• কোচিং ছাড়াই ইপিএসসি-তে সাফল্য, সারা দেশে ১৪ ব়্যাংক ঝাড়গ্রামের মানসের
    এই সময় | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
  • কোচিং ছাড়ায় সর্বভারতীয় চাকরির পরীক্ষায় সফল হলেন ঝাড়গ্রাম জেলার বাসিন্দা মানস মাহাত। বছর একত্রিশের মানসের বাড়ি জেলার নয়াগ্রাম ব্লকের প্রত্যন্ত চাঁদাবিলা গ্রামে। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউপিএসসি-র অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিক্সিজ পদে চাকরির পরীক্ষার ফাইনাল মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়। তাতে মানস মাহাত দেশের মধ্যে ১৪তম স্থান অর্জন করেছেন। তাঁর সাফল্যে খুশি ঝাড়গ্রামবাসীও। এই প্রসঙ্গে মানস নিজে বলেন,'আমার বাড়িতে প্রচুর বই রয়েছে, ওই বই পড়ে এবং বিষয়ের উপরে দক্ষতাই আমার সফলতা নিয়ে এসেছেন। বইয়ের বিকল্প নেই। শুধুমাত্র বই এবং ইন্টারনেটের সাহায্যে আমি অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিক্সিজ পদে উর্ত্তীণ হয়েছি। মাত্র দু'নম্বরের জন্য জিওসায়েন্টিস পদে পাইনি। আশাকরি ওখানে ওয়েটিং লিস্টে থাকব।' শুধুই কি ইউপিএসসি? না এর আগে মানস সিএসআর নেট এবং রাজ্যের সেট পরীক্ষাতেও উর্ত্তীণ হয়েছেন তিনি।মানসের বাড়িতে রয়েছেন খাদ্য দফতরের ফুড ইন্সপেক্টর পদ থেকে অবসর নেওয়া বাবা চুনারাম মাহাত। মা গন্ধেশ্বরী মাহাতো। চুনারাম ও গন্ধেশ্বরীর তিন ছেলে। সব থেকে ছোট মানস। বড় ছেলে বিদ্যুৎ দফতরে এবং মেজ ছেলে হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। ছোট ছেলে মানস ২০০৮ সালে স্থানীয় চাঁদাবিলা এসসি হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করেন। ২০১০ সালে ঝাড়গ্রাম বাণীতীর্থ হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে ঝাড়গ্রাম রাজ কলেজে ফিজিক্স নিয়ে ভর্তি হন তিনি। তারপর ২০১৩ সালে গ্র্যাজুয়েশন পাশ করে খড়গপুর আইআইটি-তে এমএসসি-তে ভর্তির সুযোগ পায়। সেখান থেকে ২০১৫ সালে পাশ করে সিএসআর নেট এবং রাজ্যের সেট পরীক্ষায়ও উর্ত্তীণ হন। তারপর গবেষণা করার সিদ্ধান্ত নিলেও মাঝপথে ওই তা বদল করেন। ২০১৯ সালে প্রত্যন্ত চাঁদাবিলা গ্রামে ফিরে আসেন মানস। শুরু করেন চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি।অ্যাসিস্ট্যান্ট জিওফিক্সিজ পদে চাকরির প্রসঙ্গে মানস বলেন,'আমি এমএসসি-তে জিওফিজিক্সের কোনও পেপার পড়িনি। কিন্তু বিষয়টি ভালো লাগাতে আমি নতুন বই কিনে চাকরির পরীক্ষার জন্য পড়তে শুরু করি। এখানে বিষয়ের দক্ষতা ও গভীরতা খুব গুরুত্ব সহকারে দেখা হয়। ২০২৩ সালে কলকাতায় গিয়ে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলাম। তারপর ওই পরীক্ষায় পাশ করায় গত ৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লি ইউপিএসসি ভবনে গিয়ে ইন্টারভিউ দিয়েছিলাম। ২৩ ফেব্রুয়ারি মেধা তালিকা প্রকাশ হয়েছে। তাতে আমি ১৪তম স্থান অর্জন করতে পেরেছি।'শনিবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে পৌঁছান ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সুমন সাহু। মানসকে পুষ্পস্তবক দিয়ে সংবর্ধনা জানান শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ। সুমন সাহু বলেন,'সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় কোনওরকম কোচিং বা ট্রেনিং ছাড়াই তিনি নিজে এই জায়গায় পৌঁছেছেন। খুবই সরল-সাদাসিধে জীবনযাত্রা। আমাদের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে যে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় পাশ করা যায়, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন মানসব। সত্যিই আমারা আপ্লুত, অনুপ্রাণিত হয়েছি। ঝাড়গ্রাম জেলাবাসী হিসেবে, নয়াগ্রামবাসী হিসেবে তাঁর জন্য গর্ব অনুভব করছি। তাঁকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানাতে পেরে আমরা ধন্য।'
  • Link to this news (এই সময়)