• Suchna Seth : ছেলেকে দেখলে ওর বাবাকেই মনে পড়তো, এটাই কি কারণ? ধন্দে পুলিশ
    এই সময় | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • তদন্তে মোটেই সহযোগিতা করছে না সন্তান খুনে অভিযুক্ত সূচনা শেঠ। গত তিন দিন ধরেই সে তদন্তকারীদের নানা ভাবে বিভ্রান্ত করে চলেছে বলে দাবি পুলিশের। বৃহস্পতিবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, সূচনা তার আত্মীয়-বন্ধুবান্ধবের একাধিকবার বলেছিল যে ছেলের মুখ দেখলেই তার স্বামী ও একমাত্র সন্তানের বাবা বেঙ্কট রামনের মুখ ভেসে ওঠে। সেটা সে জাস্ট সহ্য করতে পারে না।কাজেই সন্তানকে হত্যার পিছনে শুধুই ‘কাস্টডির লড়াই’ নাকি ‘বাবার মুখের সঙ্গে ছেলের হুবহু মিলের ফলে পুরোনো কথা মনে পড়া’ একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর তদন্তকারীরা সেটা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। উত্তর গোয়ার এসপি নিধিন ভলসন এ দিনও জানান, সূচনা তদন্তে কোনও সহায়তা তো করছেই না উল্টে যত রকম ভাবে বিভ্রান্ত করা সম্ভব করে যাচ্ছে। এ দিন সূচনাকে নিয়ে পুলিশ গোয়ার সেই সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টে যায়।ক্রাইম সিন পুনর্নিমাণ করানো হয় তাকে দিয়ে। পুলিশ আগেই ঘটনাস্থল থেকে বালিশ, তোয়ালে পেয়েছিল। বুধবার কাফ সিরাপের দু’টি খালি শিশি ও একটি ছুরি পান তদন্তকারীরা। তাঁরা মনে করছেন যে, ওই কাফ সিরাপ খাইয়েই ছেলেকে প্রথমে সে নিস্তেজ করে দেয়। তার পরে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে ফেলে। ময়নাতদন্তের বিস্তারিত রিপোর্টের জন্য পুলিশ অপেক্ষা করছে।সেখান থেকেই জানা যাবে নিহত শিশুকে কাফ সিরাপ খাওয়ানো হয়েছিল কি না। যদি হয়ে থাকে তা হলে তার পরিমাণ কতটা। আর ঘর থেকে পাওয়া ওই ছুরি দিয়েই সম্ভবত ‘ব্যর্থ আত্মহত্যার নাটক’ করে সূচনা। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে, সূচনা তার স্বামী বেঙ্কট রামনকে শনিবার গোয়া পৌঁছনোর পরে মেসেজ করেছিল।সেই মেসেজে সে বেঙ্কটকে বলে, ‘রবিবার (৭ তারিখ) ছেলের সঙ্গে দেখা করতে পারবে।’ তার উত্তরে বেঙ্কট সূচনাকে বলেন, তাঁর বেঙ্গালুরুর ফ্ল্যাটে ছেলেকে নিয়ে আসতে। সূচনা রাজি হয়নি। সে পাল্টা বলে কোনও ‘পাবলিক প্লেস’-এ ছেলেকে নিয়ে সে আসবে। বেঙ্কট যেন ওখানে আসেন। সূচনা যে হেতু কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও গত চার সপ্তাহ ধরে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি, বেঙ্কট বাইরে দেখা করার প্রস্তাবেই রাজি হয়ে যান।কিন্তু নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও মা ছেলেকে নিয়ে আসেনি। বেঙ্কট পুলিশকে তাঁর বিবৃতিতে জানান, বারবার ফোন ও মেসেজ করা সত্ত্বেও সূচনা কোনও রিপ্লাই করেনি। অগত্যা কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষার পরে তিনি ফিরে যান। সে দিন সন্ধেয় ফের জাকার্তায় চলে যান। সেখানেই তিনি একটি এএই ফার্ম চালান। সেখানে পৌঁছেও তিনি কয়েক বার সূচনাকে ফোন ও ভিডিয়ো কল করেন। উদ্দেশ্য, ছেলের সঙ্গে কথা বলা ও তাকে দেখা।এর মধ্যে একবারই বাচ্চাটি একবার ভিডিয়ো কল রিসিভ করে। কয়েক সেকেন্ড কথা হয় তাঁদের মধ্যে। সেটাই বাবা-ছেলের শেষ কথা।পুলিশ জানিয়েছে, গোয়ার ওই সার্ভিস অ্যাপার্টমেন্টের ম্যানেজার যে এফআইআর দায়ের করেছেন সেখানে তিনি জানিয়েছেন, সূচনা শেঠ যখন রাতেই ক্যাব বুক করে বেঙ্গালুরু ফিরতে চেয়েছিল তাকে বলা হয় ফ্লাইটের টিকিট অনেক সস্তা।৩০০০ টাকা পার হেড পড়বে। কিন্তু তাও সে ৩০ হাজার টাকায় ক্যাব বুক করে বাই রোডই বেঙ্গালুরু যায়। সেটায় তাঁরা প্রত্যেককেই খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। বুধবার ওই ক্যাব-চালক রেহজন ডি’সুজ়া জানিয়েছিলেন, তিনিও সূচনাকে বলেছিলেন প্লেনে যাওয়ার কথা। কারণ সূচনার বেঙ্গালুরু পৌঁছনোর তাড়া ছিল আর জ্যামে আটকে থাকার সম্ভাবনা ছিল ৬ ঘণ্টাও। কিন্তু তাও সে রাজি হয়নি।এসপি জানিয়েছেন, অ্যাপার্টমেন্টটিতে মাত্র একটিই সিসিটিভি কাজ করছিল। তার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ওখানকার স্টাফরা পুলিশকে জানিয়েছেন, সূচনা ৬ তারিখ আসার পর রুম থেকে বেরোয়নি। ফুড-অ্যাপের মাধ্যমে খাবার আনিয়ে নিয়েছিল। বেঙ্করামনকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে গোয়া পুলিশ।রাজ্য, দেশ, দুনিয়া, বিনোদন, খেলার সব খবর সবার আগে পেতে হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করুন এই সময়কে।
  • Link to this news (এই সময়)