• লন্ডনে মোদী-স্তুতিতে চিনের প্রসঙ্গও টানলেন রাজনাথ
    আনন্দবাজার | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • সম্প্রতি চিনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস-এ প্রকাশিত একটি নিবন্ধে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশাংসা নিয়ে সরগরম কূটনৈতিক মহল। জল্পনা বেজিংয়ের আশু কৌশল নিয়ে। এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ ব্রিটেন সফরে গিয়ে অনাবাসী ভারতীদের সভায় মোদীর প্রশংসা করতে গিয়ে চিনের প্রসঙ্গ টেনেছেন। তাঁর বক্তব্য, “গলওয়ান সংঘাতের পরে চিন বুঝতে পেরেছে, ভারত আর দুর্বল দেশ নয়। বরবারই মনে করা হয়, চিন ভারতের প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু আমরা তা ভাবি না। প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে আমরা সম্পর্ক ভাল রাখতে চাই। ২০২০ সালে দু’দেশের মধ্যে একটা সংঘর্ষজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমাদের জওয়ানরা সাহসের সঙ্গে তার মোকাবিলা করেছেন। হয়তো সেই জন্যই ভারত সম্পর্কে চিনের চিন্তাভাবনা বদলে গিয়েছে।”

    রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, চব্বিশের লোকসভা ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের মধ্যে একদিকে হিন্দুত্বের জোয়ার তোলা হচ্ছে। সেই সঙ্গেই আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষ করে অনাবাসী ভারতীয়দের কাছে মোদীর ভাবমূর্তিকে আরও বলিষ্ঠ করে দেখানোর সচেতন প্রয়াস শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজনাথ সিংহের মোদী-প্রশংসাও সেই কৌশলের মধ্যেই পরে।

    সম্প্রতি গ্লোবাল টাইমস-এ প্রকাশিত নিবন্ধে সাংহাইয়ের ফুদান ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক ঝাং জিয়াডং নরেন্দ্র মোদীর আমলে, ‘অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং বৈদেশিক নীতির ক্ষেত্রে ভারতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির’ কথা তুলে ধরেছেন। বলা হয়েছে, 'নরেন্দ্র মোদীর আমলে, ভারত কৌশলগত ভাবে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, চিন তাদের রাষ্ট্রনীতিগত কৌশলবশতই মোদীর প্রশংসা করিয়েছে তাদের একজন অধ্যাপককে দিয়ে। বর্তমানে আমেরিকা তথা পশ্চিম বিশ্বের সঙ্গে ভারতের টানাপড়েন এবং আমেরিকার নাগরিককে খুনের চেষ্টার মতো অভিযোগ ভারতের ঘাড়ের উপর ঝুলছে। আমন্ত্রণ সত্ত্বেও প্রজাতন্ত্র দিবসে ভারতে প্রধান অতিথি হয়ে আসছেন না আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই সময় বেজিংয়ের এই ধরনের মতামত দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক বাজারে ছেড়ে দেওয়া অর্থবহ। বিষয়টি নিয়ে ঘরোয়া রাজনীতিতে সরব হয়েছে কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, এটা নিছকই দেনাপাওনার খেলা। অভিযোগ, মোদী চিনকে সীমান্তে প্রবেশাধিকার দিয়েছেন, বিনিময়ে এখন প্রশংসিত হচ্ছেন তাদের কাছে।

    তবে কংগ্রেসের অভিযোগের পরোয়া করেননি রাজনাথ। বলেছেন, “চিনের মুখপত্রে প্রকাশিত নিবন্ধটি পড়লেই বোঝা যায়, ভারত সম্পর্কে চিনের ধারণার বদল হচ্ছে। চিন বুঝতে পারছে নিজেদের আর্থিক ও বৈদেশিক নীতি ভারতকে দুনিয়ার একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ হিসেবে তুলে ধরেছে। চিন ভারতকে মেনে নিক বা না নিক, তাকে অস্বীকার করা যাবে না।”

    পাশাপাশি রাজনাথের দাবি, প্রধানমন্ত্রী মোদীর চেষ্টাতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়েছিল। ভারতীয় ছাত্ররা দেশে ফিরতে পেরেছিল তার ফলে। তাঁর কথায়, “যখন রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সামরিক সংঘাত শুরু হয়, তখন কিভ এবং ইউক্রেনে পড়তে আসা ভারতীয় ছাত্রদের নিয়ে তাদের অভিভাবকরা খুব চিন্তিত ছিলেন। তাদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদী দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি তা করে দেখিয়েছেন।”

  • Link to this news (আনন্দবাজার)