• West Midnapore: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল, বিজয় মিছিলেও গোষ্ঠী কোন্দল শাসকদলের
    ২৪ ঘন্টা | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • চম্পক দত্ত: সমবায় নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল। জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বিজয় মিছিলে সামনের সারিতে অঞ্চল সহ সভাপতি উপস্থিত থাকলেও মিছিলে অনুপস্থিত অঞ্চল সভাপতি। অঞ্চলে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির লড়াই দীর্ঘ দিনের এবং নিজেদের ক্ষমতা দখলের জন্য দুই গোষ্ঠীর কোন্দল বলে কটাক্ষ বিজেপির। বিরোধীশূণ্য সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করলেও গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে অস্বস্তিতে শাসকদল তৃণমূল।বুধবার কালীঘাটে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক সেরেছেন তৃণমুল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক থেকে নেতাদের উদ্দেশ্য নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটিয়ে একসঙ্গে চলার কড়া বার্তা দিয়েছেন। আর তারপরও শাসকদলের কোন্দল থামার নাম নেই। সমবায় নির্বানকে কেন্দ্র করে ফের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ২ নম্বর ব্লকের ভগবন্তপুর ২ নম্বর অঞ্চলে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্য।

    জানা গিয়েছে, ভগবন্তপুর ২ নম্বর অঞ্চলের মহেশপুর মুড়াকাটা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনের জন্য বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমার শেষ দিন ছিল। এই সমবায় সমিতিতে মোট ৯টি আসনের মধ্যে তৃণমুল কংগ্রেস ৯টি আসনে মনোনয়ন জমা দিলেও বিরোধীদের তরফে কোনও মনোনয়ন জমা দেওয়া হয়নি। আর এর জেরে বৃহস্পতিবার তৃণমুল কংগ্রেসের ৯ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করা হয়।তৃণমূলের জয়লাভের পর ওইদিন মহেশপুর মুড়াকাটা এলাকায় জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে বিজয় মিছিল করে তৃণমুল নেতৃত্বরা। মিছিলের প্রথম সারিতে উপস্থিত ছিলেন ভগবন্তপুর ২ নম্বর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সহ সভাপতি তথা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ইসমাইল খান। উপস্থিত ছিলেন গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মোনাজুর মোল্লা সহ তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।কিন্ত মিছিলে অনুপস্থিত ছিলেন ভগবন্তপুর ২ নম্বর অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় সহ তার গোষ্ঠীর লোকজন। ভগবন্তপুর ২ নম্বর অঞ্চলে অঞ্চল সভাপতি ও সহ সভাপতির দ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। পঞ্চায়েত ভোটের পর এই দ্বন্দ্ব আরও প্রকট হয়।এখনও অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস কার্য্যালয়ের যান না অঞ্চল সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়। তার দাবি,পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে টিকিট বন্টনকে ঘিরে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল বাধে এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে ঘিরেও দুই পক্ষের বিবাদ চরমে পৌঁছায়। বর্তমানে অঞ্চল কার্যালয়ে অঞ্চলের সহ সভাপতি ইসমাইল খান ও তার অনুগামীরা বসলেও, সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় কার্যালয়ে যাননি।অপরদিকে এই অঞ্চলের কোল্লা এলাকায় কোল্লা বুথ তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয় এখনও তালাবদ্ধ। ওই কার্যালয়ে দুটি তালা লাগানোর অভিযোগ রয়েছে অঞ্চল সভাপতি ও সহ সভাপতির বিরুদ্ধে। তবে বৃহস্পতিবার সমবায় সমিতির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের প্রার্থীদের জয়লাভ এবং তা নিয়ে করা বিজয় মিছিলে অঞ্চল সভাপতির অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে রামকৃষ্ণ রায় জানান, ‘সমবায় সমিতির ৯ টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ওরা বিজয় মিছিল করেছে আমি স্কুলে ছিলাম সবে বাড়ি ফিরেছি। তৃণমূলের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে তৃণমুলের সমর্থনে মিছিল হয়েছে, সেখানে সহ সভাপতি থাক বা উপপ্রধান থাক তারা তৃণমূলেরই’।গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও, পঞ্চায়েত ভোট ও পরবর্তী গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনকে ঘিরে নিজেদের মধ্যে যে কোন্দল ছিল তা এখনও অব্যাহত অঞ্চল সভাপতির বক্তব্য থেকে স্পষ্ট।তবে এই বিষয়ে অঞ্চলের সহ সভাপতি ইসমাইল খান অবশ্য গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব মানতে নারাজ। তিনি জানান, সবাই বসে প্রার্থী ঠিক করা হয়েছে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তারা জয়ী হয়েছে। এখানে গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও বিষয় নেই। আর বিজয় মিছিলে অঞ্চল সভাপতির অনুপস্থিত প্রসঙ্গে ইসমাইল খান বলেন, ‘উনি একজন স্কুল শিক্ষক তাই হয়তো আসতে পারেননি। এখানে যেহেতু বিরোধী নেই তাই আমরা নিজেরাই সমবায় সমিতির নির্বাচন দেখভাল করেছি’।এই বিষয়ে চন্দ্রকোনা-১ মন্ডলের বিজেপির মন্ডল সভাপতি সুকান্ত দোলই বলেন, ‘এখানে তৃণমূল কংগ্রেস বিভিন্ন গোষ্ঠীতে বিভক্ত। এটা আজ নয় ২০১১ সাল থেকে চলে আসছে। কে কতটা ভাগ বাটোয়ারা নেবে সেই প্রতিদ্বন্দ্বীতায় ওরা বিভিন্ন গোষ্ঠীতে ভাগ হয়েছে। কিছুদিন আগেই কোল্লা বুথ তৃণমূল কার্যালয়ে ওদের দুই গোষ্ঠী দুটো তালা মেরেছে। একটা অঞ্চল সভাপতি দিয়েছে আর একটা সহ সভাপতি। সমবায় সমিতির নির্বাচনের ঘটনাও তেমনই। ওই নির্বাচনে অঞ্চল সহ সভাপতি ইসমাইল খানের গোষ্ঠী প্রার্থী দিয়েছে তারা জয়ী হয়েছে, তারা বিজয় মিছিল করেছে। দেখা যাবে হয়তো অঞ্চলের সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়কে ডাকা হয়নি বা বলেনি তাই সে যায়নি’।বিরোধীরা অনুপস্থিত থাকলেও, চন্দ্রকোনায় সমবায় সমিতির নির্বাচনে শাসকদল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেও গোষ্ঠী কোন্দল কাঁটায় অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)