর জেরে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় বহু এলাকা। তার নীচে আটকে পড়ে বহু মানুষ। চীনের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.২। যদিও আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভে অ্যান্ড ম্যাগনিটিউড জানিয়েছে, কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.৯। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত গানসু প্রদেশ। কম্পনের কেন্দ্রস্থল রাজধানী লানঝৌ থেকে ১০০ কিমি দূরে মাটি থেকে মাত্র ১০ কিমি গভীরে। শুধুমাত্র এই প্রদেশেই মৃতের সংখ্যা ১১৩ ছুঁয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। কম্পনের ফলে বহু এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ফেটে গিয়েছে জলের পাইপ। রাস্তায় থাকা গাড়িগুলি দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রাদেশিক পরিকাঠামো ব্যবস্থাও। পাশাপাশি কিংহাই প্রদেশে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বহু মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। দুই প্রদেশেই জোর কদমে চলছে উদ্ধারকাজ। জানা গিয়েছে, কম্পনের জেরে ৬৩৮১টি বাড়ি ধসে গিয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে, প্রায় ৩২টি আফটার শক রেকর্ড করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সবচেয়ে জোরালো কম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪.০। 

    ঘুমের মধ্যেই এই বিপর্যয়ে অনেকেই কী হয়েছে, তা বুঝে ওঠারও সময়টুকুও পায়নি। আতঙ্কে অনেককেই রাস্তায় দৌড়তে দেখা যায়। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দিশাহারা হয়ে পড়ে বাসিন্দারা। ভূমিকম্পের পরই উদ্ধার শুরু হয় উদ্ধারকাজ। 

    দুর্গতদের যাবতীয় সাহায্য পৌঁছে দিতে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জি জিনপিং। উদ্ধারকাজ ও আহতদের চিকিৎসায় যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে, সেই দিকেও নজর দিতে বলেছেন তিনি। পাশাপাশি দুই প্রদেশের সমস্ত আধিকারিককে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। গত সপ্তাহ থেকেই চীনে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। গানসু ও কিংহাই দুই প্রদেশের উচ্চতা বেশি হওয়ায় শীতে কাবু সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত উদ্ধারকার্য শেষ করার চেষ্টা চলছে। কারণ ফের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে, কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  উল্লেখ্য, গত বছর সেপ্টেম্বরে সিচুয়ান প্রদেশে ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। চলতি বছর আগস্টেও পূর্ব চীনও ৫.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল।
  • Link to this news (বর্তমান)