• বয়স্কদের সুরক্ষিত রাখতে কোভিড বিধি মানায় জোর চিকিৎসকদের
    আনন্দবাজার | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • ধীরে হলেও দেশে নতুন করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে করোনার নতুন উপপ্রজাতি। তার মধ্যেই সম্প্রতি বঙ্গে দু’জন প্রবীণ নাগরিকের করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর খবর মিলেছে। যাঁদের পুরনো একাধিক অসুখও ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে ফের এক বার বয়স্কদের সতর্ক থাকার কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

    তাঁরা জানাচ্ছেন, সাধারণত ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট জেএন.১-এর গুরুতর অসুস্থ করার ক্ষমতা নেই। কিন্তু সেটা কমবয়সিদের ক্ষেত্রে যতটা প্রযোজ্য, বয়স্কদের ক্ষেত্রে ততটা নয়। কারণ, তাঁদের বেশির ভাগেরই বিভিন্ন পুরনো অসুখ রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, করোনার সংক্রমণ হলে ওই সব পুরনো রোগ বাড়তে পারে। উল্টো দিকে, পুরনো অসুখ থাকার কারণে করোনার সংক্রমণও গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। তাই করোনার নতুন উপপ্রজাতিতে আক্রান্ত হয়েও এক জন বয়স্কের প্রাণের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

    বার্ধক্যজনিত রোগের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদারের কথায়, ‘‘বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। যে কোনও সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে অনেক বেশি কাজ করতে হয়। তা না পারলেই সেগুলি বিকল হয়ে রোগীর মৃত্যু হয়। তাই বয়স্ক এবং কোমর্বিডিটি রয়েছে, এমন মানুষদের আবারও সতর্ক থাকতে হবে।’’

    শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন দু’-তিন জন করে কোভিড রোগী ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, তাঁদের অনেকেরই মিশ্র সংক্রমণ রয়েছে। পাশাপাশি, অনেক ক্ষেত্রেই করোনা রোগীদের সেকেন্ডারি ইনফেকশন হতে দেখা যাচ্ছে। আর, সেই রোগীর কোমর্বিডিটি থাকলে ঝুঁকি অনেক বেশি বেড়ে যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, অতিমারির সময়েও বয়স্ক এবং কোমর্বিডিটি আছে, এমন রোগীদের বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। কারণ, করোনার সংক্রমণ পুরনো অসুখকে বাড়িয়ে রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক করে তুলছিল। আবারও সেই বিষয়টিই নজরে আসছে চিকিৎসকদের। যদিও এ বার সঙ্কটজনক রোগীর সংখ্যা কম। তবে ইতিমধ্যেই দু’জনের মৃত্যু চিন্তার বিষয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

    জনস্বাস্থ্য বিষয়ক চিকিৎসক অনির্বাণ দলুই বলেন, ‘‘বয়স্কদের ক্ষেত্রে কিংবা কোমর্বিডিটি থাকলে যে কোনও সংক্রমণই মারাত্মক আকার নেয়। কোভিডও ব্যতিক্রম নয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কঠোর ভাবে বিধি মানা প্রয়োজন।’’ তিনি জানাচ্ছেন, বেশির ভাগ বয়স্কেরই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস, কিডনির অসুখের মতো এক বা একাধিক সমস্যা থাকে। এই সময়ে সেগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। অন্যান্য ব্যাক্টিরিয়া বা ভাইরাস সংক্রমণ থেকেও যথাসম্ভব সুরক্ষিত থাকতে হবে। এর জন্য বয়স্কদের নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রতিষেধক নেওয়ার কথাও বলছেন চিকিৎসকেরা।

    উল্লেখ্য, জেএন.১ নিয়ে সম্প্রতি সব রাজ্যকে সতর্ক করেছে কেন্দ্র। এর পরেই বঙ্গে এখনও পর্যন্ত দু’জন করোনা আক্রান্ত বয়স্ক রোগীর মৃত্যু প্রকাশ্যে এসেছে। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, নিউমোনিয়ার সংক্রমণ, শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের অধিকাংশেরই পরে পরীক্ষায় কোভিড ধরা পড়ছে। তবে সকলেরই নেপথ্যে জেএন.১ রয়েছে কি না, সেটা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)