লোকসভা ভোট ঘোষণার দেরি নেই। তার আগেই ফৌজদারি বিচারপ্রক্রিয়ায় নতুন তিন আইন চালুর দিন ঘোষণা করল মোদী সরকার। যবে থেকে চালুর কথা, ততদিনে অবশ্য ভোট মিটে নতুন সরকারের শপথ নিয়ে ফেলার কথা। তবে সে-সবের তোয়াক্কা না-করেই অমিত শাহর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক শনিবার জানিয়েছে, ১ জুলাই থেকে চালু হবে তিন আইন।প্রায় সব বিরোধী দল, আইনজ্ঞ, নাগরিক সমাজের একাংশ আগাগোড়া নতুন আইনের বিরোধিতা করছে। তার পরেও বিদায়ী সরকার নতুন আইন চালুর দিন ঘোষণা করায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। আইপিসি, সিআরপিসি এবং এভিডেন্স অ্যাক্ট বাতিল করে গত ডিসেম্বরে প্রায় বিরোধীশূন্য সংসদে তড়িঘড়ি তিন বিল পাশ করিয়েছিল সরকার--ভারতীয় ন্যায়সংহিতা (বিএনএস), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (বিএনএসএস) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (বিএসএ)।গত ২৫ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু সইও করে দিয়েছিলেন তিন বিলে। তবে গাড়ি-চালকদের দেশব্যাপী আন্দোলনের চাপে বিএনএস-এর ১০৬ (২) ধারাটি আপাতত কার্যকরী হবে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ওই ধারায় ‘হিট অ্যান্ড রান’-এর ঘটনায় দশ বছর পর্যন্ত কারাবাস এবং জরিমানার সাজার কথা বলা হয়েছিল। একই রকম অপরাধে বর্তমানে প্রচলিত আইপিসি’র ৩০৪(এ) ধারায় সাজার মেয়াদ দু’বছরের।পুলিশ-প্রশাসনকে নতুন আইনে দ্রুত প্রশিক্ষিত করতে দেশব্যাপী প্রস্তুতি চলছে বলে মন্ত্রক-সূত্রে খবর। নতুন ব্যবস্থায় এই প্রথম সাধারণ ফৌজদারি আইনেই সন্ত্রাসবাদ, সংগঠিত অপরাধের সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রদ্রোহের ধারণা ও সাজার মেয়াদ সম্প্রসারিত হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান বেড়েছে, বহু ক্ষেত্রে যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসের কথা বলা হয়েছে।গ্রেপ্তার না-হলেও যে-কারও ফ্রিঙ্গার প্রিন্ট, ভয়েস স্যাম্পেল বা হাতের লেখা নেওয়ার সংস্থান রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ সন্তুষ্ট হলে তবেই সাত বছর সাজাযোগ্য অপরাধে এফআইআর হবে নয়া ব্যবস্থায়। বিএনএসএস-এর ১৮৭ (২) ধারায় ৬০ বা ৯০ দিন পর্যন্ত হেফাজত-কালীন যখনখুশি পুলিশ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারবে--এমন মারাত্মক সংস্থানও রয়েছে।ইলেক্ট্রনিক এভিডেন্স, ডিজিটাল এফআইআর-চার্জশিটের কথা বলা হয়েছে নয়া সংহিতায়। তদন্ত-পর্যায়ে সরকারি কৌঁসুলির নজরদারির বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে।