• শনিতে প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট ভোট তাইওয়ানে, নির্বাচন ঘিরে বাগ্‌যুদ্ধে আমেরিকা এবং চিন
    আনন্দবাজার | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • আবার তাইওয়ান ঘিরে প্রকাশ্য সংঘাতে আমেরিকা এবং চিন। উপলক্ষ, পূর্ব চিন সাগরের ‘দ্বীপরাষ্ট্রের’ আসন্ন প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন। তার আগে বিশ্বের দুই বৃহৎ শক্তি পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘হস্তক্ষেপ এবং প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা’র অভিযোগ তুলল।

    চিনের তরফে বুধবার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, তাইওয়ানের ভোটে ওয়াশিংটন ‘প্রভাব খাটানোর’ চেষ্টা করলে তার পরিণাম খারাপ হবে। সেই সঙ্গে কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত একদলীয় চিনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম জানায়, কোনও অবস্থাতেই ‘এক চিন নীতি’ থেকে সরে আসবে না বেজিং।

    বৃহস্পতিবার পেন্টাগনের এক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনও হুমকির কাছে মাথা নোয়াবেন না। সেই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, ‘‘ভোটে যে পক্ষই জিতুক না কেন, আমেরিকার তাইওয়ান নীতিতে কোনও পরিবর্তন হবে না।’’ প্রসঙ্গত, চিনা হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ২০২২ সালের অগস্টে তাইওয়ান সফরে গিয়েছিলেন আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ ‘হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভস’-এর তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি। তার পর থেকেই তাইওয়ান প্রণালী এবং পাশের চিন সাগরে বেজিংয়ের সামরিক তৎপরতা বেড়েছে। ধারাবাহিক ভাবে তাইওয়ানের আকাশসীমা লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটছে। এই পরিস্থিতিতে ভোটের আগে চিনা হামলার আশঙ্কা করছে আমেরিকার অন্যতম সামরিক সহযোগী তাইওয়ান।

    বেজিং বরং বরাবরই মনে করে, তাইওয়ান আদতে চিনের অংশ। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সরকারের আমলেও সেই নীতিতে অটল রয়েছে তারা। অন্য দিকে, তাইওয়ানের বর্তমান শাসকদল ‘ডেমোক্র্যাটিক প্রোগ্রেসিভ পার্টি’ (ডিপিপি) ‘কট্টর চিন বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত। অন্য দিকে, প্রধান বিরোধী দল তথা প্রাক্তন শাসক কুয়োমিনতাং পার্টি তুলনায় বেজিংয়ের প্রতি নমনীয় বলেই পরিচিত। কাগজে-কলমে ‘বহুদলীয় নির্বাচন’ হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূলত এই দু’দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে ১১৩ আসনের জাতীয় আইনসভার কয়েকটিতে ‘তাইওয়ান পিপল্‌স পার্টি’ (টিপিপি)-র জেতার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জনমত সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে।

    গত শতাব্দীর চল্লিশের দশকে চেয়ারম্যান মাও জে দংয়ের নেতৃত্বে চিনে সশস্ত্র গৃহযুদ্ধের মাধ্যমে কমিউনিস্ট পার্টির ক্ষমতা দখলের পরে জাতীয়তাবাদী নেতা চিয়াং কাইশেক এবং তাঁর অনুগামীরা ঘাঁটি গড়েছিলেন তাইওয়ান দ্বীপপুঞ্জে। তার পর থেকে মূলত আমেরিকা এবং পশ্চিমী দুনিয়ার আর্থিক ও সামরিক সাহায্যে এখনও টিঁকে আছে ‘পৃথক’ তাইওয়ান। কিন্তু জিনপিংয়ের জমানায় চিন ক্রমশ আগ্রাসী নীতি অবলম্বন করে তাইওয়ান দখল করতে চাইছে বলে অভিযোগ।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)