• কালনা থেকে বিধ্বস্ত মণিপুরে সাইকেলে পাড়ি প্রবীণ প্রভাতের
    এই সময় | ১২ জানুয়ারি ২০২৪
  • দীর্ঘদিনের সঙ্গী পুরোনো সাইকেল নিয়ে বছর তিয়াত্তরের তরুণ প্রভাত দাস কালনা থেকে বেরিয়ে পড়েছিলেন দাঙ্গা বিধ্বস্ত মণিপুরের উদ্দেশে। কংগ্রেসের একনিষ্ঠ এই কর্মীর ইচ্ছা, মণিপুরে রাহুল গান্ধীর ভারত ন্যায় যাত্রায় অংশ নেওয়া। কালনার সিমলনের প্রভাত এখন পৌঁছে গিয়েছেন নাগাল্যান্ডের ডিমাপুরে। এই শীতে প্রায় বারোশো কিমি পথ সাইকেলে পাড়ি দেওয়া প্রবীণ এই কংগ্রেস কর্মীর উদ্দেশ্য দেখে হতবাক ডিমাপুরের কংগ্রেস নেতারা। দলীয় কার্যালয়েই প্রভাতের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন ডিমাপুরের কংগ্রেস নেতারা।অকৃতদার প্রভাত বিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর নিজেকে চার দেওয়ালের ঘেরাটোপে সীমাবদ্ধ রাখেননি। রাজনীতিতে তিনি জড়িয়ে পড়েন কংগ্রেসের সঙ্গে। তবে নিত্য প্রতিবাদ, বিক্ষোভ আন্দোলনে নিজেকে না জড়িয়ে শান্তির বার্তা দিতে তিনি তাঁর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। শিখে নেন রান্না সমেত নিত্যকাজ। পৈতৃক সূত্রে পেয়েছিলেন চাষযোগ্য কিছু জমি। চাষ করতে গিয়ে তিনি জড়িয়ে পড়েন কৃষকদের সঙ্গে।কৃষকদের স্বার্থেও তাঁকে ঝাঁপিয়ে পড়তে দেখা গিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। তার পর বিভিন্ন বিষয়ে জনমত গড়ে তুলতে ঘুরে বেরিয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। মণিপুরে রাহুল গান্ধীর ভারত ন্যায় যাত্রার কথা শুনে ২২ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন প্রভাত। বুধবার তিনি পৌঁছন ডিমাপুরে।বৃহস্পতিবার সেখান থেকে ফোনে তিনি বলেন, ‘কংগ্রেসকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। তাই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছি ভারত ন্যায় যাত্রায় অংশ নিতে।’ যাত্রাপথের বিবরণ দিতে গিয়ে জানান, রাতে শেডের নীচে যেখানে আচ্ছাদন মিলেছে শুয়ে পড়েছেন। বলেন, ‘খিদে পেলে রুটি বা শুকনো খাবার কিনে নিতাম। ডিমাপুরে কংগ্রেস কার্যালয়ে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এখানকার নেতারা।’ তাঁর তিন ভাই নিখিল, সুশান্ত আর প্রশান্ত এতটা পথ সাইকেলে যেতে নিষেধ করেছিলেন।কিন্তু সে কথা কানে তোলেননি প্রভাত। বলেন, ‘এখানে খুব ঠান্ডা, সেটাই যা অসুবিধার। তবে সঙ্গে কম্বল এনেছি। গলাটা একটু ভেঙে গিয়েছে ঠান্ডা লেগে। ইচ্ছা আছে মুম্বই পর্যন্ত যাওয়ার।’ যোগ করছেন, ‘আমার ভাগ্নি সঙ্ঘমিত্রা দাস বারবার ফোন করে আমার খোঁজ নিচ্ছে। কান্নাকাটিও করছে। তবে যদি সুযোগ পাই, মুম্বই পর্যন্ত ন্যায় যাত্রায় যাওয়ার ইচ্ছা আমার রয়েছে। তার পরই ঘরে ফিরব।’ডিমাপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি কুতোহো চিসি ফোনে বলেন, ‘এই বয়সে সাইকেলে এতটা পথ এসেছেন দেখে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। তিনি দলের জন্য যে ভাবে আত্মত্যাগ করছেন তা দেখে এখানকার যুব কর্মীরাও উদ্বুদ্ধ। দলের কার্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ওঁর যা প্রয়োজন আমরা তার জোগান দেব। ওঁর জন্য যতটা যা করার আমরা করব।’ডিমাপুর জেলা কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়ার জেলা কো-অর্ডিনেটর ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘এমন কখনও দেখিনি। ওঁর সঙ্গে অনেকেই ছবি তুলছেন। আমরা ভীষণ উদ্দীপ্ত ওঁকে দেখে।’ প্রভাতের রাজনৈতিক অ্যাডভেঞ্চারের কথা শুনে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক মনোজ সাহা বলেন, ‘প্রভাতদা আমাদের দলে এক জন অ্যাসেট। বিভিন্ন সময়ে উনি সাইকেল নিয়ে একাই বেরিয়ে পড়েন আন্দোলনে।’রাজ্য, দেশ, দুনিয়া, বিনোদন, খেলার সব খবর সবার আগে পেতে চান?'হোয়াটসঅ্যাপে ফলো করুন এই সময়কে।
  • Link to this news (এই সময়)