• বাজারে ঝাঁজালো ধোঁয়া, প্রাণভয়ে ছুটোছুটি
    এই সময় | ১০ জানুয়ারি ২০২৪
  • মঙ্গলবার দুপুর তিনটে। হাওড়া পাইকারি সব্জি বাজারে তখন কেনাবেচার ব্যস্ততা চরমে। হঠাৎই বাজারে মধ্যে ভেসে আসতে থাকে সাদা ধোঁয়া, সঙ্গে ঝাঁজালো গন্ধ। অনেকেই হাঁচতে শুরু করেন। কারও চোখ জ্বালা শুরু হয়। কেউ কেউ বমি করতে শুরু করেন। মুহূর্তে আতঙ্ক গ্রাস করে গোটা বাজারে। প্রাণভয়ে সকলে ছুটোছুটি শুরু করে দেন।পরে জানা যায় সব্জি বাজারের পাশেই একটি বরফ কল থেকে গ্যাস লিক করে এই বিপত্তি। দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে বরফ কলের কারখানায় জল ছড়িয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, কারখানার গ্যাস পাইপের একটি ভাল্ব থেকে অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক করেছিল। হাওড়া ফায়ার স্টেশনের অফিসার সুমন্ত ঘোষ বলেন, ‘অ্যামোনিয়া গ্যাস লিক করে গোটা বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। কারখানাটির বৈধ কাগজপত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।’এ দিন গ্যাস লিকের খবর পেয়ে চলে আসে গোলাবাড়ি থানার পুলিশ ও দমকল। দ্রুত আশপাশ থেকে লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। স্বস্তি একটাই, গ্যাস লিকের ঘটনায় কেউ অসুস্থ হননি। সব্জি বাজারের এসেছিলেন গোপাল সামন্ত। তিনি বলেন, ‘ঝাঁজালো গ্যাসের গন্ধে আমার চোখ জ্বালা করছিল। শ্বাসকষ্টও শুরু হয়। মনে হচ্ছিল মরেই যাব।’সব্জি বিক্রেতা উত্তম সাহা বলেন, ‘প্রাণ বাঁচাতে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। কেউ গামছা, কেউ চাদরে মুখ চেপে দৌড় লাগায়।’ যাঁদের কাছে নাক-মুখ ঢাকার মতো কিছু ছিল না তাঁরা গেঞ্জি খুলে মুখ ঢেকে নেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, দমকল এবং ডিজ়াস্টার ম্যানেজমেন্টের লোকজন এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে হাওড়া স্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও ডবসন রোড চত্বরে বড়সড় বিপদ হতে পারত।হাওড়া স্টেশন পাইকারি সব্জি বাজার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি বিনয় সোনকার অভিযোগ করেন, ‘এই বরফ কলে এর আগেও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। বার বার বরফ কলের মালিক পাপ্পু সিংকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। এ দিন ফের গ্যাস লিক করল।’ যদিও বরফ কলের মালিক পাপ্পু সিং গ্যাস লিকের কথা মানতে চাননি।তিনি বলেন, ‘কোনও গ্যাস লিক হয়নি। কারখানা পরিষ্কার হচ্ছিল। তখনই হাওয়াতে গন্ধ বেরোতে থাকে৷ আমার লাইসেন্স এবং পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের সার্টিফিকেট আছে। সরকারি আধিকারিকদের দেখাব।’ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় কী ভাবে তিনি বরফ কল চালাচ্ছেন সে ব্যাপারে অবশ্য কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি পাপ্পু সিং। বাজারের ব্যবসায়ীরা দাবি তুলেছেন, ওখান থেকে কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হোক। পুলিশ এবং দমকলের পক্ষ থেকে আলাদা ভাবে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কারখানার মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।উল্লেখ্য, এ দিন গ্যাস লিকের পর ব্যবসায়ীরা বাজার ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার ব্যবসা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। হাওড়া স্টেশন পাইকারি সব্জি বাজার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি বিনয় সরকার দাবি করেছেন, ‘এর ফলে আমাদের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।’রাজ্য, দেশ, দুনিয়া, বিনোদন, খেলার সব খবর সবার আগে পেতে চান?'হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করুন এই সময়কে।
  • Link to this news (এই সময়)