ভীতি প্রদর্শন-জাল নথি, ছলে বলে জমি দখলের অভিযোগ সিরাজের বিরুদ্ধেও
এই সময় | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪
সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের পাশাপাশি তাঁর ভাই সিরাজুদ্দিনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভের পাহাড় রয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে। তাঁর বিরুদ্ধেও রয়েছে জমি দখলের অভিযোগ। এমনকী এই নিয়ে পুলিশের শিবিরেও অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জমি দখল করে ভেরি তৈরির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।গ্রামবাসীদের কারও কারও অভিযোগ, প্রথমে গ্রামে ডাক্তারি করতেন সিরাজুদ্দিন। পরে এলাকায় 'দাদাগিরি' শুরু করেন তিনি। শাসকদলের যুব নেতা হিসেবে এলাকায় বাড়তে থাকে দাপট। এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০১৫ - ১৬ সাল থেকে বেড়মজুরের দু'টি পঞ্চায়েত এলাকায় বাড়তে থাকে সিরাজুদ্দিনের দাপট। অভিযোগ, সব মিলিয়ে প্রায় ২৩০ বিঘা জমি দখল বা ভয় দেখিয়ে নিদেদের লোকের নামে করে নেয় ডাক্তারের বাহিনী। একদিকে শেখ শাহজাহানের মেজো ভাই, অন্যদিকে আার এলাকার দাপুটে যুব তৃণমূল নেতা, তাই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলেও, প্রতিবাদ করার সাহস পেতেন না কেউই। ফলে গ্রামবাসীদের আতঙ্কে রেখেই দিনের পর দিন বাড়তে থাকে সিরাজুদ্দিনের 'দাদাগিরি'। আর গ্রামবাসীদের সেই দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়েই দিনের পর দিন এলাকায় তাঁর তাণ্ডব বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ।কী ভাবে জমি দখল?স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, সিরাজুদ্দিনের ৮০ থেকে ১০০ জনের বাইক বাহিনীই এলাকায় শেষ কথা বলত। প্রত্যেকে বাইকে চেপে টহল দিত গোটা এলাকায়। ভিভিআইপিদের কায়দায় সিরাজুদ্দিন থাকতেন কনভয়ের মাঝখানে। তাঁকে ঘিরে থাকত বেআইনি অস্ত্রধারীদের বাহিনী। এলাকা সূত্রে খবর, জমিজমার মালিকানা সংক্রান্ত বিষয়ে যখন বায়োমেট্রিক চালু হয়নি, তখন জমি দখলের কৌশল ছিল একরকম। আর পরে নেওয়া হয় অন্য ধরনের কৌশল। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, প্রথমে সিরাজের বাহিনীর লোকজন ভয় দেখিয়ে জমির কাগজপত্র লুট করত। পরে সেই সব কাগজ দেখে একাধিক জাল নথি তৈরি হত। এই প্রক্রিয়াটি চালানোর জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা ছিল সিরাজের বাড়িতেই। এরপর যাওয়া হত বিএলআরও অফিসে। সেখানেই প্রভাব খাটিয়ে চাষের জমিকে ভেড়িতে পরিণত করার নথি তৈরি হত বলে অভিযোগ। এসবের মধ্য়েই রাতারাতি জেসিবি নামিয়ে চাষের জমিকে পরিণত করা হত ভেড়িতে। আবার সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ মাটি উঠত, তা বিক্রি করে আসত মোটা টাকা। এরপর বিদ্যুতের লাইন থেকে হুকিং করে পাম্প চালিয়ে ভেড়িতে ভরা হত নোনা জল।আবার বছর কয়েক আগে যখন জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে বায়োমেট্রিক চালু হয়, তখন জমির কাগজপত্র হাতিয়ে সিরাজুদ্দিনের কোনও লোক রেজিস্ট্রি অফিসে চলে যেত বলে অভিযোগ। রীতিমতো আদালতে হলফনামা বা এফিডেভিট করে জমির মালিক সেজে যেত সিরাজের দলেরই কেউ। আর তারপর তাঁর নামেই হয়ে যেত জমির মালিকানা সংক্রান্ত কাগজপত্র। এই ভাবে জমি দখল করে ভেড়ি তো বটেই, সিরাজুদ্দিনের লোকজন গোটা একটা মার্কেট তৈরি করেছিল বলে অভিযোগ।