• দুই হাত নেই, জম্মু-কাশ্মীরের ক্রিকেটার পা দিয়ে বল করেন, ব্যাটও করেন অনায়াসে
    হিন্দুস্তান টাইমস | ১৩ জানুয়ারি ২০২৪
  • আমির হোসেন লোন একজন ক্রিকেটার। কিন্তু তাঁর দু'টি হাতই নেই। কাশ্মীরের ওয়াঘামা গ্রামের বাসিন্দা আমির আট বছর বয়সে তাঁর বাবার মিলে কাজ করার সময়ে নিজের হাত দু'টি হারিয়েছিলেন। তবু ক্রিকেটার হওয়ার আশা তিনি ছাড়েননি। এবং একজন শিক্ষককে তিনি পেয়েছিলেন, যিনি তাঁর ক্রিকেটীয় দক্ষতাকে বুঝতে পারেন। তাঁর প্রতিভা আবিষ্কার করে তাঁকে পেশাদার ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন।

    এএনআই আমিরকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ‘দুর্ঘটনার পর, আমি আশা হারাইনি এবং কঠোর পরিশ্রম করেছি। আমি নিজেই সব কিছু করতে পারি এবং আমি কারও উপর নির্ভরশীল নই। আমার দুর্ঘটনার পর কেউ আমাকে সাহায্য করেনি। এমন কী সরকারও আমাকে সমর্থন করেনি, কিন্তু আমার পরিবার সব সময়ে আমার পাশে ছিল।’

    ঘাড় ও কাঁধের মাঝখানে ব্যাট ধরার দক্ষতা আয়ত্ত করেন আমির। আর পা দিয়ে বোলিং করার কঠোর লক্ষ্যে সফল হন আমির। ৩৪ বছয় বয়সী তারকা বলেন, ‘আমার খেলার জন্য আমি সর্বত্র প্রশংসা পেয়েছি, এবং আমি মনে করি, ঈশ্বর আমার সঙ্গে রয়েছেন, যে কারণে আমার কঠোর পরিশ্রম প্রতিফলিত হয়েছে। কারণ পা দিয়ে বোলিং করা সত্যিই কঠিন ছিল, কিন্তু আমি সেই দক্ষতা এবং কৌশল শিখেছি। আমি প্রতিটি কাজ নিজেই করি, এবং আমি ঈশ্বর ছাড়া কারও উপর নির্ভরশীল নই।’

    আমির ২০১৩ সাল থেকে প্যারা ক্রিকেট খেলছেন এবং বর্তমানে জম্মু ও কাশ্মীর প্যারা দলের অধিনায়ক। তিনি নিজের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি ২০১৩ সালে দিল্লিতে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলাম এবং ২০১৮ সালে আমি বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলাম। এর পর নেপাল, শারজা ও দুবাইয়ে ক্রিকেট খেলেছি। আমাকে আমার পা দিয়ে খেলতে (বোলিং) এবং কাঁধ ও ঘাড় দিয়ে ব্যাটিং করতে দেখে সবাই হতবাক। আমাকে ক্রিকেট খেলার শক্তি দেওয়ার জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।’

    সচিন তেন্ডুলকর এবং আশিস নেহরা অতীতে আমিরকে তাঁর দৃঢ় সংকল্প এবং অটুট চেতনার জন্য প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর চিহ্ন হিসেবে নেহরা মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এই ক্রিকেটারকে আমন্ত্রণও জানিয়েছিলেন।

    বলিউড তারকা ভিকি কৌশল আবার ২০২৩ সালে রিয়েলিটি শো ‘সা রে গা মা পা’ চলাকালীন আমিরের সঙ্গে দেখা করেছিলেন, তিনি এই ক্রিকেটার এবং তাঁর যাত্রার কথা শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘যদি আমি কখনও একটি বায়োপিক করার সুযোগ পাই, তবে কোন ভারতীয় ক্রিকেটার হবেন তিনি, এই উত্তর আমি পেয়ে গেলাম। সিনেমার মাধ্যমে ওঁর (আমির) জীবন তুলে ধরার সুযোগ পেলে ,নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করব।’
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)